অসুস্থতার কারণে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হননি পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেম। একই সঙ্গে তার দুই ছেলে পারটেক্স সুগার মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আজিজ ও পরিচালক রুবেল আজিজ তারাও সিঙ্গাপুরে অবস্থান করার দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হতে পারেননি।
মঙ্গলবার দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে দুদক কার্যালয়ে কমিশনের অনুসন্ধান টিমের কাছে পারটেক্স গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার আনিছুর রহমান একটি আবেদন করেন। পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে সময় চেয়ে আবেদনটি করা হয়েছে।
দুদকের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বাধীন একটি টিম এ অভিযোগ অনুসন্ধান করছেন।
এ সময় ম্যানেজার আনিছুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, চেয়ারম্যান এম এ হাশেম ও তার দুই ছেলে সিঙ্গাপুরে রয়েছেন। এম এ হাশেম সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হতে পারেননি।
তবে চেয়ারম্যানের দুই ছেলে কি কারণে দেশের বাইরে তা তিনি বলতে পারেননি।
গ্রুপের ফিন্যান্স অ্যান্ড মার্কেটিং অফিসার মো. ফখরুল ইসলামও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দুদক সূত্র জানায়, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান তার পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদের তারিখ নির্ধারণের আবেদন করেছেন। পরবর্তী সময়ে তাকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হবে।
জানা যায়, চিনি আমদানির নামে এলসির বিপরীতে পারটেক্স গ্রুপের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ শাখা থেকে ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। বিদেশ থেকে অপরিশোধিত চিনি আমদানির নামে ২০১১ সালে সাত কোটি ৪২ লাখ টাকার এফডিআরের বিপরীতে (১৮০ দিন বিলম্বে পরিশোধের ভিত্তিতে) বঙ্গবন্ধু এভিনিউ শাখায় ১৫০ কোটি টাকার দুটি এলসি খোলে পারটেক্স সুগার মিলস লিমিটেড। এলসির বিপরীতে ৩০ হাজার টন অপরিশোধিত চিনি আমদানি করলেও তা বিক্রি করে কোনো টাকা ব্যাংকে জমা করা হয়নি। এতে সৃষ্ট পেমেন্ট এগেইনস্ট ডকুমেন্ট (পিএডি) শ্রেণীভুক্ত করে এফডিআর সমন্বয় করার পরও পারটেক্স সুগার মিলসের কাছে সোনালী ব্যাংকের পাওনা দাঁড়ায় ১৩৬ কোটি টাকা।
সূত্র আরও জানায়, মাত্র সাত কোটি ৪২ লাখ এফডিআরের বিপরীতে সোনালী ব্যাংকের একটি সিন্ডিকেট মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে পারটেক্স গ্রুপকে ১৫০ কোটি টাকার এলসি খোলার সুযোগ করে দেয়। আগেই পারটেক্স গ্রুপের ২২ কোটি টাকা অনিয়মিত দায় ছিল। ঋণ অনাদায়ী অবস্থায় নতুন কোনো এলসি খোলা নিয়মবহির্ভূত।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেম ও তার দুই ছেলে পারটেক্স সুগার মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আজিজ ও পরিচালক রুবেল আজিজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে তলব করা হয়।