1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৪২ অপরাহ্ন

ভারতে সহিংসতার প্রতিবাদে রাজপথে লেখকেরা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৫
  • ১৪৪ Time View

ভারতে ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতা এবং কয়েকজন লেখক হত্যার প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভ করেছেন শতাধিক লেখক-সাহিত্যিক। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তাঁরা জড়ো হন সাহিত্য একাডেমির সামনে। স্মারকলিপি দেন সাহিত্য একাডেমির নিস্পৃহতার প্রতিবাদ জানিয়ে। পরে গতকালই জরুরি বৈঠক করে সাহিত্যিক হত্যার ঘটনায় সর্বসম্মতভাবে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করে একাডেমি।
কর্ণাটকের যুক্তিবাদী লেখক এম এম কালবুর্গি গত ৩০ আগস্ট তাঁর বাড়ির কাছে খুন হন। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা এই ঘটনার জন্য দায়ী বলে তদন্তকারী দলের অভিযোগ। কালবুর্গির আগে খুন হয়েছিলেন মারাঠি লেখক গোবিন্দ পানসারে ও নরেন্দ্র দাভোলকর। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজন হত্যাকারীরও শাস্তি হয়নি। ওই সব ঘটনার পাশাপাশি দিল্লির অদূরে উত্তর প্রদেশের বিসাদা গ্রামে গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় প্রৌঢ় মুহম্মদ ইকলাখকে।
সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের হত্যাতেও একাডেমি চুপ থাকায় শুরু হয় প্রতিবাদ। জওহরলাল নেহরুর ভাগনি নয়নতারা সায়গল প্রথম সাহিত্য একাডেমির পুরস্কার ফেরত দেন। তারপর একে একে বিভিন্ন প্রদেশের বিভিন্ন ভাষার প্রায় ৪০ জন সাহিত্যিক ফিরিয়ে দেন এই পুরস্কার, যাঁদের কেউ কেউ এই সংস্থার সঙ্গে যুক্তও।
সাহিত্য একাডেমির নিস্পৃহতায় ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ এসব প্রতিবাদী লেখক সংস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। গতকাল শুক্রবার সংস্থার কর্মসমিতির বৈঠকের আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হওয়া শতাধিক লেখক গতকাল সফদার হাশমি মার্গ এলাকায় শ্রীরাম সেন্টারের সামনে থেকে মিছিল করেন। বিক্ষোভকারীদের হাতে হাতে ধরা ছিল নিহত লেখকদের ছবি। মুখে বা হাতে কালো কাপড় বাঁধা। মিছিল নিয়ে তাঁরা সাহিত্য একাডেমিতে গিয়ে স্মারকলিপি পেশ করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কবি পঙ্কজ সিং বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এদের (চরমপন্থী) এজেন্ডা না মানলে তাদেরই লক্ষ্যে পরিণত করা হবে।’
তবে লেখক শীব শঙ্কর আয়স্থি বলেন, ‘কালবুর্গির খুনের ঘটনা একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এর সঙ্গে রাজনীতি টেনে আনা ঠিক হবে না। লেখকদের পুরস্কার ফেরত দেওয়ার ঘটনা একটি খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।’
লেখকদের বিক্ষোভের পর গতকাল সাহিত্য একাডেমির কর্মসমিতির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, সাম্প্রতিক ঘটনায় কর্মসমিতি গভীরভাবে বেদনাহত। মুক্তচিন্তার স্বাধীনতাকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে।
একাডেমির সদস্য কৃষ্ণস্বামী নাচিমুথু সাংবাদিকদের বলেন, ‘লেখক কালবুর্গির হত্যার ঘটনায় একাডেমি তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে জন্য পদক্ষেপ নিতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।’
সাহিত্য একাডেমি একই সঙ্গে অনুরোধ জানিয়েছে, যে লেখকেরা তাঁদের পুরস্কার ফেরত দিয়েছেন, তাঁরা যেন তা ফিরিয়ে নেন।
লেখকদের পুরস্কার ফেরত দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারকে যথেষ্ট বিপাকে ফেলে দিলেও এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দীর্ঘদিন কোনো কথা বলেননি। বরং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এই বিক্ষোভকে কংগ্রেস আমলের দাক্ষিন্নাভোগীদের বানানো আন্দোলন বলে অভিহিত করেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সাহিত্য একাডেমির সভাপতি বিশ্বনাথ প্রসাদ তিওয়ারি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত শুক্রবারের এই কর্মসমিতির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকা হয়। এখন দেখার, সাহিত্য একাডেমির আবেদন মেনে ক্ষুব্ধ লেখকেরা তাঁদের পুরস্কার ফেরত নেন কি না।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ