1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন

বিমানে প্রশিক্ষকের রোষানলে নারী বৈমানিক

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৭
  • ৪১ Time View

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক নারী বৈমানিককে রুট চেকের সময় হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে এক প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে। নারী বৈমানিক ফারিয়াল তার অভিযোগে বলেন, ক্যাপ্টেন ইন্সট্রাক্টর কামরুল হাসান জোয়ারদারের অধীনে প্রশিক্ষণে অংশ নিতে তাকে বাধ্য করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে তিনি অনেক ভাল করার পরও তাকে অন্যায়ভাবে অকৃতকার্য করা হয়েছে। তিনি প্রশিক্ষক ক্যাপ্টেনের রোষানলের শিকার বলে দাবি করেছেন।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, ফারিয়াল এসব হয়রানির প্রতিবাদ করায় তাকে মানসিক রোগী হিসেবে অভিযুক্ত করে মনোচিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়। অন্যায়ভাবে তার বেতনভাতাদি বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে নিরুপায় হয়ে বিমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে ৮ পৃষ্টার একটি অভিযোগ জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও তদন্ত দাবি করেন বৈমানিক ফারিয়াল।

ফ্লাইট অপারেশন শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্তের ভাই হচ্ছেন বিমান ম্যানেজমেন্টের শীর্ষ কর্মকর্তা। এ কারণে ম্যানেজমেন্টও ক্যাপ্টেন ফারিয়ালের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। অজ্ঞাত কারণে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তদন্ত কমিটি গঠন করা হযনি। বরং ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও বলেন, তবে ঘটনাটি ইতোমধ্যে বিমান ম্যানেজমেন্ট, পরিচালনা পর্ষদ পেরিয়ে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়িয়েছে। এই ঘটনায় বিমানের সবাই বিব্রত। কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না। অভিযোগ আছে এখন বিমানের ফ্লাইট অপারেশন শাখার একটি সিন্ডিকেট ফারিয়ালকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিচ্ছে।

এ বিষয়ে বিমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোসাদ্দিক আহম্মেদ বলেন, ফারিয়ালের বেতন বন্ধের নির্দেশ প্রত্যাহারের জন্য তিনি ফ্লাইট অপারেশন বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে ফারিয়ালকে আবার অপারেশনে ফিরে আসতে হলে আগে ইন্সট্রাক্টরের দেয়া ফেল রিপোর্ট মেনে নিতে হবে। এরপর তাকে দ্বিতীয় দফায় অপর একজন ইন্সট্রাক্টরের অধীনে রুট চেক ট্রেনিংয়ে পাঠানো হবে।

বিমান প্রশাসন বিভাগের একজন কর্মকর্তা ফারিয়ালের দেয়া অভিযোগের বরাত দিয়ে জানান, নারী বৈমানিক ফারিয়ালের রুট চেকের প্রশিক্ষক ছিলেন বিমানের চুক্তি ভিত্তিক বৈমানিক ক্যাপ্টেন ইন্সট্রাক্টর কামরুল হাসান জোয়ারদার। তার বিরুদ্ধে এর আগেও অসংখ্য অভিযোগ বিমানে ফাইল বন্দি হয়ে আছে। দুইবার বিয়ে করলেও নারী ঘটিত অভিযোগে তার দুই স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।

জানা গেছে, প্রথম বিয়ের পর তিনি বিমানের একজন কেবিন ক্রুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ওই সম্পর্ক জানাজানি হলে তার প্রথম স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দিয়ে কানাডা চলে যান। এ নিয়ে থানায় মামলাও হয়। এরপর তিনি যে কেবিন ক্রুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছিলেন তাকে বিয়ে করেন। কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ের পরও বিবাহিত থাকা অবস্থায় তিনি বিমানের একজন জুনিয়র পাইলটের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এটিও জানজানি হয়ে যায়। পরে দ্বিতীয় স্ত্রীও তাকে ডিভোর্স দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ক্যাপ্টেন ইন্সট্রাকটর কামরুল হাসান জোয়ারদার বলেন, রুট চেক পাস করার জন্য যেসব শর্ত পূরণ করতে হয় কো পাইলট ফারিয়াল সেসব শর্ত পূরণ করতে পারেননি। এ কারণে তিনি ফেল করেছেন। এখানে কোন ধরনের খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না।

জোয়ারদার আরো বলেন, দীর্ঘদিন গ্রাউন্ডেট থাকার কারণে তিনি কো-পাইলট হিসাবে আনফিট ছিলেন। ককপিটে বসেই তিনি অসংলগ্ন আচরণ করেন। একটি যাত্রীবাহী ফ্লাইটে ওই রুট চেকের পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। ওই ফ্লাইটে তাকে পাইলটের আসনে বসিয়ে বলা হয়েছিল বিমান চালানোর জন্য। কিন্তু ফারিয়াল কমান্ড সঠিকভাবে দিতে পারেননি।

ফারিয়ালের সঙ্গে কি ধরনের হয়রানি করা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিমানে ফ্লাইট ডাটা মনিটরিং করার জন্য ব্ল্যাকবক্স আছে। ব্ল্যাকবক্সের রেকর্ড চেক করলেই সব জানা যাবে।

ফ্লাইট অপারেশন শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে নানা অভিযোগে ক্যাপ্টেন জোয়ারদারকে চাকরিচ্যুত করা হয়। কিন্তু ওই চাকরিচ্যুতির বিরুদ্ধে তিনি আদালতে মামলা করেন। মামলায় জয়ী হয়ে ২০১১ সালে আবার বিমানে যোগদান করেন। এরপর ২০১৩ সালে চাকরি থেকে অবসরে যান। তবে ২০১৪ সালে তিনি বিমানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ