আজ সেই ভয়াল ১৭ আগস্ট। ২০০৫ সালের এদিন আফগান ট্রেনিংপ্রাপ্ত জেএমবি’র জঙ্গিরা দেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায়। তবে দেশজুড়ে ওই সিরিজ বোমা হামলার নয় বছরেও শেষ হয়নি ৫৯টি মামলার বিচার কাজ।
জঙ্গি এ সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি হামলার মূল হোতাদের প্রায় সবার বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হলেও বেশ ক’টি সংগঠন এখনো মাঝে মাঝেই জানান দেয় তাদের অস্তিত্ব। বিশ্লেষকদের মতে সুযোগ পেলে আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে জঙ্গিরা। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, বিচ্ছিন্ন কিছু তৎপরতা থাকলেও তেমন কোনো হুমকি সৃষ্টি করতে সক্ষম নয় জঙ্গিরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালে দিনাজপুরে একটি পেট্রোল পাম্পে বোমা হামলার মধ্য দিয়ে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেয় জামায়াতুল মুজাহিদীন – জেএমবি। তবে মুন্সীগঞ্জ ছাড়া দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে পাঁচ শতাধিক স্থানে, বিশেষ করে আদালত, বিমানবন্দর, রেলওয়ে স্টেশন লক্ষ্য করে একযোগে বোমা হামলা চালিয়ে আলোচনায় আসে এই সংগঠনটি। ৫’শর বেশি স্থানে একযোগে চালানো এই বোমা হামলায় মারা যান দুজন। আহত হন অসংখ্য মানুষ।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে মামলা হয় ১৬১টি। এর মধ্যে রায় হওয়া ১০২টি মামলায় ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১১৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৯৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা এবং খালাস দেয়া হয়েছে ১১৮ জনকে। এছাড়া মামলার আসামির মধ্যে জামিনে আছে ৩৫ জন এবং ৫৩ জন পলাতক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু বলেন, “যে মামলাগুলো আছে দেখা গেছে সেগুলোর সাক্ষীদের সময়মতো পাওয়া যায়নি। এসব কারণে অনেক ক্ষেত্র মামলাগুলো নিষ্পত্তি করতে দেরি হয়েছে।”
২০১০ সালে জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও এখনো রয়ে গেছে তাদের তৎপরতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চলতি বছরের ২৩শে ফেব্রুয়ারি ময়মননিসংহের ত্রিশালে পুলিশ ভ্যান থেকে তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়া ছাড়া গত দশ বছরে বড় ধরণের আর কোনো সহিংসতা ঘটেনি বলেও দাবি তাদের।
র্যাব ডিজি মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, “ত্রিশালের যে ঘটনা, আমি বলবো ২০০৮ সালের পর এটিই তাদের বড় অপারেশন।”
গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, “অর্থছাড়া কোনো কার্যক্রম চালানো সম্ভব হয় না। আর তারা যখনই একটু প্রকাশ্যে আশার চেষ্টা করেছে তখনই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে পড়েছে।”