প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সজ্ঞানে গণতন্ত্র হত্যা করছেন অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “জনমত ও বিশ্ববিবেককে উপেক্ষা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল এবং ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে তারা জনগণকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্রের লেশ মাত্র রাখতে চায় না।”
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব কনফারেন্স লাউঞ্জে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি আয়োজিত “জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, বিচারপতি অভিশংসন ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট” শীর্ষক আলোচনা সভায় ফখরুল এসব কথা বলেন।
জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, বিচারপতিদের অভিসংশন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ এবং সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল বলেন, “এমনিতেই এখন বিচারপতিরা কোনো মামলার রায় ঘোষণার সময় ‘রায় পরে দেয়া হবে’ জানিয়ে এজলাস থেকে বেরিয়ে যান। কথিত আছে তারা নাকি উপরওয়ালাদের সঙ্গে আলোচনা করে রায় ঘোষণা করেন। তারপরও সরকার বিচারপতিদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। এখন যদি অভিসংশন ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয় তাহলে জনগণ কার কাছে যাবে, কোথায় যাবে। সাধারণ জনগণের ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে।”
জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “এ নীতিমালা করার অর্থই হচ্ছে গণমাধ্যম কর্মীদের মুখে কালো কাপড় বেঁধে দেয়া। অতীতে ‘৭৫ সালে বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। বর্তমানেও তারা সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রচার নীতিমালা, অভিশংসন আইন এরই বহিঃপ্রকাশ।”
বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, “এ সরকারের ভয়াবহতা জনগণ সবাই বুঝতে পারছে না বলেই ৭১ সালের মতো জেগে উঠছে না। এখন জেগে না উঠলে দেশের অস্থিত থাকবেন না।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, “জনগণের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেবেন না। এর পরিণতি ভালো নয়। জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে কিছুক্ষণ ভালো থাকা যায়। হিটলার, মুসোলিনী কেউ টিকতে পারেনি, আপনারাও পারবেন না। তাই জনগণের কাতারে আসুন। এক নায়কতন্ত্রের কাতারে নাম লেখাবেন না। ”
সরকারকে আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, “অতি দ্রুত আলোচনা করে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। যে নির্বাচনে সব দল ও জনগণ অংশগ্রহন করে।”
সভায় আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপির চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তজা, জাগপার সাধারণ খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।