1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে: ড. সালেহউদ্দিন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদান আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত : নৌপরিবহন উপদেষ্টা হাসিনা-কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ড বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল ২০২৪-কে ১৯৭১-এর মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করি : মাহফুজ আলম ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যকে জাতীয় শক্তিতে পরিণত করতে হবে : সালাহউদ্দিন আহমদ হাদিকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সিঙ্গাপুরের পথে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে ডাকসুর মার্চ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না : সিইসি বিজয় দিবসে ৪০ মিনিট বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল চলাচল হাদিকে সিঙ্গাপুর নিতে ঢাকায় এসেছে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৮০ হাজার বছরের প্রাচীন সরঞ্জাম উদ্ধার

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫
  • ৪৩ Time View

সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ আমিরাতের জেবেল ফায়া এলাকায় প্রত্নতত্ত্ববিদরা এক যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন। এখানে পাওয়া গেছে প্রায় ৮০ হাজার বছর আগের পাথরের তৈরি সরঞ্জাম, যা আরব উপদ্বীপে প্রাচীন মানব ইতিহাস নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে পাল্টে দিয়েছে।

এই আবিষ্কার প্রমাণ করে, আধুনিক মানুষ (হোমো স্যাপিয়েন্স) শুধুই এই অঞ্চলের পথচারী ছিল না, বরং তারা এখানে দীর্ঘ সময় ধরে বসবাস করেছিল। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে টিকে ছিল এবং উন্নত প্রযুক্তিও ব্যবহার করেছিল।

২ লাখ ১০ হাজার বছরের মানব উপস্থিতির প্রমাণ

পুরো খনন কার্যক্রমের ফলাফল অনুযায়ী, জেবেল ফায়া এলাকায় প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার বছর ধরে মানুষের উপস্থিতির অবিচ্ছিন্ন প্রমাণ পাওয়া গেছে—যা আরব অঞ্চলের প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসে একটি বিরল দৃষ্টান্ত।

এই গবেষণার ফলাফল ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নাল প্রত্নতাত্ত্বিক এবং নৃতাত্ত্বিক বিজ্ঞান-এ প্রকাশিত হয় এবং বুধবার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ডাব্লিউএএম-এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চলা খননকাজে পাওয়া নিদর্শনগুলো পরে বিশ্লেষণ ও তারিখ নির্ধারণ করে গবেষণা প্রকাশিত হয়।

প্রাচীন নিদর্শন থেকে ইউনেস্কো মনোনয়ন পর্যন্ত

এই ঐতিহাসিক আবিষ্কারের গুরুত্ব বিবেচনায় শারজাহর শাসক ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সুপ্রিম কাউন্সিলের সদস্য শেখ ড. সুলতান বিন মুহাম্মদ আল কাসিমি জেবেল ফায়া এলাকা সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি আল ফায়া অঞ্চলকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকার জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন এবং এর সীমানা ও এলাকা আনুষ্ঠানিকভাবে চিহ্নিত করেছেন।

ইউনেস্কোর ৪৭তম অধিবেশন (৭–১৬ জুলাই ২০২৫, প্যারিস) এ এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একমাত্র বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হলো আল আইন সংস্কৃতি অঞ্চল, যেটি ২০১১ সালে ইউনেস্কোর তালিকায় যুক্ত হয়।

কী বলছে এই পাথরের সরঞ্জাম?

জেবেল ফায়ায় আবিষ্কৃত সরঞ্জামগুলো শুধু সাধারণ পাথরের হাতিয়ার নয়।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে অত্যন্ত জটিল নির্মাণ পদ্ধতির নিদর্শন— ‘বিডাইরেক্টশন্যাল রিডাকসন’- নামে পরিচিত একটি প্রযুক্তি, যেখানে পাথরের উভয় প্রান্তে সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত করে ধারালো ব্লেড ও পাত তৈরি করা হতো।

এই সরঞ্জামগুলো প্রমাণ করে, প্রাচীন মানুষেরা প্রযুক্তিকে কেবল বেঁচে থাকার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করেনি, বরং তা ছিল তাদের সাংস্কৃতিক প্রকাশের একটি মাধ্যম।

এই হাতিয়ারগুলো পাওয়া গেছে সামুদ্রিক আইসোটোপ পর্যায় ৫এ (এমআইএস ৫এ) নামে পরিচিত একটি সময়ে, যখন ভারত মহাসাগর থেকে আগত বর্ষা আরব উপদ্বীপকে রুক্ষ মরুভূমি থেকে পরিণত করেছিল সবুজ তৃণভূমি, হ্রদ ও নদীতে। এই সময়ের জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে মানুষ এখানে সফলভাবে টিকে ছিল।

আন্তর্জাতিক গবেষণা ও সাংস্কৃতিক দূরদৃষ্টি

জেবেল ফায়ার খনন প্রকল্প পরিচালিত হয়েছে শারজাহ প্রত্নতত্ত্ব কর্তৃপক্ষ-এর নেতৃত্বে, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যৌথভাবে।
প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে জার্মান রিসার্চ ফাউন্ডেশন এবং হেইডেলবার্গ বিজ্ঞান একাডেমি।

লুমিনেসেন্স ডেটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকরা একটি প্রায় অবিচ্ছিন্ন মানব উপস্থিতির সময়রেখা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন—২ লাখ ১০ হাজার বছর থেকে ৮০ হাজার বছর পর্যন্ত।

শারজাহ প্রত্নতত্ত্ব কর্তৃপক্ষ-এর পরিচালক ঈসা ইউসুফ বলেন, ‘জেবেল ফায়ার আবিষ্কারগুলো দেখিয়ে দেয়, অভিযোজন, উদ্ভাবন ও স্থিতিস্থাপকতাই মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এসব হাতিয়ার শুধু প্রযুক্তির নিদর্শন নয়, এগুলো আমাদের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার গল্প বলে।’

এই ঐতিহাসিক আবিষ্কার শুধু প্রাচীন মানব ইতিহাসের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেনি, বরং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক মানচিত্রে আরো দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ