1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাতের ষড়যন্ত্র ‍রুখতে ঐক্যের ডাক রাজনৈতিক দলগুলোর এমপি প্রার্থীদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : ডিএমপি কমিশনার হাদির হামলাকারীদের ধরিয়ে দিলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় ৪ স্তরের নিরাপত্তা, প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা হাদির ওপর বর্বরোচিত হামলা গণতন্ত্রের ওপর আঘাত : মির্জা আব্বাস ষড়যন্ত্রকারীরা নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে, প্রশিক্ষিত শ্যুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে: প্রধান উপদেষ্টা হাদির ওপর হামলা মানে বাংলাদেশের ওপর হামলা: সালাহউদ্দিন আহমেদ হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আ.লীগের ষড়যন্ত্রের ছক: নাহিদ বিএনপির সহনশীলতার বিপরীতে মবোক্রেসির রাজনীতি দেখা যাচ্ছে: খসরু হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার ‘আল্টিমেটাম’

‘যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষাকারীদেরও সমঅপরাধে বিচার করবো’

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩
  • ১৩৪ Time View

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকরের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টাকারীরাও সমান অপরাধী। যারা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে চায় তাদেরও সমঅপরাধে বিচার বাংলার মাটিতে হবেই। সকল ওয়াদা যেমন একে একে পূরণ করছি, আজকের দেয়া এই ওয়াদাও পূরণ করবোই। এজন্য তিনি দেশবাসীর সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন।
গতকাল বুধবার বিকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, দেশের নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আজ জেগে উঠেছে। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের ধ্বনিতে গোটা দেশেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতি এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির কারণেই দেশের তরুণ প্রজন্ম আজ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে, একাত্তরে যুদ্ধাপরাধীরা কিভাবে গণহত্যা চালিয়েছে, মা-বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছে তা-ও জানতে পারছে। এজন্যই নতুন প্রজন্ম আজ জেগে উঠেছে সারা দেশে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে তা শেষের পথে। বিরোধীদলীয় নেত্রী (খালেদা জিয়া) যতই চেষ্টা করুক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকর করে বাংলাদেশকে আমরা কলঙ্কমুক্ত করবোই ইনশাআল্লাহ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা পাকিস্তানি তারা এদেশে শাসন-শোষণ করার জন্য হামলা চালাবেÑ এটা মেনে নেয়া যায়। কিন্তু যারা এদেশের মানুষ, এ মাটির সন্তান, তারা কিভাবে আমাদের মা-বোনকে পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিতে পারে? তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বঙ্গবন্ধু নিজেই শুরু করেছিলেন। ১৯৭২ সালে অধ্যাদেশ জারি করে তিনি বিচারের মাধ্যমে ২৬ হাজার যুদ্ধাপরাধীকে বন্দি করেন এবং ১১ হাজার অপরাধীকে সাজা দেন। অনেকে বিদেশে পালিয়ে যায়, তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। যারা হত্যা, লুণ্ঠন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেননি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ’৭৫-পরবর্তী ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ’৭৫-এর ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেন। যাদের নাগরিকত্ব বাতিল ছিল তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়া হয়। রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া হয়। এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী পর্যন্ত বানানো হয়। ওই সময় পরাজিত শক্তির পদলেহন আর তাদের আদর্শ অনুকরণ করেই যেন দেশ চালানো হতো। ওই সময় স্বাধীনতার বিজয়ের কথা বলা যেতো না। ‘জয় বাংলা’ বলাও প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। পরাজিত শক্তির ধ্যান-ধারণা নিয়েই জেনারেল জিয়া দেশ চালায়, সামরিক বাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা অফিসার-সৈনিকদের নির্বিচারে হত্যা করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ঘাত-প্রতিঘাত ও আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, আমরা তরুণ প্রজন্মসহ দেশবাসীর সামনে নির্বাচনী অঙ্গীকার করেছিলাম, ক্ষমতায় এলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবো। আমরা সেই বিচার শুরু করেছি। বিচারের রায়ও পাবো। তবে এ বিচার বিএনপি নেত্রীর পছন্দ নয়। কারণ তার স্বামী জিয়াউর রহমান কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রী-উপদেষ্টা বানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া-ও চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে-বাড়িতে আমাদের লাখো শহীদের রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। এর থেকে লজ্জা আর কি হতে পারে?
বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা দিন-তারিখসহ বিভিন্ন বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলনে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই গঠিত হয়। পরে এ দাবির পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু ফরিদপুরে গ্রেপ্তার হন। এর আগেও তিনি একাধিকবার এ দাবির লক্ষ্যে আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ১৯৫৬ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়। আর ১৯৯৬ সালে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদায় ভূষিত করি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রথম বাংলায় বক্তব্য রাখেন। আমিও যতবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিয়েছি তা বাংলায়ই দিয়েছি।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়তে একাত্তরের মতোই দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে জাতির জনকের আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার করেছি। এবার ক্ষমতায় এসে খুনিদের বিরুদ্ধে রায় কার্যকর করেছি। জাতির কাছে দেয়া ওয়াদা অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছি, রায়ও পাচ্ছি। এ বিচার হবেই, রায়ও কার্যকর হবে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা সুখী-সমৃদ্ধ, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তুলবো। বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে দেশকে প্রতিষ্ঠা করবো।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, নূহ-উল-আলম লেনিন, সাহারা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। সমাবেশে কবিতা আবৃত্তি করেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর ও আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি আহকাম উল্লাহ। অনুষ্ঠানে পুরোটা সময় নেতাকর্মীরা জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে মুহুর্মুহু স্লোগান দিয়ে প্রকম্পিত করে রাখে।
নিহত ব্লগার রাজীবকে নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যম অপপ্রচার চালাচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, রাজীব জীবিত থাকাকালে তারা কেন এসব লিখলো না? রাজীব নিহত হওয়ার পর যারা তার নামে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা নর্দমার কীট। বিএনপির সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে দেশে ৩৬০টি মদের লাইসেন্স দেন। এর আগে বঙ্গবন্ধু এদেশে মদ নিষিদ্ধ করেছিলেন। আর জিয়া মঞ্চে প্রিন্সেস লাকী খান ও প্রিন্সেস জরিনাকে তুলে দিয়েছেন। তারা কাপড় খুলে খুলে নাচতো। অর্ধনগ্ন অবস্থায় ভোর রাতে বের হয়ে যেতো। মৌলবাদীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তখন কোথায় ছিলেন আপনারা?
জামায়াতকে ঐতিহাসিক দালাল হিসেবে উল্লেখ করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, বৃটিশ সময়েও তারা ভারতবর্ষের বিরোধিতা করেছে। এক সময়ের দালাল সব সময়ের দালাল। মতিয়া বলেন, জামায়াত দালালি ছাড়া আর কিছু বোঝে না। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঘাতকদের মানবাধিকারের প্রশ্ন তোলায় তাদের সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের ভাই যারা নিহত হয়েছেন, যেসব বোন ধর্ষিতা হয়েছেন তাদের কি মানবাধিকার নেই? এসব মতলবের ‘মানবাধিকার’।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ