‘আবারও বলছি, চার হাজার কোটি টাকা বড় অঙ্ক নয়’

‘আবারও বলছি, চার হাজার কোটি টাকা বড় অঙ্ক নয়’

সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রাথমিকভাবে দুই হাজার কোটি টাকা নিশ্চিতভাবে আদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বুধবার দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, “এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তারা দুষ্টু। তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।”

তিনি বলেন, “টাকা আদায় করাই মূল লক্ষ্য। তবে এটা নিয়ে হৈচৈ না হলে টাকাটা আদায় করা সহজ হতো।”

সোনালী ব্যাংকের চার হাজার কোটি টাকা কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি আবারও বলছি, চার হাজার কোটি টাকার ঘটনা তেমন কিছুই না। আমরা বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেই। এটা তার ১০ শতাংশ।” মঙ্গলবারও অর্থমন্ত্রী একই কথা বলেন।

সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সম্প্রতি প্রায় সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে।  নতুন পর্ষদ গঠনের লক্ষ্যে সোনালী ব্যাংক ছাড়া বাকিগুলোর চেয়ারম্যানদের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, পুনঃআদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ ব্যাংকের চেয়ারম্যান যিনি আছেন, তিনিই বহাল থাকবেন।”

তিনি বলেন, “এটা নিয়ে হৈ চৈ না হলে তাদের শক্ত ডাণ্ডা দেওয়া যেত এবং আরো বেশি টাকা আদায় করা যেত। হৈ চৈ হওয়ায় এখন তারা আদালতে যাবে এবং আদালতে গেলে বিষয়টি ঝুলে যাবে।”

এদিন দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধি দলের আসন্ন ঢাকা সফরকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত এক প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। বৈঠকে অর্থসচিব ফজলে কবীর, বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শফিকুর রহমান পাটোয়ারি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলোতে রাজনৈতিক নিয়োগের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী তা নাকচ করে বলেন, “বিষয়টি সেরকম নয়। কিন্তু দুষ্টু লোক এর জন্য দায়ী। প্রমাণ সাপেক্ষে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে যারা আছেন আগামীতে তাদের পরিবর্তন করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সবাই নয়, কিছু হয়তো থাকবে।”

আইএমএফের প্রতিনিধিদলের আসন্ন ঢাকা সফরের প্রস্তুতি সভা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আইএমএফের প্রতিনিধি দল যখন ঢাকায় আসবে আমি তখন দেশে থাকবো না। সেজন্যই এ বৈঠকটি করা হয়েছে।”

উল্লেখ্য, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকে যোগ দিতে চীন যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। আর আইএমএফ প্রতিনিধি দল আসছে ১২ সেপ্টেম্বর।

অর্থমন্ত্রী জানান, আইএমএফের সঙ্গে বৈঠকে ঋণের গ্যারান্টি, সরকারের ব্যাংকঋণ, ভ্যাট আইন ও ব্যাংক কোম্পানি সংশোধন আইন, পুঁজিবাজার ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হবে। ভ্যাট আইন ও ব্যাংক কোম্পানি সংশোধন আইন এ দুটি সংসদের চলতি অধিবেশনেই উপস্থাপনের কথা রয়েছে বলেও জানান।

পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ প্রসঙ্গে দুটি মত রয়েছে। একটি বাংলাদেশ ব্যাংকের, অন্যটি ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনী কমিটির। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকই ঠিক করবে। কোনো সমস্যা হবে না।

অর্থ বাণিজ্য