1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে: ড. সালেহউদ্দিন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদান আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত : নৌপরিবহন উপদেষ্টা হাসিনা-কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ড বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল ২০২৪-কে ১৯৭১-এর মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করি : মাহফুজ আলম ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যকে জাতীয় শক্তিতে পরিণত করতে হবে : সালাহউদ্দিন আহমদ হাদিকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সিঙ্গাপুরের পথে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে ডাকসুর মার্চ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না : সিইসি বিজয় দিবসে ৪০ মিনিট বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল চলাচল হাদিকে সিঙ্গাপুর নিতে ঢাকায় এসেছে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স

‘আলোচনার আগে আমেরিকাকে হামলার সম্ভাবনা বাতিল করতে হবে’

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫
  • ২৮ Time View

যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা পুনরায় শুরু করতে চায়, তবে তাকে ইরানে আর কোনো হামলার সম্ভাবনা পুরোপুরি বাদ দিতে হবে। তেহরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখত-রাভাঞ্চি বিবিসিকে এ কথা বলেছেন।

তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইরানকে জানিয়েছে তারা আবারও আলোচনায় ফিরতে চায়, তবে আলোচনার সময় আর হামলা চালানো হবে কি না — এই ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে’ তারা এখনো স্পষ্ট অবস্থান নেয়নি।

ইসরায়েল গত ১৩ জুন ভোরে ইরানের ওপর সামরিক অভিযান শুরু করলে ১৫ জুন ওমানে অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ দফার আলোচনা ব্যাহত হয়, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র মূলত পরোক্ষভাবে অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, যখন তারা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। এগুলো হলো, ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান।

তাখত-রাভাঞ্চি বলেন, ইরান শান্তিপূর্ণ গবেষণার জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার রাখে এবং গোপনে পারমাণবিক বোমা তৈরি করার অভিযোগ তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ‘যখন আমাদের গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দেওয়া হয়নি, তখন নিজেদের ওপর নির্ভর করাটাই বাস্তবতা।

তিনি আরো বলেন, “সমৃদ্ধকরণের পরিমাণ ও ক্ষমতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে, কিন্তু একতরফাভাবে বলে দেওয়া যে ইরান কিছুতেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না, আর তা না মানলে বোমা মারা হবে — এটা যেন ‘জঙ্গলের আইন’।”

ইসরায়েল দাবি করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে, এ জন্যই তারা পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা শুরু করে এবং বিজ্ঞানী ও সামরিক কমান্ডারদের হত্যার অভিযানে নামে। ইরান এর জবাবে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, যা ১২ দিনব্যাপী সংঘর্ষে রূপ নেয়। এই সংঘর্ষে যুক্তরাষ্ট্র তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে বোমা হামলা চালায়, কিন্তু হামলায় প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ স্পষ্ট নয়।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেন, ‘গুরুতর ক্ষতি হয়েছে, তবে পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি।’ অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেন, ‘ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। ইরানের সংসদ ইতিমধ্যেই আইএইএয়ের সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সংস্থাটিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযুক্ত করে।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পারে যে, ইরান উদ্বেগজনক মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, তবে তিনি আবারও বোমা হামলা চালানোর বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

তাখত-রাভাঞ্চি বলেন, আলোচনায় ফেরার কোনো নির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি এবং আলোচনার এজেন্ডা কী হবে তা-ও জানা নেই।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা এখনো উত্তর খুঁজছি এই প্রশ্নের, আলোচনার মধ্যে আমরা আবার কোনো আগ্রাসনের শিকার হব কি না?’

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে এই বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানাতে হবে এবং আলোচনার জন্য আস্থার পরিবেশ তৈরিতে তারা কী প্রস্তাব দেবে তা জানাতে হবে। ইরান নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বিনিয়োগের সুযোগ পেলে তার পরমাণু কর্মসূচি পুনর্বিবেচনা করবে কি না, এ প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কেন এমন কোনো প্রস্তাবে সম্মতি দেব?’

তিনি পুনরায় বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি, যার মধ্যে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অন্তর্ভুক্ত, তা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যের জন্য।

২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ১৫ বছরের জন্য ফরদো প্লান্টে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারত না এবং ৩.৬৭শতাংশ-এর বেশি সমৃদ্ধ করা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ট্রাম্প ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে সরে গিয়ে আবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তার জবাবে ইরান চুক্তির শর্তগুলো লঙ্ঘন করতে থাকে এবং ২০২১ সালে ফরদো প্ল্যান্টে পুনরায় সমৃদ্ধকরণ শুরু করে।

আইএইএ-এর তথ্যমতে, ইরান ইতিধ্যেই ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের এমন পরিমাণ সংগ্রহ করেছে, যা দিয়ে ৯টি পরমাণু বোমা তৈরি সম্ভব।

তাখত-রাভাঞ্চি ইউরোপীয় নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের আগ্রাসনকে সমর্থন করে ‘উপহাসজনক আচরণ’ করেছে। তিনি বলেন, যারা ইরানের পরমাণু কর্মসূচির সমালোচনা করছেন, তারা আমাদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছে, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়েও সেভাবে তাদের সমালোচনা করা উচিত।

তিনি বলেন, ‘যদি তারা আমেরিকার সমালোচনা করার সাহস না রাখেন, তাহলে চুপ থাকাই উচিত।’

তাখত-রাভাঞ্চি জানান, মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তারা বার্তা পেয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করতে চায় না এবং দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ওপর হামলার ইচ্ছাও নেই। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইরানিদের ‘স্বাধীনতার জন্য’ রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

ট্রাম্প পরবর্তী সময়ে জানান, তার উদ্দেশ্য ইরানে শাসন পরিবর্তন নয়। তাখত-রাভাঞ্চি এই সম্ভাবনাকে অর্থহীন কল্পনা হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘ইরানের জনগণের মধ্যে সরকার নিয়ে সমালোচনা থাকতে পারে, কিন্তু বিদেশি আগ্রাসনের মুখে সবাই ঐক্যবদ্ধ।’

তিনি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কত দিন স্থায়ী হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে ইরান তা মেনে চলবে, যতক্ষণ না আবার সামরিক হামলা শুরু হয়। তিনি আরো জানান, পারস্য উপসাগরের আরব মিত্ররা আলোচনার উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। কাতার এ ক্ষেত্রে মূল মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।

তাখত-রাভাঞ্চি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা কূটনীতি চাই, আলোচনায় বসতে চাই — তবে প্রস্তুত থাকতে হবে, যেন আরেকবার অপ্রস্তুত অবস্থায় ধরা না খাই।’

সূত্র : বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ