1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪১ অপরাহ্ন

প্রতিশ্রুতি পূরণে ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১২
  • ১০৯ Time View

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বিশ্ববাসীর কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ধনী দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, “আমি ধনী দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানাব, আসুন ২০০০ সালে বিশ্ববাসীর কাছে আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়নের জন্য আরো বেশি করে মনোযোগী হই এবং মানুষের মর্যাদা রক্ষা করি।”

সোমবার সোনারগাঁও হোটেলে ‘সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো অর্জন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ ও ২০১৫ পরবর্তী উন্নয়ন এজেন্ডা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সংঘাত বন্ধ করে সব পর্যায়ে উন্নয়ন, সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ক্ষুধা-দারিদ্র্য হ্রাস, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত, বয়স্ক শিক্ষা, নারী শ্রমিকের পারিশ্রমিক ও বনাঞ্চল বৃদ্ধি ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমাদের এখনো অনেক কাজ করতে হবে।

এক্ষেত্রে বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ জনসংখ্যা অধ্যুষিত দক্ষিণ এশিয়ার পিছিয়ে থাকার কথা তুলে ধরে এজন্য জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার ফলে উচ্চ খাদ্য ও জ্বালানি মূল্যকেই দায়ী করেন শেখ হাসিনা।

চরম দারিদ্র্য অর্ধেকে নামিয়ে আনতে এমডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো সাফল্য অর্জন করলেও দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ দেশের পক্ষে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নাও হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

এই সম্মেলন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গড়ে তুলতে একটি কার্যকর উন্নয়ন কৌশল প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০০ সালে প্রণীত জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের গতি ও অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে প্রয়োজনীয় সুপারিশমালা তৈরি করতে হবে।

“বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে বন্দি। এদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের এখনো অনেক কিছু করার বাকি রয়েছে।”

“স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কারণে সমাজে দারিদ্র্য বিরাজ করে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গেও আজকের দারিদ্র্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত।”

দারিদ্র্য ও ক্ষুধা হ্রাস, বস্তিবাসীর সংখ্যা কমানো, পয়ঃনিষ্কাশন, বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়গুলো মোকাবেলায় সাহসিকতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে পদক্ষেপ নেয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।

তিনি আরো বলেন, “বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও আমাদের গণমুখী নীতি এবং সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নের ফলে বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে দারিদ্র্য পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।”

সাধারণ নাগরিকদের জীবনমানের উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,
বাংলাদেশ আজ বিশ্বের ‘রোল মডেল’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

“নারীর ক্ষমতায়ন বিশেষ করে, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার রাজনীতিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে।”

জাতিসংঘের ৬৬তম সাধারণ অধিবেশনে ক্ষুধা এবং দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূর, বঞ্চনার লাঘব, বাদপড়া মানুষদের সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্তি, মানবিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, সন্ত্রাসবাদের মূলোৎপাটন করতে সমন্বিত ও সামগ্রিক পদক্ষেপ নেয়ার ওপর জোর দেন তিনি।

এভাবেই জনগণের ক্ষমতায়ন ও শান্তির মডেল উপস্থাপনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা, “আমি মনে করি ন্যায়বিচার উন্নয়নের পূর্বশর্ত এবং একমাত্র ন্যায়বিচারই পারে শান্তি নিশ্চিত করতে। আর ন্যায়বিচার তখনই সম্ভব যখন গণতন্ত্র সমুন্নত থাকবে।

“গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি বা ঘাটতির ফলে সামাজিক অবিচার বৃদ্ধি পায়। দারিদ্র্য, অসমতা এবং বঞ্চনা বাড়ে। চরমপন্থা এবং সন্ত্রাস উৎসাহিত হয়।”

টেকসই ও সমতাভিত্তিক উন্নয়নে শান্তির কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা দারিদ্র্য, ক্ষুধা, অসমতা এবং বঞ্চনা দূর করার মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করছি।”

২০১৫-পরবর্তী রোডম্যাপ তৈরিতে জাতিসংঘ মহাসচিব উচ্চ পর্যায়ের যে প্যানেল তৈরি করেছেন তার জন্য বাংলাদেশসহ এশীয় অঞ্চলের সংসদ সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ প্রণয়ন করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সম্মেলনে উপস্থিত সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “আপনাদের আলোচনার ফলে নতুন নতুন পন্থা বেরিয়ে আসবে যা একটি নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। যেখানে উন্নয়নের মূল প্রতিপাদ্য হবে শান্তি, সমতা এবং ন্যায়বিচার।”

জাতীয় সংসদ এবং অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ আয়োজিত এই সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, অ্যাসোসিয়েশন ফর পার্লামেন্টারিয়ানস্ অন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রতিনিধি দামিরা নিয়াজালিয়েভা, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কাজী খলিকুজ্জমান আহমেদ, জাতিসংঘের মিলিনিয়াম চ্যালেঞ্জের গ্লোবাল ডিরেক্টর কোরিন উডস, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকার, জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ আব্দুস শহীদ ও অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের মহাসচিব শিশির শীল।

ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ