1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৯ অপরাহ্ন

প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠছে ব্যাংকিং খাত

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৭ নভেম্বর, ২০১২
  • ৭৯ Time View

 

ব্যাংক ব্যবস্থাকে মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য দেশের ব্যাংকিং খাত পর্যায়ক্রমে প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠছে। বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের গ্রাহকরা যেন কম ভোগান্তিতে পড়েন এ জন্য ব্যাংকগুলোকে কারিগরি দিক থেকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, সার্বিক ব্যাংকিং খাত প্রযুক্তি নির্ভর করার প্রধান উদ্দেশ্যেই হচ্ছে ব্যাংক ব্যবস্থাকে মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলা। গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা। এ জন্য ব্যাংকগুলোতে যুক্ত হচ্ছে পর্যাপ্ত এক্সপার্ট ও আইটি সুযোগ-সুবিধা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, দেশের বাহির থেকে আইটি ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন নতুন সফটওয়্যার তৈরির করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিপুল অর্থ ব্যয়ে আমদানি করা হচ্ছে যন্ত্রাংশ। ইতিমধ্যে প্রায় ৩০টি বিভাগে যোগ হয়েছে দেড়শ থেকে দুইশত সার্ভার, চার হাজার পিসি এবং কয়েক হাজার ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও স্ক্যানার মেশিন। একই সঙ্গে ইন্টারনেট সুবিধা থাকছে এ সব শাখাতে। পর্যায়ক্রম সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ল্যাপটপ সুবিধা পাবে বলেও জানা গেছে।

জানা গেছে, অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যে পেপার লেস ব্যাংক ব্যবস্থা চালু করার  সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে নির্দিষ্ট সময়ের আগে কাজ শেষ করতে এবং গ্রাহক সেবাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সেবা দেয়ার জন্য ব্যাংকগুলো অটোমেটেড হচ্ছে। এই অটোমেটেড প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকছে ই-টেন্ডারিং, অনলাইন সিআইবি এবং অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস, নতুন নতুন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ই-পেমেন্ট এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে তথ্য দেয়া-নেয়ার ব্যবস্থা থাকছে। এ ছাড়াও সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইনে তথ্য সংগ্রহ করে সরাসরি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারে সংরক্ষণ করে বিভিন্ন মাধ্যমে পর্যালোচনা করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

যদিও শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কাজগুলোও অটোমেটেড করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। যার মধ্যে কোর ব্যাংকিং, ইআরপি এবং ডাটা ওয়্যারহাউসের মতো প্রযুক্তিও রয়েছে। এ ছাড়া অনলাইন পেমেন্ট উৎসাহিতকরণের লক্ষ্যে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ স্থাপন করা হচ্ছে আগামী মাসে।

আরো জানা গেছে, প্রযুক্তিগত আধুনিকায়নের কাজও এখন প্রায় শেষের দিকে। বর্তমানে আন্তঃসম্পর্কযুক্ত কোর ব্যাংকিং ও এসএপি ভিত্তিক ইআরপি সফটওয়্যার সলিউশন, বাংলাদেশ অটোমেটিক ক্লিয়ারিং হাউস এ্যাপ্লিকেশন (বিএসিএইচ) এবং বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) এ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের মাধ্যমে আন্তঃবিভাগ, আন্তঃঅফিস, সকল ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয়ের মধ্যে সংঘটিত বেশিরভাগ কার্যক্রম ও লেনদেনের নির্ভুল হিসাবায়ন কাগজবিহীনভাবেই করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ব্যাংকগুলো সঞ্চয়পত্র, ওয়েজ আর্নার্স বন্ড, ইনভেস্টমেন্ট বন্ড, সরকারি খাতে টাকা জমাদানকারী, চালানের মাধ্যমে কোষাগারে লেনদেনকারী, পেনশনার সার্ভিস অটোমেটেড পদ্ধতিতে স্বল্প সময়ে নির্ভুল সেবা দিচ্ছে। এদিকে ব্যাংকসমূহ সিআইবি অনলাইন এ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ঋণ আবেদনকারীর সিআইবি রিপোর্ট অনলাইনে তাৎক্ষণিক সংগ্রহপূর্বক স্বল্প সময়ের মধ্যে ঋণ দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস এর মহাব্যবস্থাপক মো: হুমায়ুন  কবির বলেন, ব্যাংক ব্যবস্থা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে গেলে গ্রাহকরা তাৎক্ষণিক সেবা পাবে। ফলে ব্যাংকিং সেবার মানেও প্রসার ঘটবে। গ্রাহকদের ব্যাংকিং কাজে সময় অনেক কম লাগবে। পাশাপাশি তাদের হয়রানি অনেক কমে যাবে।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে ব্যাংকগুলো প্রযুক্তিগতভাবে নিজেদের উন্নতি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বেসরকারী ও বিদেশী ব্যাংকগুলো যেভাবে এগিয়ে আছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক ততটায় পিছিয়ে। এর জন্য ব্যাংকগুলো গ্রাহক পর্যায়ে সে রকম সেবা দিতে পারছে না।

তবে বর্তমানে প্রযুক্তিগত ভাবে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো পিছিয়ে থাকলেও আগের তুলনায় উন্নতি হয়েছে। তারপরেও বেসরকারী মালিকানাধীন ও বিদেশী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো। যার  ফলে ব্যাংকিং খাতে মাঝে মাঝে ঝামেলা সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, প্রতি মাস শেষে ব্যাংকের সার্বিক অবস্থাসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিপোর্ট করতে হয়। কিন্তু দেখা গেছে একটি মাস শেষে যে রির্পোটগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকটে আসার কথা তা সরকারী মালিকানাধীন  ব্যাংকগুলো থেকে আসতে পরের মাস লাগে। ফলে মনিটরিং এর সমস্যায় পড়তে হয়। বাড়ে ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতা আর ঝামেলা।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর অনেক শাখা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে। সেসব শাখা প্রযুক্তিনির্ভর করা খুব কঠিন। তারপরেও আমরা চেস্টা করছি যতদূর সম্ভব প্রযুক্তির আওতায় আনার জন্য। ইতোমধ্যে অনেক শাখা প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে গেছে। আর অন্যান্য শাখাতে প্রযুক্তি চালু হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ