1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৯ অপরাহ্ন

মার্কিন সামরিক চ্যাট গ্রুপ থেকে ফাঁস হওয়া ৫ তথ্য

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫
  • ১৯ Time View

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা সিগন্যাল অ্যাপে একটি গ্রুপ চ্যাটে সামরিক অভিযান নিয়ে আলোচনা করছিলেন, তবে ভুলবশত সেই গ্রুপে একজন সাংবাদিককেও যুক্ত করে ফেলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এই গুরুতর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়টি ওয়াশিংটন ডিসি এখনও হজম করার চেষ্টা করছে। এই ভুলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পরিকল্পনার গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে।

সাধারণত এ ধরনের গোপন সামরিক আলোচনা কেবল নির্দিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।
সাংবাদিক জেফরি গোল্ডবার্গ প্রথমে ভেবেছিলেন, এটি কোনো ভুয়া গ্রুপ। কিন্তু গ্রুপে সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হতে দেখে তিনি সন্দিহান হয়ে ওঠেন। পরে, যখন ইয়েমেনে হামলার খবর প্রকাশ্যে আসে, তখন তিনি নিশ্চিত হন যে, সেই গ্রুপটি আসল।

সিগন্যাল প্ল্যাটফর্মের ওই গ্রুপে ভুলবশত যুক্ত হন আটলান্টিক ম্যাগাজিনের জেফ্রি গোল্ডবার্গ।
যেখানে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ছাড়াও ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথও ছিলেন। আলোচনার বিষয় ছিল ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠীর ওপর আক্রমণ।

সাংবাদিক গোল্ডবার্গ বলেছেন, ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠীর ওপর বোমা হামলার দুই ঘন্টা আগেই তিনি হামলার গোপন সামরিক পরিকল্পনা সম্পর্কে ওই গ্রুপ থেকে জানতে পেরেছিলেন। যার মধ্যে অস্ত্র প্যাকেজ, লক্ষ্যবস্তু এবং সময় সম্পর্কে বলা হয়েছিল।

ট্রাম্পের চিন্তাভাবনা নিয়ে ভ্যান্সের প্রশ্ন

সামরিক পদক্ষেপ সম্পর্কে গোল্ডবার্গ প্রতিবেদন করেছেন, জেডি ভ্যান্স নামের অ্যাকাউন্টটি লিখেছেন, ‘আমি মনে করি আমরা ভুল করছি।’

ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘সুয়েজ খালে জাহাজ আক্রমণকারী হুতি বাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু করা আমেরিকার চেয়ে ইউরোপীদের স্বার্থ বেশি জড়িত। কারণ ইউরোপ খালের মধ্য দিয়ে বেশি বাণিজ্য পরিচালনা করে।’

ভ্যান্স আরো যোগ করেছেন, তার বস সম্ভবত জানেন না যে, মার্কিন পদক্ষেপ কীভাবে ইউরোপকে সাহায্য করতে পারে। তিনি বলেন, ‘তার বার্তার সঙ্গে ইউরোপ এখন কতটা অসঙ্গতিপূর্ণ, আমি নিশ্চিত নই যে প্রেসিডেন্ট বিষয়টি জানেন কি না।
তেলের দামে মাঝারি থেকে আরো বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে।’

গোল্ডবার্গের মতে ভাইস প্রেসিডেন্ট আরো জানান, তিনি ঐকমত্যকে সমর্থন জানাবেন তবে এক মাস বিলম্বিত করতে হলে ভালো। গোল্ডবার্গ তার প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, জেডি ভ্যান্সের মুখপাত্র পরে তাকে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছিলেন যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ট্রাম্প এবং ভ্যান্স এই বিষয়ে পরবর্তীকালে আলোচনা করেছেন এবং সম্পূর্ণ একমত’।

ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প তার ইউরোপীয় ন্যাটো মিত্রদের সমালোচনা করেছেন। তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং জোর দিয়েছিলেন, ইউরোপকে তাদের নিজস্ব স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব নিজেদেরই নিতে হবে।

ইউরোপকে দোষারোপ

হুতিদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন সামরিক হামলা চালাতে পারে এবং কেন করা উচিত, তা নিয়ে বিতর্ক ভ্যান্সকে খুব একটা প্রভাবিত করেনি। তিনি প্রতিরক্ষা সচিবকে বলেন, ‘আপনি যদি মনে করেন আমাদের এটা করা উচিত, তাহলে শুরু করুন। তবে আমি আবারও ইউরোপকে ছাড় দেওয়ার বিষয়টি ঘৃণা করছি।’

হেগসেথ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, ‘অন্যদের উদারতার সুযোগ নিয়ে এর বিনিময়ে কিছু না দেওয়া ইউরোপ সম্পর্কে আপনার ঘৃণা সঠিক, আমি একমত। এটা দুঃখজনক।’

পিচ

‘এসএম’ নামে পরিচিত একজন গ্রুপ সদস্যও বলেন, ‘এই হামলার পর মিসর এবং ইউরোপকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট করে বলা উচিত, ‘আমরা এর বিনিময়ে কী আশা করি’। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ‘ইউরোপ যদি বিনিময়ে কিছু দিতে রাজি না হয়, তাহলে কী?’

ওই ব্যবহারকারী আরো বলেন, ‘যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফলভাবে নৌচলাচলের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করে, তাহলে এর বিনিময়ে এখানে আরো কিছু অর্থনৈতিক লাভ অর্জন করা প্রয়োজন।’

হামলার পরের অবস্থা

সাংবাদিক গোল্ডবার্গের মতে, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা প্রধান হামলার পর তিনটি ইমোজি পোস্ট করেছেন। একটি মুষ্টি, একটি আমেরিকান পতাকা এবং এরপর আগুন।

মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ পাঁচটি ইমোজি দিয়ে এই হামলার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। গোল্ডবার্গ বলেছেন, তিনি দুটি হাতের প্রার্থনা, একটি বাঁকানো বাইসেপ এবং দুটি আমেরিকান পতাকার ইমোজি দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ সুসি ওয়াইলস এই হামলার সমর্থনে বার্তা দিয়েছেন। ভ্যান্স হামলার আপডেট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বলেন, ‘আমি বিজয়ের জন্য প্রার্থনা করব।’ গোল্ডবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, অন্য আরো দুই সদস্য প্রার্থনার ইমোজি যোগ করেছেন।

বাইডেনকে দোষারোপ

ভ্যান্সের উদ্বেগের প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লিখেছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট আমি আপনার উদ্বেগ বুঝতে পারছি এবং আপনার উত্থাপনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করছি। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার বেশিরভাগই কীভাবে কার্যকর হবে তা বোঝা কঠিন (অর্থনীতি, ইউক্রেন শান্তি, গাজা, ইত্যাদি)।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বার্তা পাঠানো কঠিন হতে যাচ্ছে, যাই হোক না কেন হুতিদের কারণে আমাদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করতে হবে: ১) বাইডেন ব্যর্থ হয়েছেন এবং ২) ইরান অর্থায়ন করেছে।’

ট্রাম্প প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে জো বাইডেনকে ইরানের প্রতি অতিরিক্ত নম্র থাকার জন্য দোষারোপ করে আসছে।

আলোচনায় ওয়াল্টজ

গোল্ডবার্গ বলেছেন, গত ১১ মার্চ মাইকেল ওয়াল্টজ নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি সিগন্যাল মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে একটি অযাচিত আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। এর দুই দিন পর তাকে ইয়েমেন সম্পর্কে গ্রুপ চ্যাটে যুক্ত করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই গ্রুপের অংশ ছিলেন না, তবে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা ছিলেন।

গোল্ডবার্গ প্রথমে ভেবেছিলেন এটি কোনো প্রতারণা চক্র কিন্তু শীঘ্রই বুঝতে পেরেছিলেন, না এটা আসলে সত্যি, ভুয়া নয়। পুরো ঘটনায় দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ওপর চাপ তৈরি করছে। হাউস এবং সিনেটের ডেমোক্র্যাটরা জরুরি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

সোমবার পুরো ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ট্রাম্প বলেন, তিনি কিছুই জানেন না, তবে তিনি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের পাশে দাঁড়িয়েছেন। প্রতিরক্ষা সচিবও বলেছেন, কোনো গোপন তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেউ যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে বার্তা দেননি গ্রুপে।’

সূত্র : বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ