বাংলাদেশের রুবেলময় জয়

বাংলাদেশের রুবেলময় জয়

সাহারা কাপ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪৩ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। যে জয় অবধারিতভাবে আবার আলোচনায় নিয়ে এসেছে তিন বছর আগের ‘বাংলাওয়াশের’ স্মৃতি। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডকে চার ম্যাচের সব ক’টিকেতেই হারিয়ে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে গর্বের জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ।

পেসার রুবেল হোসেনের দুরন্ত বোলিংয়ে এ জয় পায় বাংলাদেশ। পাঁচ ওভার পাঁচ বল বোলিং করে ২৬ রান দিয়ে ছয় উইকেট নেন রুবেল। সেই সাথে বাংলাদেশের পক্ষে পূরণ করেন তৃতীয় ওয়ানডে হ্যাটট্রিক। এটিই রুবেলের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।

২০১০ এর সিরিজের শেষ উইকেট নিয়েছিলেন রুবেল। শেষ করার সেই জায়গা থেকেই যেনো নতুন করে শুরু করলেন বাগেরহাটের এই তরুণ।

এ বছর চলতি ঘরোয়া ক্রিকেটেও হ্যাটট্রিক করেন রুবেল হোসেন। ঘরোয়া ক্রিকেটের দুরন্ত ফর্ম রুবেল টেনে আনলেন ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক আঙিনায়ও। দীর্ঘদিন কাঁধের ইনজুরি থেকে ফিরে এমন বোলিং সম্পর্কে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে রুবেল বলেন, “ইনজুরি থেকে ফিরে আসার লড়াইয়ে অনেক পরিশ্রম করেছি। নিজের সেরা ছন্দে আসার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। আমি মনে করি সে চেষ্টার ফলেই এমন ভালো বোলিং করতে সক্ষম হয়েছি।”

রুবেলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও। তিনি বলেন, “গত দুই মাস ধরে রুবেলকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। সে আসলেই অনেক পরিণত হয়েছে। আগের মতো তাকে আর বোলিংয়ের বিশেষ প্ল্যান করে দিতে হচ্ছে না। সে নিজেই এখন পরিস্থিতি বুঝে বোলিং করছে। অধিনায়ক হিসেবে এটি আমার জন্য অনেক তৃপ্তির।”

রুবেল হোসেনের আগে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিক করেন শাহাদাত ও আব্দুর রাজ্জাক। এ দুজনই হ্যাটট্রিক করেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

রুবেলের হ্যাটট্রিকটি ওয়ানডে ইতিহাসের ৩৪তম। আর বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয়। সবচেয়ে বেশি সাতবার হ্যাটট্রিকের রেকর্ড পাকিস্তানি বোলারদের।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে করে ২৬৫ রান। দলের হয়ের সর্বোচ্চ ৯০ রান আসে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে। ৮৪ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেন সাকিবের বদলে দলে সুযোগ পাওয়া নাঈম ইসলাম। এটিই নাঈমের ক্যারিয়ার সেরা ওয়ানডে ইনিংস।

এ ছাড়া ২৯ রানের কার্যকরী একটি ইনিংস খেলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

এরপর ২৬৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামে কিউইরা। তাদের ইনিংসের ২০ ওভার খেলা হওয়ার পর বাধা পড়ে বৃষ্টির। প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় বন্ধ থাকে খেলা। ফলে ডাকওয়ার্থ লুইস ম্যাথডে ৩৮ ওভারে ২০৬ রানের টার্গেট দাঁড়ায় কিউইদের।

বৃষ্টি ভেজা উইকেটে লক্ষ্য পূরণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয় নিউজিল্যান্ড। মাত্র ১৬২ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। রুবেলের পেস-তাণ্ডবেই দুমড়ে- মুচড়ে পড়ে কিউই ব্যাটিং লাইন। একটি করে উইকেট নেন সোহাগ গাজী, মাহমুদুল্লাহ ও আব্দুর রাজ্জাক।

হ্যাটট্রিকসহ ছয়টি উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন রুবেল।

সাহারা কাপ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটি জয়ের মাধ্যমে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। সিরিজের পরের ম্যাচটি মাঠে গড়াবে ৩১ অক্টোবর, মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।

খেলাধূলা শীর্ষ খবর