1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
পে স্কেল কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তির তাগিদ তফসিল ঘোষণার পর ‘অনুমোদনহীন আন্দোলন’ থেকে বিরত থাকার আহ্বান নির্বাচনে উপদেষ্টাদের অংশগ্রহণ নিয়ে ইসির সতর্কবার্তা গুমের মামলায় ১২ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদেশ ১৪ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতির কাছে ৩০০ বিচারক চাইলেন ‍সিইসি স্কুল লেভেলে কয়েকটি ভাষা বাধ্যতামূলক করা হবে : তারেক রহমান অন্যায় করে শাস্তি না পেলে সুশাসন কিভাবে নিশ্চিত হবে : পরিকল্পনা সচিব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যের আহ্বান মির্জা ফখরুলের কিউবার সাবেক অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তিসহ একাধিক অভিযোগে আজীবন কারাদণ্ড জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামী দলগুলোর সম্ভাব্য ঐক্য ও নির্বাচনী সমন্বয় নিয়ে আলোচনা

কিউবার সাবেক অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তিসহ একাধিক অভিযোগে আজীবন কারাদণ্ড

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৫ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গুপ্তচরবৃত্তি ও অর্থনৈতিক অপরাধের একাধিক অভিযোগে কিউবার সাবেক অর্থমন্ত্রী আলেহান্দ্রো হিলকে আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার প্রকাশিত আদালতের এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয় যে হিলকে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য শত্রুপক্ষের কাছে সরবরাহ, গুরুতর প্রশাসনিক অনিয়ম এবং আর্থিক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, হিল ‘গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ’ এবং ‘অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বা চুক্তি বাস্তবায়নে ক্ষতিকর কার্যকলাপের’ দায়ে আজীবন কারাদণ্ডের আদেশ পেয়েছেন। তবে আদালত তিনি কোন দেশের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন বা কী ধরনের তথ্য সরবরাহ করেছেন, সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।

৬১ বছর বয়সী হিল ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কিউবার অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে তিনি দায়িত্বের অংশ হিসেবে যে গোপন নথি ও তথ্যের তত্ত্বাবধানে ছিলেন, সেগুলোর সুরক্ষা বিধি লঙ্ঘন করেছেন, নথি অপসারণ ও নষ্ট করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত সেগুলোর কিছু অংশ শত্রুপক্ষের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন। এসব অভিযোগের পাশাপাশি তিনি সরকারি নথি অপহরণ, সরকারি সিল ভঙ্গ, এবং রাষ্ট্রীয় গোপন নথি রক্ষার বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগেও দোষী সাব্যস্ত হন।

গুপ্তচরবৃত্তি-সংক্রান্ত আজীবন কারাদণ্ড ছাড়াও হিলের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, প্রভাব খাটানো এবং কর ফাঁকির পৃথক একটি মামলায় আরও ২০ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে। আদালতের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব অভিযোগে তার ধারাবাহিক দুর্নীতি, প্রভাব বিস্তার এবং কর জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।

গত নভেম্বরের শুরুতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় এবং ১১ নভেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। অভিযোগ দায়েরের পরপরই তাকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। হিল দীর্ঘদিন ধরে কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াস-কানেলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ করে তাকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচনা সৃষ্টি করে। তার পদচ্যুতি ও পরবর্তী তদন্ত নিয়ে সে সময় সরকারি পর্যায়ে কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

কিউবার আইনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপিলের সুযোগ থাকে। আদালত জানিয়েছে, হিল রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দাখিলের জন্য ১০ দিনের সময় পাবেন এবং আইন অনুযায়ী দ্বিতীয় পর্যায়ের বিচার বাধ্যতামূলকভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

হিলের মামলাটি কিউবার চলমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দেশটি। মুদ্রাস্ফীতি, দারিদ্র্য বৃদ্ধি, বৈষম্য ও বাজার ব্যবস্থার অস্থিরতা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাষ্ট্রীয় আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপর আস্থা পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টার সময় এমন উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতি ও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ সরকারের জন্য গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। বিচার প্রক্রিয়া ও শাস্তি দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিবেশে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

পেশাগত জীবনের শুরুতে হিল হাভানা বন্দরে পরিবহন খাতের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে দেশ-বিদেশে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে আর্থিক ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হয়ে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে উন্নীত হন এবং শেষ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর গুরুত্ব বিবেচনায় বিচার প্রক্রিয়াটি কিউবার প্রশাসনিক কাঠামোতে দুর্নীতি প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।

কিউবায় হঠাৎ পদচ্যুতি ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অতীতে নতুন নয়। সংকট বা অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার সময় এমন ঘটনা পূর্বেও ঘটেছে। ১৯৮৯ সালে মাদক পাচারের অভিযোগে সাবেক গেরিলা কমান্ডার জেনারেল আরনালদো ওচোয়া ও তার সহযোগীদের বিচারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা দেশটিতে বড় রাজনৈতিক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। বর্তমান মামলাটিও অতীতের সেই নজিরগুলোর স্মৃতি উত্থাপন করেছে এবং কিউবার বর্তমান প্রশাসনের অবস্থান পুনরায় আলোচনায় এনেছে।

হিলের বিরুদ্ধে রায় কিউবার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা উল্লেখ করছেন। আপিল প্রক্রিয়া শুরু হলে আদালতের পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেশটির প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, নীতি-নির্ধারণী কাঠামো এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ