মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়নস লীগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে ফ্রেঞ্চ লীগ চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর (পিএসজি) মুখোমুখি হবে চেলসি। প্রথম লেগে এ্যাওয়ে ম্যাচে ৩-১ গোলে পরাজিত হবার পরে চেলসি এখন ২০১২ সালের শিরোপার স্মৃতি মনে করে অনুপ্রেরণা নিতেই পারে।
ইনজুরি টাইমে জেভিয়ার প্যাস্ত্রোর গোলে প্রথম লেগে গত সপ্তাহে পার্ক ডি প্রিন্সেসে পিএসজি দুই গোলের সুবিধা নিয়ে দ্বিতীয় লেগের আগে নিজেদের নিয়ন্ত্রন শক্ত করেছে। ১৯৭০ সালের পরে মাত্র ২৪ শতাংশ দল ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নশীপে এ্যাওয়ে ম্যাচে ৩-১ গোলে পরাজয়ের পরে পরের রাউন্ডে যেতে পেরেছে। কিন্তু মাত্র দুই বছর আগে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার অবস্থা থেকে শেষ পর্যন্ত যেভাবে শিরোপা জিতেছিল চেলসি তার থেকে নিজেদের আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলে ফিরে পেতে পারে ব্লুজরা। ২০১২ সালে ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলির বিপক্ষে শেষ ১৬’র প্রথম লেগের ম্যাচে ৩-১ গোলে পরাজয়ের পরে নিয়মিত কোচ আন্দ্রে ভিয়াস-বোয়াসকে অপসারণ করা হয়। কিন্তু তার উত্তরসূরী হিসেবে রবার্তো ডি মাত্তেও দলে এসেই ফিরতি লেগে অতিরিক্ত সময়ে ৪-১ গোলে জয়ী হয়ে শেষ পর্যন্ত ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে পরাজিত করে শিরোপা উপহার দিয়েছিল চেলসিকে।
বর্তমান চেলসি কোচ হোসে মরিনহো এখন পর্যন্ত ইউরোপীয়ান কোয়ার্টার ফাইনালে কখনো হারেননি। কিন্তু কালকের ম্যাচে চেলসি হেরে গেলে তা মরিনহোর জন্য খুব একটা সুখকর হবেনা। কারন এতে করে ২০১২ সালের ডি মাত্তেও এবং গত বছর অন্তবর্তকালীন কোচ রাফায়েল বেনিতেজের অধীনে ইউরোপা লীগের সাফল্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন। চেলসির প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা চ্যালেঞ্জ এখনো নড়বড়ে অবস্থায রয়েছে। আর তাই চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা চলতি মৌসুমে তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
শনিবার ইংলিশ লীগে স্টোক সিটিকে ৩-০ গোলে পরাজিত করায আবারো লীগ টেবিলের শীর্ষসারিতে নিয়ে এসেছে চেলসিকে। কিন্তু মরিনহো অকপটেই স্বীকার করেছে তাদের এই অবস্থানের শক্ত কোন ভিত্তি নেই। কারন এই মুহূর্তে তাদের নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটির হাতে এখনো দুই ম্যাচ বেশী বাকি রয়েছে। তবে পশ্চিম লন্ডনে ঘরের মাঠে কালকের ম্যাচটিকে ঘিড়ে কোন ধরনের দু:শ্চিন্তা তিনি দেখাননি। তিনি বলেন, ‘আমি এই ম্যাচটিকে শুধুমাত্র উপভোগ করতে চাই। কঠিন অবস্থাকে উপভোগ করার মধ্যে আমি আনন্দ খুঁজে পাই। এখন আমাদের সামনে যে পরিসংখ্যান তাতে আমাদেরকে জিততে হবে ২-০, ৩-১, ৪-১, ৫-২ ব্যবধানে। আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কোন ভয় পাচ্ছিনা। দেখা যাক কি হয়। আমরা যদি দূর্দান্ত এক ম্যাচের মধ্য দিয়ে বিদায নেই তবে সেটা কোন পরাজয় না।’
স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে টানা আটটি ম্যাচে চেলসি জয় পেয়েছে। অন্যদিকে পিএসজি টানা ১১ ম্যাচে জয় দিয়ে নতুন ক্লাব রেকর্ড গড়ে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছে। গত ১১০টি ম্যাচের মধ্যে তারা মাত্র দুটিতে পরাজিত হয়েছে। সাসপেনশনের কারনে চেলসিতে খেলতে পারছেন না রামিরেস। তাছাড়া হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারনে প্রথম লেগের ম্যাচে মাঠের বাইরে থাকা ক্যামেরুন স্ট্রাইকার স্যামুয়েল ইতোর খেলা নিয়েও সংশয় রয়েছে। স্টোকের বিপক্ষে শনিবারও ইতো মাঠে নামেননি।
পিএসজিতেও ইনজুরি সমস্যা রয়েছে। থাইয়ের ইনজুরির কারনে প্রথম লেগে খেলেননি দলের তারকা স্ট্রাইকার জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ। তবে তার স্থানে এডিনসন কাভানির খেলার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সেন্টার ফরোয়ার্ডে উরুগুয়ের এই আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় ইব্রাহিমোভিচের স্থানে খেলবেন। আর সে কারনেই রাইট ব্যাকে লুকাস মোরার খেলার সম্ভবনা রযেছে।