শান্তিপূর্ণভাবে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বিএনপির এই নেতা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘দেশের জনগণ বিদ্রোহের মাধ্যমে এইচ এম এরশাদ ও শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, কারণ তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ কখনোই অনির্দিষ্ট থাকবে না। এক পর্যায়ে তাদের চলে যেতে হয়।
জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যদি শান্তিপূর্ণভাবে ও মর্যাদার সঙ্গে চলে যেতে চায় তাহলে তাদের অবশ্যই নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মিলন মিলনায়তনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ‘শহীদ জিয়া ও বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তাদের দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকেই সমর্থন দিয়েছে। একই সঙ্গে যাতে তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সেই আহ্বান জানিয়ে আসছে।
’
তিনি বলেন, ‘সরকার যদি এটা করে তাহলে দেশের মানুষ শান্তি ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভবিষ্যৎ সরকারকে সহযোগিতা করতে পারবে এবং দেশকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার সংস্কারের কথা বলছে, কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সব সংস্কার করা যাবে না। কারণ এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার দল সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
সরকারের এখন উচিত, সব দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করা এবং সেগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এই প্রশাসন যে সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারবে না। যে সংস্কারগুলো বাকি থাকবে সেগুলো পরবর্তী সরকার সম্পন্ন করতে পারে। সুতরাং এই সরকার যদি শান্তিপূর্ণভাবে ও মর্যাদার সঙ্গে বিদায় নিতে চায়, তাহলে আর দেরি না করে সংস্কারকাজ সম্পন্ন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা অপরিহার্য।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করেছিল।
কারণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘যখনই ভোটাধিকার বাধাগ্রস্ত হয়েছে, তখনই এ দেশের ছাত্র ও জনগণ গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এরশাদ-হাসিনাসহ বিভিন্ন সরকারকে উৎখাত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘তাই আমরা বর্তমান সরকারকে অনুরোধ করব, এসব বাস্তবতা অনুধাবন করে স্থায়ী সমাধানের জন্য অতি শিগগিরই একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’