1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন

গাজার কিছু এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৪১ Time View

গাজার একাংশ থেকে তারা আংশিক সেনা প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সমঝোতা কার্যকর হওয়ায় তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও ওই উপত্যকার অর্ধেকই তাদের দখলে তবুও ইসরায়েলি বাহিনী বলছে, তারা পিছিয়ে এসে সেখানে এমন জায়গায় অবস্থান নিয়েছে, যা নিয়ে উভয়পক্ষ সম্মত।

একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজার দিকে যাচ্ছে।
গত কয়েক মাসে সেখানে ইসরায়েল ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি ফেরানোর পরিকল্পনার প্রথম ধাপ ইসরায়েল সরকারের অনুমোদনের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। পরবর্তী ধাপগুলো নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। চুক্তি অনুযায়ী, হামাসকে সোমবার স্থানীয় সময় ১২টার মধ্যে সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে।
এর মধ্যে ২০জন জীবিত আছে বলে মনে করা হয়। ২৮ জনের দেহাবশেষ রয়েছে হামাসের কাছে।

ইসরায়েলকে এখন তাদের কারাগারে সাজা ভোগরত প্রায় আড়াইশো ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। এর মধ্যে ১০০ জন পশ্চিম তীরে, পাঁচজন পূর্ব জেরুজালেমে মুক্তি পাবেন।
একই সঙ্গে গাজা থেকে আটক করা আরও প্রায় ১ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনিকেও মুক্তি দিতে হবে বলে ইসরায়েল আর্মির রেডিও জানিয়েছে।

সমঝোতা অনুযায়ী, গাজায় ত্রাণবাহী লরিগুলোর প্রবেশে কোনো বাধা দেওয়া যাবে না। শুক্রবার থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬০০টি লরি ত্রাণ নিয়ে গাজায় প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে যুদ্ধবিরতির পর এই সংখ্যা আরো বাড়বে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা গত অগাস্টে জানিয়েছিলেন, গাজার কয়েকটি এলাকায় ইতিমধ্যেই দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে।
সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ বর্তমানে ক্ষুধা ও মৃত্যুর মুখে পড়েছে। যদিও ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত দুই শতাধিকের বেশি মার্কিন সেনাকে ইসরায়েলে স্থানান্তর করা হচ্ছে। তারা আসন্ন গাজা যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, গাজা শহরের উত্তর-পশ্চিমাংশ থেকে ইসরায়েলি সেনারা পূর্ব দিকে সরে গেছে। একইভাবে দক্ষিণের খান ইউনিস থেকেও কিছু সেনা প্রত্যাহারের খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে সেনারা নতুন নির্ধারিত অবস্থানে স্থানান্তর শুরু করেছে। তবে আইডিএফ বলেছে, যেকোনো তাৎক্ষণিক হুমকি দেখা দিলে তারা প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, আইডিএফ সেনাদের প্রথম ধাপের প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়েছে। সেনা প্রত্যাহারের রূপরেখা গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত এক মানচিত্রেও দেখানো হয়েছিল। তিনি আরো বলেছেন, ‘৭২ ঘণ্টার মধ্যে জিম্মি মুক্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে।’ টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার পূরণ করবেন। নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমাদের বাহিনী প্রতিটি দিক থেকেই হামাসকে ঘিরে রেখেছে।’

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং গাজাকে অসামরিকীকরণ করার কথা বলা হয়েছে। তবে হামাস এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। শুক্রবারও গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছে।

যেসব এলাকায় ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে, সেখানে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনীকে রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, তাদের পোশাকে হামাসের ‘ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি’ লোগো স্পষ্ট। ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভবিষ্যতে গাজায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না। সেখানে ট্রাম্পের নেতৃত্বে গঠিত একটি বোর্ডের তত্ত্বাবধানে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠন করা হবে। বোর্ডটিতে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ কয়েকজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব যুক্ত থাকবেন। পরবর্তীতে ওই বোর্ড থেকে গাজার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ধীরে ধীরে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করা হবে।

ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের পর বহু গাজাবাসী দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নিজ এলাকায় ফিরছেন। অনেকেই ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হেঁটে গেছেন। এদের মধ্যে অনেকেই দুর্বল ও অপুষ্টিতে ভোগা মানুষ। তারা ফিরছেন এমন এক গাজায়, যার অধিকাংশ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ধসে পড়া ভবনগুলোর নিচ থেকে এখনও মৃতদেহের সন্ধান পাচ্ছেন।

হামাস পরিচালিত গাজা সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির তথ্যমতে, শুক্রবার প্রায় দুই লাখ মানুষ গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরে গেছে। অন্যদিকে ইসরায়েলে জিম্মিদের পরিবারও যুদ্ধবিরতির খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছে। নিহত জিম্মি তাল হাইমির আত্মীয় উরি গোরেন একে ‘বড় স্বস্তির খবর’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে হামাস জানিয়েছে, নিহত সব জিম্মিদের দেহাবশেষের অবস্থান তাদের জানা নেই।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এরপর ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ১৮ হাজার শিশু বলে জানিয়েছে, হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘ কমিশন ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ইসরায়েলকে যুদ্ধ চলাকালীন গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন, যদিও ইসরায়েল সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ