1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৩ অপরাহ্ন

আশিয়ান হটাতে সংগঠিত হচ্ছে রূপগঞ্জের সাধারণ মানুষ

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১১
  • ১৫৪ Time View

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় আশিয়ান সিটির আবাসন প্রকল্পের নামে ভূমি আগ্রাসনের কারণে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ দিন দিন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। ক্ষুব্ধ লোকজন আশিয়ানের এ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে ইতিমধ্যে গঠন করেছে একটি কমিটি।

এ কমিটি রূপগঞ্জ ও ঢাকায় এসে মিছিল, মিটিং, সমাবেশ করে বিক্ষোভ করে আশিয়ানের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এ কমিটির কয়েকজন জানিয়েছেন, তারা এখন সংগঠিত হচ্ছেন। এখনকার আন্দোলনের মুখে আশিয়ান পিছু না হটলে এক পর্যায়ে সংগঠিত লোকজন গণবিস্ফোরণ ঘটাবেন। আর এবারের ঘটনা গত বছরের ২৩ অক্টোবর ঘটে যাওয়া ঘটনার চেয়েও অনেক বড় ও ভয়াবহ হতে পারে বলেও আশঙ্কা এলাকার সাধারণ মানুষের।

কমিটি গঠন ও ৭ দফা দাবি

রূপগঞ্জে আশিয়ান সিটির আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে গত ৩ মাস আগে গঠন করা হয়েছে ‘কায়েতপাড়া ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি রক্ষা কৃষক কমিটি’। এ কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারানো কলেজ ছাত্র জামাল হোসেনের বাবা রফিক মিয়াকে।

এ কমিটিতে রয়েছেন আবদুর রশিদ, মোহসীন, শাহজাহান, মো. মোঘল, বাক্কি, হুমায়ূন, মোহসিন, জাকির হোসেন, আবু বক্কর, জাকির হোসেন, দ্বীন ইসলাম, শাহাজ উদ্দিন প্রমুখ।

এ কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক রূপগঞ্জ ইউনিয়নের মশুরী এলাকায় বসবাসকারী মোহসীন মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের এ কমিটি একটি প্রতীক মাত্র। এলাকার মানুষ আশিয়ানের ওপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ। তারা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছেন। তাদেরকে এক কাতারে নিয়ে আসার জন্যই এ কমিটি গঠন।’

মোহসীন আরো জানান, এলাকার যেসব কৃষক ও সাধারণ মানুষ আশিয়ানের আগ্রাসনের শিকার, সেসব ভুক্তভোগীদের দিয়েই কমিটি করা হয়েছে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের ব্যয় এসব খেটে খাওয়া কৃষকদের টাকায় বহন করা হয়।

ইতিমধ্যে এ কমিটি রূপগঞ্জে একাধিক মিছিল, মানববন্ধন ও স্থানীয় আবদুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ করেছে।

এছাড়া ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্প্রতি মানববন্ধন, প্রেস কনফারেন্স করেও তাদের দাবিগুলো উত্থাপন করা হয়।

মোহসীন মিয়া জানান, কায়েতপাড়া ও রূপগঞ্জ ভূমি রক্ষা কৃষক কমিটি ইতিমধ্যে ৭ দফা দাবি জানিয়েছে। এসব দাবি বাস্তবায়ন হলেই কেবলমাত্র এলাকাবাসী আন্দোলন থেকে সরে আসবে।

দাবিগুলো হলো – (১) ‘আশিয়ান শীতলছায়া’ কর্তৃক ক্রয় করা জমি ব্যতীত অন্য কোনও জমিতে বালি ভরাট করতে পারবে না। (২) ‘আশিয়ান শীতলছায়া’ কর্তৃক জমিতে অবৈধভাবে ভরাট করা বালি অবিলম্বে সরিয়ে নিতে হবে। (৩) ‘আশিয়ান শীতলছায়া’র জমি ব্যতীত অন্যের জমিতে খুঁটি এবং পাইপ বসানো যাবে না। (৪) ‘আশিয়ান শীতলছায়া’ কর্তৃক লাগানো সাইন বোর্ডে ক্রয়কৃত জমির পরিমাণ দাগ এবং খতিয়ান উল্লেখ করতে হবে। (৫) সকল আবাসন কোম্পানিগুলোর অবৈধ জমি দখল ও মাটি ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। (৬) বালি ভরাট করার কারণে ফসলি জমি যাতে নষ্ট না হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে। এবং (৭) জমি বেচা-কেনার প্রতারণা রোধকল্পে ‘গণ কমিশন’ এ দলিল রেজিস্ট্রি করা বন্ধ করতে হবে এবং রূপগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রি করতে হবে।

ছেলেকে হারিয়েও দমেননি রফিক মিয়া

‘কায়েতপাড়া ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি রক্ষা কৃষক কমিটি’র আহবায়ক রফিক মিয়ার সাফ কথা, ‘নিজের বাপ-দাদার ভিটে মাটি অন্যের হাতে তুলে দেবো না। কেউ অন্যায়ভাবে আমাদের জমিতে বালু ফেলবে আর আমরা চুপ করে থাকবো এটা হতে দেবো না যতক্ষণ গায়ে রক্ত আর জীবন থাকবে।’

তিনি বলেন, নিজের জমি রক্ষায় রূপগঞ্জবাসী প্রয়োজনে মরতে প্রস্তুত।

রফিক মুঠোফোনে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার এক ছেলে জামাল হোসেন গত বছর জমি রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে। বাবার আগে ছেলের প্রাণ যাওয়াটা খুবই দু:খজনক।’

তিনি বলেন, ‘এখন আমার আর কোনও কিছু হারানোর নেই। তাই গ্রামের লোকজনদের বাঁচানোর জন্যই আন্দোলন করছি। আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে আমার ওপর অনেক হুমকি আসলেও কিছ্ই আমাকে দমাতে পারবে না।’

কারণ, জামালের রক্তের ঋণ সেদিনই শোধ হবে যেদিন রূপগঞ্জবাসী জমি দখলকারীদের রুখতে পারবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ