২০২২ সালের নভেম্বরে ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (পিএসপি) মধ্যে অর্থ লেনদেন সহজ করতে ‘বিনিময়’ চালু করা হয়।
২০২২ সালের নভেম্বরে ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (পিএসপি) মধ্যে অর্থ লেনদেন সহজ করতে ‘বিনিময়’ চালু করা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘চুক্তির শর্ত বিশ্লেষণের সুযোগ না দিয়েই আমাদের সই করতে বাধ্য করা হয়েছিল।’
তার ভাষ্য, ‘আমাদের সম্পৃক্ততা ছাড়াই পুরো ডকুমেন্টেশন তৈরি করা হয়েছিল। কোনো ধরনের সহায়তা ছাড়া এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় প্ল্যাটফর্মটি চালানো সম্ভব ছিল না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবি, প্ল্যাটফর্মটি পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে নির্ধারিত ফি দীর্ঘদিন ধরে পরিশোধ করা হয়নি। ফলে আইনজীবীদের পরামর্শ অনুযায়ী তারা সেবাটি স্থগিত করেছে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের এক চুক্তির আওতায় ‘বিনিময়’ চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুঝতে পারে, এতে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত অনেক অসংগতি রয়েছে।
এর আগে সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউসিবি, ইস্টার্ন ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকসহ আটটি ব্যাংক প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করছিল। এমএফএস সেবাদাতাদের মধ্যে ছিল বিকাশ, রকেট ও এমক্যাশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের ইউপিআই মডেলের আদলে তৈরি হলেও ‘বিনিময়’ জনপ্রিয়তা অর্জনে ব্যর্থ হয়। ব্যবহারবান্ধব ফিচারের অভাব, পর্যাপ্ত প্রচারণা না থাকা এবং ব্যাংকগুলোর অনাগ্রহই এর মূল কারণ।
তবে এ খাতে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ ব্যাংক। গেটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওপেন সোর্স প্রতিষ্ঠান মোজালুপের সঙ্গে অংশীদারিত্বে নতুন একটি আন্তঃব্যবহারযোগ্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে। চলতি বছরেই এটি চালুর আশা করছে তারা।
আরিফ হোসেন খান জানান, ‘নতুন প্ল্যাটফর্মের কাজ অনেকদূর এগিয়েছে। কিছু তথ্য-উপাত্ত দিতে হচ্ছে, আমরা দ্রুত সব সরবরাহ করছি। আশা করছি শিগগিরই চূড়ান্ত চুক্তি হবে।’
বিনিময় বন্ধ হলেও ব্যাংকিং খাতের ডিজিটাল রূপান্তর থেমে থাকছে না। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা—এখন একটি স্বচ্ছ, কার্যকর ও নিরাপদ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে, যা দেশের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থায় নতুন গতি আনবে।