1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন

আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১১
  • ১২৬ Time View

অভিযোগের মতো শোনালেও সত্যিই বাংলাদেশ দলের সঙ্গে অবিচারই করেছেন দুই ফিল্ড আম্পায়ার বিলি ডকট্রভ ও শাভির তারাপোরে। প্রথম ইনিংসে নাজিমউদ্দিনের বিতর্কিত এলবিডব্লু’র রেশ কাটতে না কাটতেই পরের ইনিংসে পরপর দুটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলো।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ভারতের এই আম্পায়ারদ্বয়কে এখন ভিলেন হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেউ কেউ তো ক্রিকেট মাঠের স্বৈরাচার শাসক বলতেও পিছু পা হচ্ছে না। দর্শকরা এতটাই ক্ষোভে ফুঁসছেন, তাদেরকে সামনে পেলে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারে। সাধারণ দর্শকের কথা বাদ দিলেও ক্রিকেট বোদ্ধারা দুই ফিল্ড আম্পায়ারের তর্জনীকে অভিশপ্ত আখ্যা দিয়ে সান্ত¡না খুঁজছেন।

১৩২ রানে পিছিয়ে থেকে সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংয়ে গিয়েছিলেন স্বাগতিক দলের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও নাজিমউদ্দিন চৌধুরী। যে ভাবে ব্যাট করছিলেন তামিম তাতে করে কোন ভাবে দুই ঘণ্টা ক্রিজে থেকে যেতে পারলে পাকিস্তানের বোলাররা তুলোধুনো হতেনই। সহ্য হলো না আম্পায়ার বিলি ডকট্রভের। উমর গুলো একটি বাউন্সার তামিমের হেলমেটে লেগে মিসবাহ উল হকের হাতে গেলে, তর্জনী তুলে দেন।

উমর গুলের পরের বলেই শাহরিয়ার নাফিসকে এলবিডব্লু আবেদনে সাড়া দিয়ে মাঠের ভীলেন হয়ে যান ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ওই আম্পায়ার। মাঠে আম্পায়ারদের শাসনে ক্রিকেটাররা এতটাই অসহায়, অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলেও তাদের দিকে মুখ তুলে তাকানোর উপায় নেই। মুখ খুললে ভাগ্যে অবধারিত শাস্তি খেলা হয়ে যাবে। আইসিসি শাস্তি কার্যকরের বিষয়টি আবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুনিয়া জুড়ে প্রচারও করে!

অযৌক্তিক আউট ঘোষণার পরে হাসতে হাসতে তামিমের মাঠ ছাড়াতেও খুঁত খুঁজে পেয়েছেন আম্পায়াররা। খেলা শেষে বাংলাদেশ দলের সাজঘরের সামনে গিয়ে তামিমকে কি যেন বুঝিয়ে এলেন অস্ট্রেলিয়ান ম্যাচরেফারি ডেভিড বোন। স্বৈরাচারের রাজত্বে গরীবকে শাস্তি দিয়েই আইনের শাসন দেখানো হয়। বাংলাদেশের বেলাতেও তাই হচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে সেøজিং নিয়ে তামিম ইকবালকে একবার সতর্কও করে আম্পায়ারিংয়ের শসন জাহির করা হয়েছিলো। আর চট্টগ্রামের শেষ ওয়ানডের উত্তেজনাকর মুহূর্তে ফরহাদ রেজাকে ভুল সিদ্ধান্ত দেওয়ায় আম্পায়ারের গাড়িতে ঢিল পড়েছিলো। তারপরেও চট্টগ্রাম টেস্টে নাজিমউদ্দিনকে ভুল আউট দেওয়া হয়েছিলো।

২৪ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলার ক্ষতিটা আর পোষাতে পারেনি বাংলাদেশ দল। ক্রিকেটারদের নার্ভের ওপর এত বেশি চাপ গেছে যে, উইকেটে গিয়ে থিতু হওয়ার সুযোগও পায়নি। ফলে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ হয় পাঁচ উইকেটে ১১৪ রান নিয়ে। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসের লিড অতিক্রম করতে এখনও ১৯ রান করতে হবে বাকি পাঁচ উইকেটে।

বেচারা আম্পায়াররা না হয় ভুলে দুটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিয়েছে। বাংলাদেশ দলের ফিল্ডারদের ক্যাচ ফেলার দায় তো আম্পায়ারদের ওপর চাপানো যাচ্ছে না। এক ইনিংসে আটবার ক্যাচ ফেলা দলের কাছ থেকে ভালো পারফরমেন্স আশা করাও দিবাস্বপ্ন দেখা। হাতেরলক্ষী পায়ে ঠেলে দেওয়ায় পারদর্শী বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের কে ক্যাচ ফেলেনি! পাকিস্তান দলে তাদের প্রথম ইনিংস যেভাবে ৪৭০ রানে নিয়ে গেছে, তা বাংলাদেশ দলের ভুলেই। সোমবার ১৩০ রানের ইনিংস খেলা তৌফিক উমরকে তিন তিনবার পুর্নজীবন দিয়েছে। ইউনুস খানকে একবার।

চতুর্থ দিন খেলার শুরু থেকেই ক্যাচ ফেলার মহড়া হয়েছে। মিসবাহ, আসাদ শফিক এবং আদনান আকমলকে তাদের ইনিংস গড়ে তোলার জন্য সুযোগ করে দিলে পাকিস্তান তো বড় স্কোর গড়বেই। ৫০ রানে থাকার সময় মিসবাহর ক্যাচ ফেলেছেন রবিউল ইসলাম। ৭০ রানে মিসবাহকে শেষপর্যন্ত সাকিবই ফিরিয়েছেন সিøপে মাহমুদউল্লার হাতে ক্যাচ বানিয়ে। ৩৬ রানে থাকার সময় আসাদের ক্যাচ নিতে পারেননি ওই মাহমুদউল্লাহ। ২৬ রানে আদনানকে নাজিমউদ্দিন পুর্নজীবন না দিলে জব্বর হতো। আকমল পরিবারের এই তৃতীয় ভ্রাতা সাকিবের শিকার হওয়ার আগে প্রথম টেস্ট অর্ধশতক (৫৩ রান) করে ফেলেন।

এত এত ভুলের মাঝেও শেষপর্যন্ত পাকিস্তানকে যে অল-আউট করা গেছে তা ওই সাকিব আল হাসানের জন্য-ই। ১০ উইকেটের ছয়টিই সাকিব নিয়েছেন। ১৪৪ রানের ইনিংস খেলার পর ৪০.৫ ওভারে সাতটি মেডেনসহ ৮২ রানে ছয় উইকেট বিশ্বের খুব বেশি অলরাউন্ডারের টেস্ট ক্যারিয়ারে খুঁজে পাওয়া যাবে না। শতক এবং পাঁচ বা ততোধিক উইকেটে নেওয়ার কৃতিত্ব সাকিবের আগে ২৭বার হয়েছে। উপমহাদেশে আগে সাতবার এই রেকর্ড হয়েছে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিব নিয়মিত পারফরমার। ব্যাটে না হলেও বল হাতে পুষিয়ে দেন। পরিসংখ্যান থেকে কয়েকটি তথ্য তুলে ধরলে জলের মতো সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। টেস্ট ইনিংসে নয়বার পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার করেছেন। অন্তত চার ইনিংসে অর্ধশতক এবং পাঁচ উইকেট পেয়েছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় রান করে আউট না হলে পাকিস্তানের বিপরীতে ঢাকা টেস্ট রেকর্ড সাকিবের জন্য অন্যরকম হতে পারতো।

প্রথম তিনদিন কুয়াশার কারণে দেরিতে খেলা শুরু হলেও মঙ্গলবার সময় নষ্ট হয়নি। ফলে দুই দল মিলে ৯৪ ওভার ব্যাট করেছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে বুধবারও সকাল সাড়ে নয়টায় খেলা শুরু হবে। পঞ্চমদিনে ৯৮ ওভার খেলা চলবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ