1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন

২০১৪ সালে ট্রাইব্যুনালের ছয়টি মৃত্যুদণ্ড

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারি, ২০১৫
  • ৭৫ Time View

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালে ছয়টির রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে সবকটিতেই মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেয়া হয়েছে।image_112353_0

২০১৪ সালের শেষ মুহূতে ৩০ ডিসেম্বর জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের মধ্যমে উভয় ট্রাইব্যুনাল থেকে ১৫টি মামলায় ১৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে রায় দেয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল গঠনের চার বছর নয় মাসের মাথায় এ রায়গুলো এলো।যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষ্যে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ পুরোনো হাইকোর্ট ভবনে স্থাপন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার সংখ্যা বাড়ায় এবং বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।

এক নজরে ট্রাইব্যুনালের ১৫ রায়
ট্রাইব্যুনাল-১
এক. জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসি (২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩)

দুই. জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের ৯০ বছরের কারাদণ্ড (১৫ জুলাই ২০১৩)

তিন. সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড (১ অক্টোবর ২০১৩)
চার. জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী মৃত্যুদণ্ড (২৯ অক্টোবর ২০১৪)

পাচঁ. পলাতক বিএনপির স্থানীয় নেতা জাহিদ হোসেন খোকনের মৃত্যুদণ্ড (১৩ নভেম্বর ২০১৪)

ছয়. ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক হোসেন মৃত্যুদণ্ড (২৪ নভেম্বর ২০১৪)।

সাত. জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের মৃত্যুদণ্ড (৩০ ডিসেম্বর ২০১৪)

ট্রাইব্যুনাল-২
এক. জামায়াতের সাবেক রোকন মাওলানা আবুল কালাম আযাদ মৃত্যুদণ্ড (২১ জানুয়ারি ২০১৩)।

দুই. জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন (৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩)।

তিন. জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান মৃত্যুদণ্ড (৯ মে ২০১৩)।

চার. জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহমান মুহাম্মদ মুজাহিদ মৃত্যুদণ্ড (১৭ জুলাই ২০১৩)।

পাচঁ. বিএনপি নেতা আব্দুল আলীম আমৃত্যু কারাদণ্ড (৯ অক্টোবর ২০১৩)

ছয়. পলাতক আশরাফুজ্জামান ও চৌধুরীর মঈনুদ্দিনের মৃত্যুদণ্ড (৩ নভেম্বর ২০১৩)

সাত. জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড (২ নভেম্বর ২০১৪)

আট. জাতীয় পার্টি নেতা কায়সার বাহিনীর প্রধান সৈয়দ কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড (২৩ ডিসেম্বর ২০১৪)

দুই ট্রাইব্যুনালের ১৫ মামলায় ১৬ জনের মধ্যে ১৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড, একজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ৯০ বছর ও একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।

সাজাপ্রাপ্ত ১৪ জন আসামির মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছেন- চারজন। বিচার চলাকালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করেছেন একজন। রায়ের পর কারাবস্থায় মৃত্যু হয় দুজনের এবং রায় কার্যকর হয় একজনের।

এ ছাড়া রায়ের জন্য অপেক্ষায় আছে দুটি মামলা। বর্তমানে দুই ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে চার মামলায় সাতজনের। বিচার শুরু হতে যাচ্ছে আরো বেশ কিছু ব্যক্তির এবং তদন্ত চলছে আরো ১৮ মামলায় ২৪ জনের বিরুদ্ধে।

এদিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের বিরুদ্ধেও তদন্ত শেষ হয়েছে। আইন পরিবর্তনের অপেক্ষায় আছে।

ট্রাইব্যুনাল ও আপিল বিভাগ মিলিয়ে এ পর্যন্ত ফাঁসির আদেশ পেয়েছেন ১২ জন। রায় কার্যকর হওয়া জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ছাড়া ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বাকি ১১ জন হচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র ও পৌর বিএনপির সহসভাপতি পলাতক জাহিদ হোসেন খোকন, জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ,  ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী এটিএম আজহারুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী, পলাতক জামায়াত নেতা বুদ্ধিজীবী হত্যার দুই ঘাতক আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মাঈনুদ্দিন, পলাতক জামায়াতের সাবেক রোকন (সদস্য) আবুল কালাম আজাদ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা ও জামায়াতের সাবেক রোকন মোবারক হোসেন এবং জাতীয় পার্টি নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মো. কায়সার।

অন্যদিকে সাঈদীকে ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির আদেশ দিলেও সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এছাড়া প্রয়াত গোলাম আযমকে ৯০ বছর ও প্রয়াত আব্দুল আলীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয় ট্রাইব্যুনাল থেকে।

সাঈদীর মামলার মাধ্যমে প্রথম ট্রাইব্যুনাল এবং বাচ্চু রাজাকারের মাধ্যমে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। সাঈদীর মামলাটি ছিল ট্রাইব্যুনালের ১ নম্বর মামলা। অন্যদিকে ৭টি মামলা আইন অনুসারে অথবা রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনক্রমে স্থানান্তরিত হয় ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ট্রাইব্যুনাল-২ এ।

আপিল মামলার কার্যক্রম
ট্রাইব্যুনাল থেকে রায় ঘোষিত ১৩টির মধ্যে এ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এসেছে ৯টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা।

এগুলোর মধ্যে তিনটি মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষিত হয়েছে। এসব রায়ের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কাদের মোল্লার সাজা বাড়িয়ে ফাঁসির আদেশ দেন আপিল বিভাগ, যা কার্যকর হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল থেকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডাদেশ পেলেও সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। অন্যদিকে কামারুজ্জামানের ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে।

বিচার চলাকালে মারা যাওয়ার কারণে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত মুক্তিযুদ্ধকালে রাজাকার বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির একেএম ইউসুফের বিরুদ্ধে মামলা আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা করে নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-২।

ট্রাইব্যুনাল থেকে আসা এসব রায়ে খুশি রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলীরা। প্রসিকিউ সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, এ অল্প সময়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে যেসব রায় হয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে নজির বিহীন। তিনি বলেন, আশা করি নতুন বছরে আরো বেশ কিছু মামলার কার্যবক্রম সম্পন্ন হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ