1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১৬ অপরাহ্ন

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১২
  • ৭১ Time View

বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তি পরিবর্তন, একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণদানের ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘন, পর্ষদের সভায় সরকারি পরিচালকদের অনুপস্থিতিতে বড় অঙ্কের ঋণ অনুমোদন ও কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ভেন্ডার্স চুক্তি লঙ্ঘন করাসহ রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ তুলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে।

একইসঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, অডিট আপত্তির সংখ্যা ও আর্থিক পরিমাণ বৃদ্ধি, বিভিন্ন ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ বৃদ্ধি, ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাওয়া, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া আন্ত‍ঃব্যাংক পারফর্মিং ও নন-পারফর্মিং লোন গ্রহণ, মোট সম্পদের ওপর উপার্জনের হার কমে যাওয়া এবং আমানত ব্যয় বাড়ার কারণে ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তি কঠোরভাবে পালনসহ ২৪ দফা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, উল্লেখিত বিষয়সমূহে উদ্বেগ প্রকাশ করে এসব বিষয়ে ব্যাংকগুলোর গৃহীত পদক্ষেপ এবং এ সংক্রান্ত হাল নাগাদ প্রতিবেদনও চাওয়া হয়েছে বৈঠকে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি হলমার্কসহ একাধিক আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সরকারের নীতি নির্ধারকদের তোপের মুখে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। বিষয়টিকে সামনে রেখে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সার্বিক কর্মকান্ডের চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী গত ৩০ সেপ্টেম্বর ওই সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ অনুমোদন করেন।

বৈঠকে ব্যাংকগুলোর প্রতি প্রদত্ত নির্দেশাবলীর মধ্যে রয়েছে: অনিয়ম উদঘাটনে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সকল অথোরাইজড ডিলার শাখাগুলোতে আগামী এক মাসের মধ্যে বিশেষ পরিদর্শন দল ও অডিট টিম গঠন এবং কোনো অনিয়ম হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ; সকল রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের  প্রধান কার্যালয়ের অডিট বিভাগ ও বৈদেশিক বাণিজ্যিক বিভাগের কার্যক্রম নিয়মিতভাবে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে মনিটরিং করা; পরিচালনা পর্ষদের অবগতির জন্য ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি সভায় নিয়মিত উপস্থাপন করা ও বোর্ডসভায় পরিচালকদের আলোচনার বিস্তারিত বিবরণ কার্যবিবরণীতে লিপিবদ্ধ করা; ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের ডেলিগেশন অব ফিন্যান্সিয়াল পাওয়ার কঠোরভাবে অনুসরণে সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ; ব্যাংকের সকল গুরুত্বপূর্ণ অডিট আপত্তি পরিচালকদের নিয়ে গঠিত অডিট কমিটিতে আবশ্যিকভাবে উপস্থাপন; ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা যাতে তার কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি অধিষ্ঠিত না থাকেন সেটা প্রশাসনিকভাবে নিশ্চিত করা; উৎসাহ বোনাস প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগে এর যৌক্তিকতা প্রদান ইত্যাদি।
এছাড়া ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ও মন্দ ঋণ আদায় বাড়ানো; ঋণ পুন‍ঃতফসিল ও অবলোপনে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন; অগ্রীম অনুচ্ছেদসহ সকল প্রকার অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তি নিষ্পত্তিতে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন; অর্থঋণ আদালতসহ অন্যান্য আদালতে অনিষ্পন্ন মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পতিতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ ও আগামী তিন মাসের মধ্যে ৫ শতাংশ মামলা নিষ্পত্তি করা; প্রতিটি ব্যাংকে রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।

এর বাইরে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে গ্রাহক সেবার মান বাড়ানো, আমানত বৃদ্ধি ও আমানতের সুদের হার বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনৈতিক প্রতিযোগিতা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গ: খেলাপি ঋণ
বৈঠকে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংকে ১১ হাজার ৭৭২ কোটি ২৭ লাখ টাকা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে ৬ হাজার ১৯০ কোটি ৬০ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে।

সূত্রমতে, এটা গত মার্চ প্রান্তিকের তুলনায় বেশি। বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ অবলোপন বা পুন‍ঃতফসিলিকরণের পরিবর্তে আদায়ের ওপর বিশেষ জোর দিতে হবে। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সঠিক ও যোগ্য ব্যক্তিকে বাছাই করতে হবে। জনতা ব্যাংক ছাড়া অপর তিন (সোনালী, অগ্রণী, রূপালী) বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের ঋণ আদায় পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। এরমধ্যে খেলাপি ঋণের বিপরীতে সোনালী ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে।

‘গুডউইল অ্যাডজাসমেন্টের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকে (সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী) এখন মূলধন ঘাটতি নেই বলে বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়।

তবে রূপালী ব্যাংকে অনুমোদিত মূলধনের ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে বৈঠকে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ