ঝালকাঠিতে চলতি মৌসুমে ৪৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও পামরি পোকায় আক্রান্ত হয়ে চারার সংকটে অনেক জমিই অনাবাদি থেকে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
কয়েকদফা ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। এর ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বীজতলা পচে এবং পামরি পোকা আক্রমণে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
চলতি মৌসুমে ঝালকাঠির নলছিটি ও রাজাপুরে ২৪ হাজার হেক্টরে উফশীসহ প্রায় ৪৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
রোপা আমনের মৌসুম শেষ হতে চললেও চারা সংকটে এখনও অনেক জমি অনাবাদি রয়েছে। সাধারণত এ অঞ্চলে ভাদ্র মাসের আগে রোপা আমন আবাদ শেষ হয়। অতি বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় অর্ধেকেরও বেশী বীজতলার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখন পামরি পোকার আক্রমণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষকরা পামরি পোকা দমনে করতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়েছে। পোকা দমনে স্প্রেসহ বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শ কোনো কাজে আসছেনা। তবে অবস্থার শুরুতেই পোকা দমনের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কৃষি কর্মকর্তারা। ব্যবস্থা নিলে এই দুর্যোগ লাঘব করা সম্ভব হতো বলে কৃষকদের ধারণা।
ফসল হানির আশংকায় খেটে খাওয়া গরীব শ্রেণির কৃষকদের মাঝে হতাশার ছাপ দেখা দিয়েছে। এক পোন বীজ আড়াই (২৫০০) হাজার টাকা, বর্তমানে এক কাঠা জমির জন্য দুইশ টাকার চারা কিনতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও টাকায়ও তা মিলছে না বলে কৃষকরা জানিয়েছে।
আমন ধান উৎপাদন হয় বেশী তাই এ অঞ্চলের কৃষকরা বছরের এ আমন মৌসুমের উপর সবচেয়ে বেশী নির্ভর করে থাকে। কৃষি কর্মকর্তাদের কোনো প্রকার সহযোগিতা না পাবার অভিযোগ কৃষকদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি জেলায় চলতি মৌসুমে ৪৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বীজতলা তৈরি করা হয়েছে চার হাজার ৭৫০ হেক্টরে।
এর মধ্যে তিন হাজার তিনশ হেক্টরের বীজতলা পামরি আক্রান্ত হয়েছে। কৃষি বিভাগ সূত্র সংকট উত্তরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে দাবি করলেও এ পর্যন্ত ২৫ হাজার হেক্টর রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উপ-পরিচালক, শেখ আবু বকর সিদ্দিক জানান, “ঝালকাঠি জেলার চারটি উপজেলায় কিছু কিছু আমন বীজতলায় পামরি পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। পোকা নির্মূলের জন্য আমরা কৃষি বিভাগের লোকজন কৃষকের সহায়তা নিয়ে হাতজাল দিয়ে পোকা ধরা, বীজতলার পাতা কেটে পোকা দমনের চেষ্টা অব্যাহত রাখছি।
আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কৃষি বিভাগের কোনো কর্মকর্তা ছুটি কাটাবে না। এ পোকা দমন না হওয়া পর্যন্ত তারা ছুটির দিনে শুক্রবার-শনিবারও মাঠে কাজ করবে।”