1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৩ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে এখনো আসছে রোহিঙ্গারা

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৪
  • ৮২ Time View

rohingaবাংলাদেশের কঙবাজারে এখনো নাফ নদী দিয়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে আসছে। তাদের কয়েকজন বলেছেন, জীবনের নিরাপত্তার জন্য তারা বাংলাদেশে এসেছেন।

তবে স্থানীয় প্রশাসন বলেছে, রোহিঙ্গারা এখন দলে দলে আসছে না। মাঝেমধ্যে দু-একটি পরিবারের অনুপ্রবেশ ঘটছে। আগের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক কম বলেই প্রশাসন মনে করছে। এরপরও অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার কথাও প্রশাসন বলছে।

সপ্তাহ খানেক আগে নাফ নদী পারি দিয়ে উখিয়ার অনিবন্ধনকৃত রোহিঙ্গা শিবিরে আত্মীয়ের কাছে সপরিবারের উঠেছেন রুহুল আমীন।

তার স্ত্রী এবং ৯ জন ছেলে-মেয়েসহ ১১ জনের সংসার। তিনি আরেকটি পরিবারের সঙ্গে মোট ১৭ জনের দল নিয়ে নৌকা ভাড়া করে মিয়ানমারে নিজের ভিটে-মাটি ছেড়ে চলে এসেছেন।

তিনি বলেন, আমরা ১৭ জন দলবদ্ধ হয়ে নদীর পারে নারিকেল বাগানে একরাত কাটিয়েছি। নৌকা না পাওয়ায় পরদিনও ঐ নারিকেল বাগানে কাটিয়েছি। এর পরদিন ২৫ হাজার টাকায় নৌকা ভাড়া করে সীমান্তের পাহাড়া এড়িয়ে আমরা নাফ নদী পারি দিয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে উঠেছি। শাহপরী দ্বীপ থেকেই আমরা এই শিবিরে আত্মীয়ের কাছে এসেছি।

রুহুল আমীনের ভাষায়, মিয়ানমারে কিছু দিন ধরে রোহিঙ্গাদের ওপর বড় ধরনের কোনো আক্রমণ হয়নি। কিন্তু নির্যাতন হচ্ছে ভিন্নভাবে। রোহিঙ্গাদের জন্য দম বন্ধ করা একটা পরিবেশ তৈরি করে রাখা হয়েছে। যেখানে তাদের মৌলিক অধিকারগুলোও কেড়ে নেয়া হচ্ছে। সেই অবস্থা থেকে পরের প্রজন্মকে বাঁচাতে সকল পিছুটান ফেলে রুহুল আমীন সীমান্ত পারি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, মিয়ানমারে আমরা চলাফেরা করতে পারি না। বাধা দেয়। এ ঘর থেকে অন্য ঘরে যেতে পারি না।এক পাড়া থেকে আরেক পাড়ায় যেতে পারি না। হাটে-বাজারে মসজিদেও নামাজ পড়তে যেতে পারি না। সেখানে থেকে লাভ কি। এই বন্ধ জীবন ছেড়ে আমরা এখন খোলামেলায় চলে এসেছি।

রুহুল আমীনের মতো আরো ৪টি পরিবারের ৩৮ জনের দল দুটি ছোট নৌকা ভাড়া করে টেকনাফে এসেছে অগাস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে। এদের একটি পরিবার নাফ নদীর তীরেই গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।

৯ সদস্যের এই পরিবারটির কর্তা আব্দুল হাফেজ নিরাপত্তার প্রশ্নে জন্মস্থান ছেড়ে আসার কথা বললেন। তার বক্তব্য হচ্ছে- এখন গোপন হত্যা এবং স্ত্রী মেয়ের সম্ভ্রম বাঁচাতে তিনি সব মায়া ত্যাগ করেছেন।

তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার বলেছে, মিয়ানমারের নয়। তোমরা বাঙালি। তারা আমাদের নিজের মা-বোনকে নির্যাতন করে। আমাদের সম্পদের ওপর অধিকার দেয় না। সেজন্য চলে এসেছি।

আব্দুল হাফেজ আরো বলেন, পৃথিবীতে আমাদের রোহিঙ্গাদের আসলে কোনো দেশ নেই।

নাফ নদীর সীমান্তের মূল অংশে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির ৪২ ব্যাটালিয়ন কাজ করে। এই ব্যাটালিয়নের পরিচালক আবু জার আল জাহিদ বলেছেন, রোহিঙ্গারা মূলত চিকিৎসা করানোর জন্যে বাংলাদেশে আসে। এ ছাড়া নাফ নদীর তীরে দুই পাশে আত্মীয়-স্বজন আছে, তাদের কাছেও আসে। অনেক সময় ৩ বা ৭ দিনের ভিসা নিয়ে এসে থেকে যায়।

বিজিবির কর্মকর্তা আরো উল্লেখ করেন, নিয়মিতভাবে না হলেও রোহিঙ্গারা এখনো আসে। তবে তাদের বাধা দেয়া হয়। এ ছাড়া গত দু’বছরের তুলনায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের ঘটনা অনেক কম।

স্থানীয় পুলিশ মনে করে, চিকিৎসার পাশাপাশি বাণিজ্য চুক্তির আওতায় রোহিঙ্গারা ৩ বা ৭ দিনের ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ পেয়ে একটা বড় অংশ থেকে যাচ্ছে। আর অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা কমবেশি সবসময়ই থাকছে।

টেকনাফ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোক্তার হোসেন উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত এলাকাগুলোতে অভিযান অব্যাহত রাখা হচ্ছে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, নতুনরা এসে অনিবন্ধনকৃত শিবিরে বা এর বাইরে ছড়িয়ে থাকা রোহিঙ্গা আত্মীয়দের কাছে প্রথমে আশ্রয় নিচ্ছেন। এরপর নিজের পথ খুঁজে নিচ্ছেন। তবে সপ্তাহ খানেক আগে অবৈধভাবে হলেও শেষপর্যন্ত রুহুল আমীন সপরিবারে টেকনাফে যে এসেছেন। এখানে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কোনো চিন্তা তাকে কাবু করতে পারেনি।

তিনি মনে করেন, কোনো একটা কাজ তার মিলবে এবং এখানে কষ্ট হলেও তাদের জীবনের নিরাপত্তা থাকবে।

যদিও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের সংখ্যা এখন অনেক কম বলে মনে করছেন। তবে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান তাদের কাছে নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ