চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুক্তরাজ্যে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের শেষ দিনে গতকাল
শুক্রবার বলেছেন, তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) ঐক্যবদ্ধ দেখতে চান। ইইউতে যুক্তরাজ্যের থাকা না-থাকা নিয়ে দেশটিতে পরিকল্পিত গণভোট সামনে রেখে চীনা প্রেসিডেন্ট এ মন্তব্য করলেন। খবর রয়টার্সের।
এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শি জিনপিং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে চীনের কাছে ইইউয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, ইইউ চীনের কৌশলগত অংশীদার ও বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। বিবৃতিতে বলা হয়, শি জিনপিং বলেছেন, চীন ইউরোপকে একত্র ও সমৃদ্ধ দেখার আশা করে। ইইউ-চীনের সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে যুক্তরাজ্য আরও ইতিবাচক ও গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে পারে।
উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার শহরের সঙ্গে চীনের সরাসরি বিমান চলাচলের ঘোষণার মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার শি জিনপিংয়ের রাষ্ট্রীয় সফর শেষ হওয়ার কথা ছিল। যুক্তরাজ্য তার উত্তরাঞ্চলে চীনের বিনিয়োগ আশা করছে। জিনপিংয়ের সফরে গতকাল পর্যন্ত দেশ দুটির মধ্যে চার হাজার কোটি পাউন্ডের বাণিজ্য চুক্তি সই হয়েছে। ম্যানচেস্টার ও চীনের মধ্যে প্রথম সরাসরি ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে হাইনান এয়ারলাইনস কোম্পানি লিমিটেডের।
কূটনীতিকেরা বলছেন, বেইজিং মুক্তবাণিজ্যের সমর্থক যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া এবং এতে ইইউয়ের দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে চিন্তিত। এশীয় পরাশক্তিটি ইইউ জোটকে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করে থাকে।
যুক্তরাজ্যের ইইউতে থাকা না-থাকার বিষয়ে দেশটিতে বিতর্ক চলছে। এ নিয়ে গণভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইইউয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক পর্যালোচনা করতে চান। ২০১৭ সাল শেষ হওয়ার আগেই ইইউতে থাকা না-থাকা নিয়ে যুক্তরাজ্যে ওই গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বিবেচনা করে চীন অন্য দেশের ভোটের ব্যাপারে সরাসরি কোনো কথা বলেনি।
এই সফরে শি জিনপিংকে যুক্তরাজ্য সর্বোচ্চ স্তরের কূটনৈতিক সম্মান দিয়েছে। সফরের প্রথম দিনে গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ রাজপরিবারের সঙ্গেই বেশি সময় কাটান শি জিনপিং। রাতে স্ত্রী পেং লিইউয়ানকে নিয়ে বাকিংহাম প্যালেসে এক ভোজসভায় অংশ নেন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের আয়োজনে এই ভোজসভায় রাজপরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের পাশাপাশি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও অংশ নেন। জিনপিং ক্যামেরনের সঙ্গে তাঁর অবকাশ নিবাস চেকার্সে গিয়েও আলোচনায় মিলিত হন।
সমালোচকেরা বলেছেন, ক্যামেরন বাণিজ্যের ওপর জোর দিতে গিয়ে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন-সংক্রান্ত বিষয়কে এড়িয়ে যাচ্ছেন।
যুক্তরাজ্য তার উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের অংশ হিসেবে চীনের কাছে ২ হাজার ৪০০ কোটি পাউন্ডের বিনিয়োগ প্রকল্প আশা করছে। দেশটির সমৃদ্ধ দক্ষিণাঞ্চলের তুলনায় উত্তরাঞ্চল পিছিয়ে রয়েছে।