সংবাদ সম্মেলনে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান গ্যাস-সংযোগ বন্ধ রাখায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে
Reporter Name
-
Update Time :
মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০১৩
-
১৪৩
Time View

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর বলেছেন, গ্যাস-সংযোগ বন্ধ রাখায় একদিকে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অন্যদিকে ব্যাপক দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রাহক ভিন্নপথে সংযোগ পেয়ে গ্যাস ব্যবহার করেছেন। অথচ সরকার বলতে পারছে না গ্রাহককে গ্যাস দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিকভাবেও সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রায় দেড় লাখ চুলা এবং ৩০২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে গ্যাস-সংযোগ পেয়েছে। কিন্তু এসব গ্রাহকের কাছ থেকে সরকার গ্যাসের দাম পায়নি। বিতরণ কোম্পানিগুলোর একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী অবৈধভাবে সংযোগ দিয়ে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়াও এক হাজার শিল্পপ্রতিষ্ঠান সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস নিচ্ছে। ফলে সংযোগ বন্ধ রাখার কোনো অর্থই হয়নি। অল্প কিছু লোক অবৈধ সংযোগ না নিয়ে অপেক্ষা করে আছেন।
আজ দুপুরে পেট্রো সেন্টারে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম জানিয়ে দিতে গ্রাহকদের প্রতি আহ্বান জানান পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হোসেন মনসুর বলেন, সরকার গ্যাস-সংযোগ চালু করার পরও অনেক দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি গ্রাহকদের নানা ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। এখনো তারা অবৈধ সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
মনসুর বলেন, তিনি নিজে টেলিফোনে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে গ্যাস-সংযোগ নেওয়ার জন্য কারও কারও সঙ্গে কথা বলে দেখেছেন। তাঁরা টাকার বিনিময়ে দ্রুত সংযোগ দেওয়ার কথা তাঁকে বলেছেন।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ওই ধরনের ব্যক্তিদের প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হতে গ্রাহকদের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, এখন আর গ্যাস-সংযোগ বন্ধ করা হবে না। বিতরণ কোম্পানিগুলো থেকে বিনা মূল্যে নির্ধারিত ফরম নিয়ে আবেদন জমা দেওয়ার সময় ১০০ টাকা ফি দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, যাঁরা বন্ধ থাকা অবস্থায় সংযোগ পেয়েছেন, তাঁদের আগামী ২০ জুনের মধ্যে (এই সময়সীমা ছিল ৩০ মে পর্যন্ত যা ২০ দিন বাড়ানো হয়েছে) অবশ্যই আবেদন করতে হবে। তাহলে প্রতিটি চুলার জন্য ছয় হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা দিয়ে স্থায়ী বৈধ সংযোগ পাবেন। কাউকে কোনো রকম হয়রানি করা হবে না। তবে যাঁরা আবেদন করবেন না, ২০ জুনের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত নামিয়ে গ্যাস আইন ২০১০ অনুযায়ী তাঁদের জেল-জরিমানা করা হবে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, নতুন সংযোগের জন্য কিছু লোক গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায়ের অপচেষ্টায় লিপ্ত আছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে গ্রাহকেরা যদি অভিযোগ করেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগকারীর পরিচয় প্রকাশ করা হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক নওশাদ আহমেদ বলেন, নতুন সংযোগের জন্য কোন ধরনের গ্রাহকের কত টাকা লাগবে, তা কোম্পানির প্রতিটি কার্যালয়ে স্পষ্ট ভাষায় লিখে প্রকাশ্য স্থানে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ঠিকাদারদের ব্যয় সম্পর্কেও প্রতিটি কার্যালয় থেকে জানা যাবে। এর চেয়ে বেশি অর্থ কেউ দাবি করলে গ্রাহককে অভিযোগ করতে অনুরোধ করেন তিনি।
নওশাদ বলেন, যে গ্রাহকেরা চুলার সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন করছেন, তাঁদের বাড়তি সংযোগ দেওয়ার কাজ আগামী সপ্তাহে শুরু করা হবে। যাঁদের চাহিদাপত্র নেওয়া আছে এবং লাইজার লাগানো আছে, তাঁরাও কয়েক দিনের মধ্যেই সংযোগ পেতে শুরু করবেন। এরপর চাহিদাপত্র ও সব ধরনের সংযোগ দেওয়ার কাজ সমানতালে চলবে।
সংবাদ সম্মেলনে পেট্রোবাংলার পরিচালকেরা ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Please Share This Post in Your Social Media
More News Of This Category