দাতারা ৪ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান জানতে চাইলেন

দাতারা ৪ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান জানতে চাইলেন

ec-dataআগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের প্রসু্ততি ও অবস্থান জানাসহ অন্তত চারটি বিষয়ে তাদের অবস্থান জানতে চান তারা। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আরপিও’র ৯১(ই) ধারা বাতিল ও বিএনএফ-এর নিবন্ধন, রাজনৈতিক সংলাপ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন না করার বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। আর এসব বিষয়ে কমিশন তার যুক্তি তুলে ধরে দাতাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছে বলে জানায় বৈঠক সূত্র। বৈঠকে ৯১(ই) ধারা কেন বাতিল করা হচ্ছে- কূটনীতিকরা জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেহেতু আরপিও’র ৯১(এ) ধারাও প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে। সেহেতু ৯১(ই) ধারা বাতিল হলেও কমিশনের প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা সংরক্ষিত থাকবে। বিএনএফ-এর নিবন্ধনের বিষয়ে ইসি’র অবস্থান জানতে চাইলে সিইসি বলেন, মাঠপর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর দলটি নিবন্ধনের যোগ্য হলেই কমিশন দলটিকে নিবন্ধন দেবে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার বিষয়ে কমিশনের কাছে জানতে চেয়ে বলেন, নির্বাচনের যখন আর বেশি দেরি নেই তখন কেন এত দেরিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে ইসি। জবাবে সিইসি বলেন, আমরা এখনও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার কোন সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে সংসদ নির্বাচনের আগে প্রয়োজন হলে কমিশন তাদের সঙ্গে সংলাপে বসবে। আমরা সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছিলাম। এবার জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন না করার বিষয়ে জানতে চেয়ে কূটনীতিকরা বলেন, বাংলাদেশের বিগত নির্বাচনগুলোতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নেয়া হয়েছে। এবার সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাদের সহযোগিতা নেয়া হবে কিনা? কমিশন এ নিয়ে কি ভাবছে- তা জানতে চাওয়া হয়। জবাবে সিইসি বলেন, ২০০৯ সাল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনীর বিষয়টি আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত ছিল- যা প্রেসিডেন্টের অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়। সেনাবাহিনী সংক্রান্ত এ অধ্যাদেশটি বাদ রেখে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের আইন পাস করা হয়। তবে বিগত দিনগুলোতে যেভাবে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল, আসন্ন নির্বাচনেও তা অনুসরণ করা হবে। গতকাল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বিদেশী কূটনীতিকদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক শেষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক নিল ওয়াকার বলেছেন, সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আমরা দেখতে চাই। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কারিগরিসহ সব ধরনের সহায়তা আমরা নির্বাচন কমিশনকে দেবো। বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও সংস্থার প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চান। আমরা বলেছি, ‘আমরা সবার সহযোগিতায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই। যে নির্বাচনে সকল দল অংশ নেবে। ভোটারদের রায় প্রতিফলিত হবে। সেই জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি কমিশনের আছে। সিইসি জানান, দাতারা কমিশনকে নির্বাচনের ব্যাপারে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ও দেবে। তারা যে টাকা দিতে চেয়েছে, কমিশন তার চেয়ে কিছু বেশি চেয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, দাতা দেশগুলো প্রতিবারই নির্বাচনে ইসিকে সহযোগিতা করে। এবারও তাদের কাছ থেকে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, অমোচনীয় কালি সরবরাহ, কিছু ভিডিও ক্যামেরা সরবরাহে সহায়তা চেয়েছে ইসি। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রতি কেন্দ্রে ভিডিও ক্যামেরার জন্য তাদের কাছে বাড়তি সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখবে বলে ইসিকে জানিয়েছে। বৈঠকে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রে,
অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, জার্মানি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, কোরিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ১২টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও দু’টি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যান্য আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ শীর্ষ খবর