1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০০ পূর্বাহ্ন

সমুদ্রসীমা নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা: দীপু মনি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৯ মার্চ, ২০১২
  • ৬৩ Time View

ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তিতে সালিশ আদালতের বাইরে দ্বিপক্ষীয় আলোচনারও সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনক্লস ভবনের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ গত শনিবার দীপু মনির সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘সমুদ্রসীমা নিয়ে ভারত এখন আদালতের বাইরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় আগ্রহী।’

বিষয়টি দীপু মনির দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাংবাদিকদের তরফ থেকে জানতে চাওয়া হয় ‘তাহলে বাংলাদেশ কি আদালতে না গিয়ে এখন দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সমাধান খুঁজবে?’

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে যখন আমরা সালিশ আদালতে গিয়েছিলাম, তখন তো বলেছিলাম, আলোচনার সুযোগ রয়েছে। এখনও বলছি আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে।’

‘তবে সালিশ আদালতে মামলা প্রত্যাহার করে আলোচনার কোনও সুযোগ নেই` বলে স্পষ্ট করে জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৪ সালে সালিশ আদালতের রায় হওয়ার কথা।

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে মামলার রায়ের পর কিছু বিষয় আমাদের পক্ষে এসেছে। আলোচনার মাধ্যমে যদি ওই বিষয়গুলোর মাধ্যমে আমাদের স্বার্থ নিশ্চিত হয়, তাহলেই আলোচনা করা যাবে।’

দীপু মনি বলেন, ‘প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান করতে আমরা আগ্রহী। অন্যের অধিকার আমরা অগ্রাহ্য করতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘পঙ্কজ শরণের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। আমার সঙ্গে আলোচনার সময় আমাকে মিয়ানমারের সঙ্গে জয়ের ব্যাপারে অভিনন্দন জানান।’

`তবে শালিস আদালতের রায় নিয়ে তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেননি` বলে মন্তব্য করেন দীপু মনি।

তিনি বলেন, ‘পরে আমি টেলিভিশনে যতটুকু দেখলাম, তাতে আমার মনে হয়েছে তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বিষয়াবলি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা বলেছেন।’

মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা প্রসঙ্গে
‘সীমান্তে মিয়ানমারের সৈন্য সমাবেশের খবরটি সত্য নয়। আমরা মিয়ানমারে আমাদের দূতাবাস ও ঢাকায় মিয়ানমার দূতাবাসের মাধ্যমে খবর নিয়ে দেখেছি, এসব কোনও তথ্য সত্য নয়।’

মামলার সিদ্ধান্ত গোপনীয়
মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার মামলার আগে বিষয়টি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে বসার প্রয়োজনীয়তা ছিল বলে বিরোধীদের তরফ থেকে তোলা আপত্তি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মামলার বিষয়টি রাষ্ট্রীয় গোপনীয় বিষয়ই ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা এ নিয়ে কাজ করে তারা জানেন মামলায় যাওয়ার বিষয়টি কতটা গোপনীয় ছিল।’

বিরোধীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যারা এখন এই কথা বলছেন, তারা কোন বিষয়ে কখন সর্বদলীয় বৈঠক করেছেন তা কী বলবেন?’

মিয়ানমার সমুদ্রসীমা প্রসঙ্গ
জার্মানির হামবুর্গের আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা বিষয়ক আদালতে বাংলাদেশ নিজ দাবি অনুযায়ী রায় পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আদালতের ২১ জন বিচারক আমাদের যুক্তি থেকে যুক্তি গ্রহণ করেছেন, একজন অন্য ধরনের কিছু যুক্তি বিবেচনা করেছেন।’

‘তবে আমরা যা যা যুক্তি দেখিয়েছি, আদালত তা-ই দিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন দীপু মনি। ‘সেন্ট মার্টিন ও মহীসোপানের অধিকারও আদালত মেনে নিয়েছে।’

মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা রায় প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের যা চাওয়ার ছিল তা পেয়েছি।’

এ রায়ের মধ্য দিয়ে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সৌহার্দ্যকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে।

মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার সমুদ্রসীমা বিরোধকে ‘অতীতের বিষয়’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

দীপু মনি বলেন, ‘তবে আদালত তাদের মতো যখন রায় অনুযায়ী যে মানচিত্র এঁকেছে তখন সবকিছুই তো আমাদের মতো হবে না।’

সমুদ্রসীমা নিয়ে আগের করা ব্লকগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্ত থেকে কোথাও ৩০, ৭০ বা ১২২ নটিক্যাল মাইল, এটাতো মিয়ানমারের নায্য অধিকার নয়।’

রায়ের পর যে এলাকায় ব্লক দেওয়া যাবে, সেখানেই এখন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমুদ্রসীমা রক্ষায় যা যা করণীয় তা করা হবে। এ বিষয়ে কোনও সমস্যা হবে না, যা কিছু প্রয়োজন তা অবশ্যই বর্তমান সরকার করবে।

সৌদি আরব সফর প্রসঙ্গ
জার্মানির হামবুর্গ থেকে রিয়াদ যাওয়ার কথা থাকলেও যাওয়া হয়নি। কারণ সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেসময় রিয়াদে ছিলেন না।

তিনি বলেন, ‘আগামী ২১ মার্চ সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে।’

আইএসআইর বিএনপিকে টাকা দেওয়া প্রসঙ্গ
বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর টাকা দেওয়ার বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাটির সাবেক প্রধানের সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া সাক্ষ্যের ট্রান্সক্রিপ্ট (অনুলিপি) চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, ‘পাকিস্তানের আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে আইএসআই`র সাবেক প্রধান দুররানি যা বলেছেন, তা আমরা প্রথম দুবাইয়ের খালিজ টাইমস-এর প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘দুররানির যে বক্তব্য তা তো কোনও পত্রিকার প্রতিবেদকের বক্তব্য বা কলামের তথ্য নয়, এটি আদালতে শপথ করে দেওয়া সাক্ষ্যের অংশ।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সাক্ষ্যের লিখিত রূপ পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি।’

তিনি বলেন, ‘এটি পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন সত্যটা আসলে কী।’

প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপিকে আইএসআই ৫ কোটি রূপি দিয়েছিলো বলে সাবেক আইএসআই প্রধান সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া সাক্ষ্যে বলেছেন। এই বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

অনেকদিন পর সংবাদ সম্মেলন
দীপু মনি প্রায় তিন মাস পর সাংবাদিকদের সামনে এদিন সংবাদ সম্মেলনে আসেন।

তিনি নিজেই এ সম্পর্কে বলেন, অনেকদিন পর রিপোর্টারদের সঙ্গে বসলাম, মাঝে অবশ্য দুই বার সম্পাদকদের সঙ্গে কথা হয়েছে।

সমুদ্রসীমা নিয়ে মামলায় ঐতিহাসিক রায়ের পর এই সংবাদ সম্মেলন বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনক্লস অণুবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব খুরশিদ আলম, জাতিসংঘ অণুবিভাগের মহাপরিচালক সাইদা মুনা তাসনীম, দক্ষিণ এশিয়া অণুবিভাগের মহাপরিচালক মাশফি বিনতে শামস, মহাপরিচালক সামিনা নাজ প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ