রাজধানীর গুলশানে শিল্পপতি ফজজুল হক হত্যা রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির মতে, আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি বাড়ির কাজের লোক মোহাম্মদ সবুজ(২০)। তাকে আটক করে ৩ দিনের রিমান্ডে আনার পর সে তার মনিবকে হত্যার স্বাকারোক্তি দেয় বলে দাবি করেছে ডিবি।
শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির উপ-পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পরপরই থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ছায়া তদন্ত শুরু করে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুলাই গুলশানস্থ নিজ বাসায় বিশিষ্ট শিল্পপতি ফজজুল হক খুন হন। এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর ১২ আগস্ট গুলশান থানা থেকে মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তরিত হওয়ার পর ওই বাসার ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা।
একপর্যায়ে ৬ সেপ্টেম্বর কাজের লোক সবুজকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। জিঞ্জাসাবাদে সবুজ আর্থিক সুবিধার জন্যই বাড়ির মালিককে হত্যার কথা গোয়েন্দাদের কাছে স্বীকার করে বলে জানান উপ-পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
পরে তার দেয়া তথ্য অনুসারে ৬ সেপ্টেম্বর রাতে ঘটনাস্থল অথাৎ ফজজুল হকের বাসার স্যুয়ারেজ ড্রেনে লুকিয়া রাখা প্ল্যাস্টিকের প্যাকেটে মোড়ানো ৫০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল সেট, একটি রাডো ঘড়ি, একটি আংটি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া একইসময়ে যেখানে ফজলুল হক খুন হন সেই কক্ষেরি খাটের বক্সে লুকানো হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরিটিও উদ্ধার করে পুলিশ।
শুধুই আর্থিক লোভে পড়ে এই হত্যাকাণ্ড কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ জুন এই বাসায় দ্বিতীয় বারের মত কাজে যোগ দেয় সবুজ। দেড় বছর আগে চুরির অভিযোগে তার চাকরি চলে যায়। সবুজ জানিয়েছে, প্রেম করে বিয়ে করা এবং একটি সন্তান হওয়ার পর আর্থিক অনটনে পড়ে সে। এরই সূত্র ধরে একপর্যায়ে শিল্পপতিকে খুন করার পরিকল্পনা নিয়ে আবার কাজে যোগদান করে সে। সে ডিবিকে জানিয়েছে পরিকল্পিতভাবেই সে এই কাজ করেছে। হত্যাকাণ্ডের বর্ণনাও দিয়েছে সবুজ ডিবিকে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা অধিকতর তদন্ত করে দেখবো এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি-না।
অর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খুনের পরপরই ফ্লোরে পড়ে থাকা রক্তের সমুনা ও উদ্ধারকৃত রক্তমাখা ছুরি দেশীয় ল্যাবে দেশীয় বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-কমিশনার মাহবুবুর রহমান, উপ-কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম, উপ-কশিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান।
উল্লেখ, গত ২৮ জুলাই গুলশানস্থ নিজ বাসায় বিশিষ্ট শিল্পপতি ফজজুল হক নৃশংসভাবে খুন হন।