1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৮ অপরাহ্ন

টাইফয়েড শনাক্ত করার নতুন পদ্ধতি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৯ জুন, ২০১৫
  • ১৩৫ Time View

icddrbটাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড জ্বর নির্ণয়ের একটি নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি বের করেছেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) একদল গবেষক।

তাঁরা বলেছেন, এই জ্বর শনাক্ত করতে পদ্ধতিটি পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও কার্যকর। ফলে নির্ভুল রোগ নির্ণয় করে আরও কম সময়ে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।

টাইফয়েড/প্যারাটাইফয়েড একটি গুরুতর রোগ। সাধারণত খাবার ও পানির মাধ্যমে এ রোগের জীবাণু ছড়ায়। সালমোনেলা এনটেরিকা সেরোটাইপ টাইফি (এস. টাইফি) ও সালমোনেলা এনটেরিকা সেরোটাইপ প্যারাটাইফি (এস. প্যারাটাইফি) ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে এ রোগ হয়।

সঠিক চিকিৎসা না হলে একজন রোগী দীর্ঘ মেয়াদে টাইফয়েডের জীবাণুবাহক হতে পারেন। এতে তাঁর মারাত্মক স্বাস্থ্যগত জটিলতা, যেমন: অন্ত্রে ছিদ্র হতে পারে বা মস্তিষ্কের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটতে পারে। আর যাঁরা টাইফয়েডের জীবাণুবাহক, তাঁদের মাধ্যমে অন্যদের শরীরেও ছড়াতেও পারে।

টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড শনাক্ত করার নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে আইসিডিডিআরবির সেন্টার ফর ভ্যাকসিন সায়েন্সেসের পরিচালক ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে রক্তের কোষীয় অংশে একধরনের পরিবর্তন ঘটে।

নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষাগারে রক্তের কোষীয় অংশের নমুনা বিশেষ প্রক্রিয়ায় ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা রাখার পর সেই পরিবর্তন দেখে টাইফয়েড শনাক্ত করা হয়। রক্তের নমুনায় জীবাণুর প্রত্যক্ষ উপস্থিতি ছাড়াই কেবল তার প্রভাবে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া দেখে রোগটি নির্ণয় করা যায়।

আর ছোট শিশুদের কাছ থেকে খুব কম পরিমাণে রক্ত পাওয়া যায় বলে প্রচলিত পদ্ধতিতে রোগনির্ণয় কঠিন হয়ে পড়ে। নতুন পদ্ধতিতে অল্প পরিমাণ রক্তের নমুনা (মাত্র ১ মিলিলিটার) থেকেও রোগ নির্ণয় করা যায়। এ পদ্ধতির খরচ প্রচলিত পরীক্ষাপদ্ধতির সমান। তবে পরীক্ষার সরঞ্জামের কিছু পরিবর্তন আনতে হয়।

ড. কাদরী আরও বলেন, প্রচলিত পরীক্ষায় (ব্লাড কালচার) ৩০ থেকে ৭০ ভাগ টাইফয়েড শনাক্ত হতে পারে। তার মানে, অনেকে রোগ নির্ণয়ের বাইরে রয়ে যেতে পারেন। চিকিৎসকও বুঝতে পারেন না, টাইফয়েড হয়েছে কি না।

সে ক্ষেত্রে অনেকটা অনুমাননির্ভর চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু নতুন পদ্ধতিটি হলো ইমিউনোলজি বেসড, যার মাধ্যমে জীবাণুর আক্রমণে রক্তের কোষীয় অংশে সৃষ্ট অ্যান্টিবডি চিহ্নিত করার মাধ্যমে রোগ নির্ণয়ে সাফল্য পাওয়া গেছে। বর্তমানে এই পদ্ধতি আইসিডিডিআরবির ক্লিনিক্যাল সার্ভিস ইউনিটে নিয়মিত ব্যবহৃত হচ্ছে।

আইসিডিডিআরবির গবেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশে সুনির্দিষ্টভাবে জীবাণু শনাক্ত করার কার্যকর পরীক্ষাপদ্ধতির অভাবে টাইফয়েড রোগটি ঠিকভাবে ধরা পড়ে না। ফলে অসুস্থতার কারণ না জেনে প্রায়ই অ্যান্টিবায়োটিকের ভুল প্রয়োগ করা হয়। এ কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হ্রাস এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে বহু রকমের ওষুধ-প্রতিরোধী সামর্থ্য গড়ে ওঠার মতো সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

গবেষকেরা আরও বলেন, প্রচলিত পদ্ধতিতে (ব্লাড কালচার) রোগীর রক্তে নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণুর উপস্থিতি শনাক্ত করার মাধ্যমে টাইফয়েড নির্ণয় করা হয়। কিন্তু ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ কম থাকলে সেটা রক্তের নমুনায় সব সময় ধরা পড়ে না। এ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরে রক্ত পরীক্ষা করাতে গেলেও অনেক সময় রোগটি শনাক্ত হয় না।

টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড শনাক্ত করার নতুন পদ্ধতি নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্লস নেগলেকটেড ট্রপিক্যাল ডিজিজেস সাময়িকীতে গত এপ্রিলে প্রকাশিত হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, টাইফয়েড রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষাপদ্ধতিটি নতুন, তাই আরও বড় পরিসরে এটি প্রয়োগ করে দেখতে হবে। তখন সময়ই বলে দেবে এর কার্যকারিতা কতটুকু।

তাই পদ্ধতিটি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। টাইফয়েডের জীবাণু শনাক্তকরণের গতানুগতিক পরীক্ষায় শতভাগ ফলাফল পাওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতিটি বড় পরিসরে সফল হলে অবশ্যই একটি বড় উদ্ভাবন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ