ঢাকা, ১০ আগস্ট, ২০১৬
: মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, শিশু অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিতে শিশু অধিকার কমিশন গঠন করা হবে। এ বিষয়ে নানা কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় শিশু একাডেমিতে আয়োজিত ‘মিসিং চাইল্ড এলার্টের (এমসিএ) জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিশু অধিকার কমিশন গঠন করা হলে শিশুর নানা সমস্যা ও সংকট দূর হবে। তিনি বলেন, “শিশুর প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর এখনও পরিবর্তন হয়নি। কোন কন্যাশিশু পাচার হয়ে তার পরিবারে ফিরে আসলে আক্রান্ত শিশুর পরিবার সমাজের কারণে তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে জাতির আগামির ভবিষ্যত সেই শিশু মানসিক নির্যাতন থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শিশুদের জন্য সকলকে একযোগে উদ্যোগী হয়ে কাজ করতে হবে। শিশু আইনেরও সংশোধন দরকার। শিশুদের নির্যাতন করে, কোন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি শিশুকে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ করেও শুধুমাত্র আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। শিশু আদালতের মাধ্যমে বিচারে লঘু শাস্তি পেয়ে কেউ কেউ বের হয়ে যাচ্ছে’।
তিনি বলেন, এ ধরনের জটিলতা থেকে মুক্ত হতে শিশু আইনের সংশোধনী জরুরি হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান প্রতিমন্ত্রী।
চুমকি বলেন, নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুর সহায়তার জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন ১০৯২১ নাম্বার টোল ফ্রি করা হয়েছে। যে কোন নির্যাতিত শিশু ও নারী এই নাম্বারে যোগাযোগ করে সহায়তা পেতে পারে। পাঠ্যবইয়ের পিছনে এ নাম্বারটি সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে অনেকে এ থেকে সুফলভোগী হচ্ছেন। তবে, প্রবাসে কর্মসংস্থানের জন্য যে নারীরা যান তাদেরও এ নাম্বারের বিষয়ে জানালে তারাও উপকৃত হতে পারবেন। শিশু পাচাররোধে মিসিং চাইল্ড এলার্ট একটি সময়োপযোগী প্রকল্প বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সভায়, শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শাস্তিরোধে কঠোর আইন প্রণয়নের উপরও আলোচনা করা হয়।
সভার শুরুতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাউথ এশিয়া ইনিশিয়েটিভ টু এন্ড ভায়োল্যান্স এগেনেইষ্ট চিলড্রেন (সাইভেক) বাংলাদেশের কার্যক্রম পর্যালোচনা করেন সাইভেকের জাতীয় সমন্বয়কারী ড. মো.অমিনুল ইসলাম এবং এমসিএ’র কার্যক্রম পর্যালোচনা করেন প্লান বাংলাদেশের প্রকল্প ম্যানেজার এবিএম জিয়াউল কবির।
এমসিএ প্রকল্প ও সাইভেকের জাতীয় সমন্বয়কারী ড. আমিনুল ইসলাম বলেন, এমসিএ প্রকল্পের মাধ্যমে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এনএসিজি নামের এনজিও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করছে। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে হারিয়ে যাওয়া ও পাচার হওয়া শিশুদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এর মাধ্যমে প্রত্যাবর্তনের সময় কমিয়ে আনা যাবে এবং প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ায় যুক্ত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার দায়িত্ব ঠিক সময়ে পালিত হচ্ছে কী না, তা নজরদারির আওতায় আনা সম্ভব হবে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম নাছিমা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির (বিএনডাব্লিউএ) নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী, মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তাহমিনা বেগম ও শাহীন আহমেদ চৌধুরী, শিশু একাডেমির পরিচালক মোশাররফ হোসেন, ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাসুদ আলী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মো.আমিনুল ইসলামসহ সাইব্যাকের গর্ভনিং বডি ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।