তারেকের রায় : বিএনপিতে উৎকণ্ঠা

তারেকের রায় : বিএনপিতে উৎকণ্ঠা

tarekবিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অর্থপাচার মামলার রায় রোববার। বিএনপির প্রাণভোমরার এ রায়কে ঘিরে দলটিতে দেখা দিয়েছে নানারকম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের দাবি,“নির্দোষ তারেক রহমানকে নির্বাচনের আগে একটা প্রহসনের রায় দিয়ে দোষী সাব্যস্ত করতে পারে সরকার। তবে ন্যায় বিচার হলে অর্থপাচারে সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা প্রমাণ করতে পারবে না। শীঘ্রই তারেক রহমান সুস্থ হয়ে দেশে ফিরবেন।”

তারেক রহমান ও মামুনের আইনজীবীরা বলছেন,“এ মামলার সাক্ষী খাদিজা ইসলাম তাঁর সাক্ষ্যে কোথাও বলেননি, তিনি তারেক রহমানকে কোনো অর্থ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কাজ পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে পরামর্শক ফি হিসেবে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাদিজা ইসলাম টাকা দিয়েছেন। আর ওই টাকার লেনদেন হয়েছে বিদেশে, তাই অর্থ পাচারের অভিযোগ আনার কোনো সুযোগ নেই। ন্যায় বিচার হলে তিনি অবশ্যই খালাস পাবেন।”

দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন বলেন,”৭ নভেম্বর দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। আসামি মামুন তখনকার প্রধানমন্ত্রীর ছেলে তারেক রহমানের প্রভাব খাটিয়ে টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা ঘুষ নেন। সিঙ্গাপুরে একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এই টাকা লেনদেন হয়।”

২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ক্যান্টনমেন্ট থানায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করে দুদক। তারেকের সাথে এ মামলায় নাম রয়েছে তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের। পরে ২০১০ সালের ৬ জুলাই তারেক রহমান ও মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তারেক রহমানকে পলাতক দেখিয়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।

বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষ হয়। পরে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মোতাহার হোসেন রোববার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা্ আব্বাস পরিবর্তন ডটকমকে বলেন,“সরকার আগামী নির্বাচনকে ঘিরে নীলনকশা করছে। নির্বাচন থেকে জনপ্রিয় এই নেতাকে দূরে রাখতে জন্য মিথ্যা মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রায়ের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তবে সরকার যতো ষড়যন্ত্রই করুক না কেন কোন ধরণের প্রহসনের রায় এদেশের মানুষ মেনে নিবে না।”

শনিবার এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,“বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। কোন প্রমাণ ছাড়াই তার বিরুদ্ধে সরকারের নির্দেশে তারেক রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করার চক্রান্ত হচ্ছে। তবে সরকার যে ছলচাতুরিই করুক না কেন, আন্দোলন আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। জনগণকে সাথে নিয়েই এর জবাব দেয়া হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মহিবুল ইসলাম টিটু পরিবর্তন ডটকমকে বলেন,“বিএনপির জ্যৈষ্ঠ নেতাকে ঘিরে আওয়ামী লীগ শঙ্কিত। তাই তাকে অবরুদ্ধ করতেই কোন চক্রান্তের অংশ হতে পারে রোববারের রায়। রায়ের পর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্রদল মাঠে থাকবে।”

এরআগে মানি লন্ডারিংয়ের পৃথক মামলায় তারেকের ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর ছয় বছর সাজা হয়েছিল। বর্তমানে তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসার জন্য ২০০৮ সালে তিনি উচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে ওই দেশে যান।

রাজনীতি