1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৯ অপরাহ্ন

খোলা আকাশের নিচে ৬০ পরিবার চট্টগ্রামে পুড়েছে ৩টি লবণ কারখানা, ২০টি ঘর

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১২
  • ৪৯ Time View

নগরীর ডবলমুরিং থানার স্ট্র্যান্ড রোডে পৃথক দুটি অগ্নিকাণ্ডে ৩টি লবণ কারখানা ও ২০টি ঘর পুড়ে গেছে। দুটি অগ্নিকাণ্ডে ৯০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মাঝিরঘাট নারকেলতলা এলাকায় ৩টি লবণ কারখানা আগুনে পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ৪০ লাখ টাকার লবণ পরিশোধনের যন্ত্রসহ গুদামজাত লবণ পুড়ে গেছে বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর তীরে মাঝিরঘাটের নারকেলতলা এলাকায় বিবি সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজের ওপর একটি বৈদ্যুতিক তারের খুঁটিতে হঠাৎ করে আগুন লেগে যায়।
উঠার আগেই আগুন মুহূর্তেই আশপাশের লবণ কারখানা ও গুদামে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন জানান, ফায়ার সার্ভিসের নন্দনকানন, বন্দর ও আগ্রাবাদের ৩টি ইউনিটের ৭টি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিনি জানান, আগুনে দেশ সল্ট ক্রেশিং ইন্ড্রাস্টিজ, কর্ণফুলী সল্ট ইন্ড্রাস্টিজ ও বিবি সল্ট ইন্ড্রাস্টিজের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, গুদামজাত লবণ এবং নগদ টাকাসহ প্রায় ৪০ লাখ টাকার মালামাল ক্ষতি হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের সভাপতি মো. জসিম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক গোলযোগে আগুনের সূত্রাপাত হয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’

দেশ সল্ট ক্রেশিং ইন্ড্রাস্টিজের মালিক এজহারুল ইসলাম বলেন, ‘এ এলাকায় ১৮টি লবণের কারখানা রয়েছে।’

আগুন পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে র‌্যাব ও পুলিশের সদস্যরা ছুটে আসেন।

খোলা আকাশের নিচে ৬০ পরিবার

পুরাতন কাস্টমস এলাকায় একটি বস্তির প্রায় ২০টি ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সহায় সম্বল হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন সেখানে বসবাসরত ৬০টি পরিবার। ক্ষতি হয়েছে ৫০ লাখ টাকার।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রান্নার চুলার আগুনে রেলি জুট কটন শ্রমিক সমবায় সমিতির লিমিটেডের নিয়ন্ত্রণাধীন রেলি কলোনিতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক ও মিডিয়া সেলের প্রধান জসিম উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিটের ৮টি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় বাসিন্দাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিনি জানান, ওই কলোনির ভেতরে টিনের ছাউনির ২০টি ঘরে নিম্নআয়ের ৬০টি পরিবার বসবাস করত। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল ভাড়াটিয়া। আগুনে তাদের ঘরসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে কলোনির গলি সরু হওয়ায় দমকল বাহিনীসহ উদ্ধার কর্মীদের ঘটনাস্থলে পৌঁছতে বেগ পেতে হয়েছে।

জসিম উদ্দিন বলেন, ‘রান্নার চুলা থেকে সূত্রপাত হওয়া আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। তবে বস্তির ভেতরে রাস্তা গিঞ্জি হওয়ায় কর্মীদের ঘটনাস্থলে পৌঁছতে অনেক বেগ পেতে হয়।’

হায়দার আলী নামে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ বলেন, ‘আমার একটি ঘরে চারটি কক্ষ ভাড়া দিয়েছিলাম। আগুনে সবই পুড়ে গেছে। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।’

‘ঘরের পাশে আমার একটি মুদি দোকানে ক্যাশসহ সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ৮ জনের সংসার নিয়ে এখন আমার পথে বসা ছাড়া কোন উপায় নেই।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন হায়দার।

গার্মেন্টস কর্মী সুমী আক্তার জানান, খালার সঙ্গে এই বস্তিতে থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করে বাড়িতে মা-বাবা ও ছোট ভাই-বোনদের জন্য প্রতি মাসে টাকা পাঠাতেন। আর বাকি টাকা জমা রাখতেন খালার কাছে। কিন্তু আগুনে সবই পুড়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রেলি কলোনিতে প্রায় এক হাজার পরিবার থাকেন। যারা সবাই নিম্নআয়ের। দিন-মজুর, কুলি, গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন এলাকায় কাজ কর্ম করে তারা সংসার চালান।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেখা আলম বলেন, ‘নিম্নআয়ের কর্মজীবী মানুষেরা কম খরচে থাকতে চায়। তাই এই জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ কারও প্রবেশের জন্য রাস্তা নেই। সরু গলি দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে।’

এদিকে আগুনের খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো বস্তিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে জড়ো হয়। ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশ র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ