পাকিস্তানের জাকোকাবাদে আশুরা উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায়ের শোভাযাত্রায় আত্মঘাতী বোমা
হামলায় ২২ জন নিহত হয়েছে। লাসারি মহল্লায় গতকাল শুক্রবার ঘটা ওই ঘটনায় আরও ৪০ জন আহত হয়েছে।
এ ঘটনার পর সৃষ্ট উত্তেজনা ও পরবর্তী হামলা রোধে শহরটিতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। শহরটির হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। কারবালায় শহীদদের স্মরণে শিয়াদের আয়োজিত অনুষ্ঠানপূর্ব শোভাযাত্রায় নিহতদের বেশিরভাগই শিশু। শোভাযাত্রীরা শেরশাহ জোপার থেকে কোয়েত্তা সড়কে আসার সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
হতাহতদের সিভিল হাসপাতাল ও জাকোকাবাদ ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সাইন্সে নেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতাল চত্বর ও অন্যান্য এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে শিয়া সংগঠনগুলো।
জাকোকাবাদের এসএসপি মালিক জাফর ইকবাল আওয়ান ডিসি চকে শিয়া নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে পড়েন। তার গাড়িতে পাথর ছোড়া ও রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ আকাশে গুলি ছোড়ে ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের গুলিতে এক সরকারি কর্মচারী নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারীদেরও হেনস্তা করেছে বিক্ষোভকারীরা।
এ ছাড়া হতাহতদের দেখতে সিভিল হাসপাতালে গিয়ে শিয়াদের তোপের মুখে পড়েন ডিএসপি রানা নাসরুল্লাাহ। উত্তেজিত জনতা তার পোশাক ছিঁড়ে ফেললে এক পর্যায়ে তিনি হাসপাতালের মসজিদে আশ্রয় নেন।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেনের (রা.) শহীদ দিবস স্মরণে শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধান শহরগুলোতে সমবেত হয়ে শোভাযাত্রা করে শিয়ারা। সপ্তম শতকে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন ইমাম হোসেন। তার শহীদ দিবস উপলক্ষে মহররম মাসের ১০ তারিখ শিয়াদের কাছে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক। নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আশুরার এই দিনটি পালন করে তারা।
এই দিনে দূর-নিয়ন্ত্রিত বোমা হামলার আশঙ্কায় পাকিস্তানের বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ শহরে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখা হয়। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার আংশ হিসেবে ঘন ঘন চেকপোস্টসহ সাধারণের চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ শিয়া মুসলমান। বাকিরা সুন্নি মুসলিম।