সাম্প্রতিক গুম-অপহরণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দলের নেতাকর্মীদের সাবধানে চলাচল করার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ‘সাংগঠনিক রেড অ্যালার্ট’ জারির এক দিন পর দলের পক্ষ থেকে ১০টি পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখিত বক্তব্যে এসব পরামর্শ দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাংগঠনিক সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা কার্যকর করার জন্য আমরা সারা দেশে বিএনপি এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিটি স্তরের ও শাখার নেতা-কর্মীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। এর জন্য আমাদের পরামর্শ হচ্ছে:
এক. প্রত্যেকের আওতাধীন এলাকায় লিফলেট, পোস্টার, সভা, মতবিনিময়সহ বিভিন্ন পন্থায় অপহরণ-গুম-হত্যা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন এবং এসব অপরাধের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
দুই. চলাফেরায় সতর্ক থাকুন। একা চলাচল এবং নির্জন ও অনিরাপদ স্থানগুলো এড়িয়ে চলুন।
তিন. নেতারা কর্মীদের, কর্মীরা নেতাদের এবং সকলে মিলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখুন। যতদূর সম্ভব পারস্পরিক যোগাযোগ বজায় রেখে চলুন।
চার. প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্থানীয় কর্মকর্তাদের ফোন নম্বর ও যোগাযোগের ঠিকানা সংগ্রহে রাখুন। কোনো ঘটনা ঘটলে দ্রুত তাদেরকে জানান। দলের নেতা-কর্মীদেরও ফোনে বা এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দিন।
পাঁচ. বিএনপির সদর দফতরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। প্রতিটি ঘটনার রিপোর্ট কেন্দ্রকে জানান।
ছয়. কোথাও অপহরণের উদ্যোগের সংবাদ পেলে যত বেশিসংখ্যক লোক মিলে দ্রুত সেখানে উপস্থিত হোন। মিলিতভাবে প্রতিরোধের চেষ্টা করুন।
সাত. আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে কাউকে আটক করে নিয়ে যাবার চেষ্টা হলে তাদের পরিচয় সম্পর্কে এবং আটক ব্যক্তিকে কোথায় নেয়া হচ্ছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হোন।
আট. আটক ব্যক্তিকে যেখানে নেয়া হচ্ছে সেখানে সদল বলে গিয়ে দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলুন এবং কি অভিযোগে এবং কোন মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানার চেষ্টা করুন। কবে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে তা-ও জেনে নিন। পারলে সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নিন।
নয়. আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভুয়া পরিচয় দিলে তাদেরকে প্রতিরোধ করুন। পুলিশে খবর দিয়ে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দিন।
দশ. ভিকটিম পরিবারের পাশে দাঁড়ান। তাদের বিবরণ সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরুন। গুম, অপহরণ, খুনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-কর্মসূচি স্থানীয় ভিত্তিতে গ্রহণ ও পালন করুন। অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনকে এই প্রতিবাদ আন্দোলনে সম্পৃক্ত করুন।