1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১০ অপরাহ্ন

ক্ষতিকর সূর্যরশ্মি থেকে পৃথিবী নিরাপদ রাখাই চ্যালেঞ্জ

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২
  • ৮৩ Time View

১৬ সেপ্টেম্বর, আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস। ‘সুরক্ষিত বায়ুমণ্ডল-সুস্থ প্রজন্ম’- প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ওজোন দিবস পালিত হচ্ছে।

এবার দিবসটির বিশেষত্ব হলো মন্ট্রিল প্রটোকল স্বাক্ষরের ২৫ বছর পূর্তি। ওজোনস্তর রক্ষায় ১৯৮৭ সালে ‘মন্ট্রিল প্রটোকল’ স্বাক্ষর হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ‘আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস’ পালিত হচ্ছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ দিনটিকে ওজোন দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ওজোন স্তর রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই দিবসটি পালন করা হয়। মন্ট্রিল প্রটোকলে ওজোন স্তরের ভাঙনের জন্য দায়ী বস্তুর একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল।

শিল্পায়ন ও নগরায়নের প্রভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতার মধ্যে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ ওজোন স্তরের ভাঙনের জন্য দায়ী বস্তুগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মন্ট্রিল প্রটোকল বাস্তবায়নে অর্জিত সাফল্যে শুধু ওজোন স্তর ক্ষয়রোধেই সফল হয়নি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়ও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

একই সঙ্গে মানব স্বাস্থ্য ও প্রতিবেশ রক্ষায় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাবরোধ সম্ভব হয়েছে। ফলে আঞ্চলিক, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ওজোন স্তরের ভাঙন রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ এসেছে।

মানুষসহ প্রাণিজগতের জন্য সূর্য থেকে আসা ক্ষতিকর আলট্রাভায়োলেট তথা অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষায় বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিবেগুনি রশ্মির ৯৭ থেকে ৯৯ শতাংশই শোষিত হয় এ স্তরে। পৃথিবীর উপরিভাগে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরত্বে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অঞ্চলে ৯০ শতাংশ ওজোন স্তর।

১৯১৩ সালে ফরাসি পদার্থবিদ চার্লস ফ্যাব্রি ও হেনরি বাইসন ওজোন স্তর আবিষ্কার করেন। এ স্তরের বৈশিষ্ট বের করেন ব্রিটিশ আবহবিদ জিএমবি ডবসন। তিনি নিজের তৈরি স্পেকট্রোফটোমিটার বা সরল বর্ণবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে ভূমি থেকেই স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোন মাপার কৌশল বের করেন।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাধারণত বিষুবরেখার কাছাকাছি ওজোনের পরিমাণ কম, আর মেরু এলাকায় বেশি।বসন্তকালে ওজোন স্তর বেশি পুরু, আবার শরতে কম।উত্তর আর দক্ষিণ গোলার্ধের মাঝামাঝি থেকে উচ্চতর অক্ষাংশে বেশি পরিমাণে ওজোন গ্যাস থাকে। ওজোনের এ তারতম্য আবহাওয়ার পরিবর্তন ও সৌরশক্তির তীব্রতায়।

কিন্তু ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি শোষণের জাল ওজোন স্তর দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। সত্তরের দশকে ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি প্রথম ধরা পড়ে। দেখা যায়, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে প্রতি দশকে ৪ শতাংশ হারে ওজোন স্তরের পুরুত্ব কমে আসছে। ফলে সৃষ্টি হয় ওজোন গহ্বরের। ওজোন স্তর ক্ষীণ হওয়ার জায়গায় পাওয়া যায় সিএফসি ও ফ্রেয়ন গ্যাস।

বিশের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাজারজাত করা সিএফসি ও প্রেয়ন বিভিন্ন যন্ত্র ও শিল্পে অহরহ ব্যবহৃত হতো। সিএফসি উৎপাদিত হতো রাসায়নিক বিক্রিয়ার সহযোগী উৎপাদক হিসেবে। সত্তরের দশকে প্রমাণ হয়, সিএফসি আবহাওয়ামণ্ডলের নিচের দিকে পৌঁছালে অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ক্লোরিন ত্যাগ করে। এই ক্লোরিন ওজোন স্তরের বড় শত্রু, যা ভূপৃষ্ঠে অক্ষত থাকে শতাব্দীকাল।

নাসার গবেষণায় ধরা পড়ে, বায়ুমণ্ডলের অন্যান্য এলাকার তুলনায় অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলে ওজোন স্তরের খুব দ্রুত ক্ষতি হচ্ছে। সেখানে বসন্তকাল ওজোন স্তরের জন্য মারাত্মক। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষতি এ সময়েই ঘটে। এর জন্য দায়ী সিএফসি। মেরু এলাকার শীতকালে স্ট্র্যাটোস্ফোরিক মেঘ ক্ষতির পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেয়। সূর্যের আলোহীন তিন মাস মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বায়ুমণ্ডলে সৃষ্ট মেঘের উপরিভাগে সহজেই রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে।

গবেষণায় জানা গেছে, অতিবেগুনি রশ্মি ক্যান্সারসহ মারাত্মক রোগের কারণ। মানবজাতি ও প্রাণিকুলের জন্য রক্ষাকারি এই ওজোন স্তর রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই। ওজোনের জন্য ক্ষতিকর সিএফসি নির্গমন রোধে সচেতন হওয়াটাই বড় ব্যাপার। সচেতনতা নিয়েই বিশ্বব্যাপি ওজোন দিবস পালিত হচ্ছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে ওজোন স্তর রক্ষায় আহ্বান জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, “সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে পৃথিবীকে নিরাপদ রাখতে ওজোন স্তরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে ওজোন স্তর হুমকির সম্মুখীন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আবাসযোগ্য সুন্দর পৃথিবী গড়ার উদ্দেশ্য নিয়ে ওজোন স্তর রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি গৃহীত পদক্ষেপের বাস্তবায়নে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ওজোন স্তর ক্ষয়রোধ আন্দোলনকে আরও বেগবান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পরিবেশ রক্ষায় আমাদেরকে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী মন্ট্রিল প্রটোকল বাস্তবায়নে অর্জিত সাফল্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন, অন্যান্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন ও প্রটোকল বাস্তবায়নে আমাদেরকে অধিকতর প্রেরণা যোগাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ