এডিআর নির্দিষ্ট মাত্রায় নামিয়ে আনার নির্দেশ

এডিআর নির্দিষ্ট মাত্রায় নামিয়ে আনার নির্দেশ

ব্যাংকিং খাতে সার্বিক ঋণ-আমানতের হার ৭৮.৫৪ শতাংশ থাকলেও কয়েকটি ব্যাংক সীমার চেয়েও অতিরিক্তি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ঋণ বিতরণ করেছে। ফলে এসব ব্যাংকের এডিআর (অগ্রিম বা ঋণ-আমানতের হার) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিত পরিমাণের চেয়ে অনেক বেশি রয়েছে। এজন্য এসব ব্যাংককে এডিআর নির্দিষ্ট মাত্রায় নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি)।

অক্টোবর শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৪ বাণিজ্যিক ব্যাংকের এডিআর অনুপাত ৭১.৯২ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকের ৮৩.০৪ শতাংশ, বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর ৮১.৮১ শতাংশ এবং বিদেশি মালিকানার ব্যাংকের ৬৯.৯৫ শতাংশ। এ ছাড়া ৪৭টি ব্যাংকের গড় আমানত বেড়েছে ১৯.৬৫ শতাংশ ও  ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৭.৪৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকগুলোতে তারল্যের চাহিদার চেয়ে যোগানের অনেক স্বল্পতা রয়েছে। কারণ একাধিক ব্যাংক ঋণ বিতরণ সীমার চেয়েও অতিরিক্তি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বিতরণ করেছে। এতে ব্যাংকগুলোতে কিছুটা হলেও তারল্য সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে এ ব্যাংকগুলো ঝুঁকির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি ব্যাংকের মোট ডিপোজিট রেশিও’র তুলনায় অতিরিক্ত ঋণ বিতরণ করেছে কিনা বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বদা এসব বিষয় ভালোভাবেই তদন্ত স্বরূপ যাচাই-বাছাই করছে। দেখা গেছে, সার্বিকভাবে ব্যাংকগুলোর এডিআর আগের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছে। কয়েকটি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অতিক্রম করায় তাদেরকে ইতোমধ্যে সতর্ক করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যেসব ব্যাংকের এডিআর নির্দেশিত সীমার উপরে রয়েছে সেসব ব্যাংকের সঙ্গে আমরা বৈঠক করে তাদেরকে এডিআর নিদিষ্ট মাত্রায় নামিয়ে আনার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অক্টোবর শেষে দেখা গেছে, কয়েকটি ব্যাংকের এডিআর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার উপরে রয়েছে।

এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানার বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) এডিআর অনুপাত ১৩৯.২০ শতাংশ। জুনে ব্যাংকটির এ হার ছিল ১৫৭.০৩ শতাংশ।  আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের এডিআর ১১৯.৭৩ শতাংশ, জুনে এটা ছিল ১১৯.৮১ শতাংশ।

বিদেশী মালিকানার ন্যাশনাল ব্যাংক অফ পাকিস্তানের এডিআর ১১৭.০৩ শতাংশ। জুনে এ হার ছিল ১১৯.১৫ শতাংশ।

এছাড়া অন্যান্য ব্যাংকের মধ্যে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের এডিআর ১১১.৫৫ শতাংশ, বেসিক ব্যাংকের ৯৪.৯৫ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংকের ৯৫.০১ শতাংশ, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৯২.৪১ শতাংশ এবং দি সিটি ব্যাংকের ৯১.৫৮ শতাংশ।

অন্যদিকে কয়েকটি বেসরকারী বানিজ্যিক ব্যাংকের সাধারণ ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে এডিআর নির্দিষ্ট মাত্রায় থাকলেও ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে এ মাত্রা নির্দিষ্ট সীমার উপরে রয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকিংয়ের আওতায় যেসব ব্যাংকের এডিআরের মাত্রা নির্দেশনা অতিক্রম করেছে সেগুলো হলো: পূবালী ব্যাংকের ১০৬.৬৫ শতাংশ, এবি ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে ১৩৯.১৪ শতাংশ, ঢাকা ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং এ ১০০.১৯ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়ার ১৩৬.৭৭ শতাংশ, এইচএসবিসির ২১৫.৭৯ শতাংশ।

উল্লেখ্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর  মূলধন ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম রোধে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর জন্য মোট আমানতের ৮৫ শতাংশ এবং ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ সীমা নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অর্থ বাণিজ্য