অফিস ও অবস্থান জানতে দলগুলোকে চিঠি দিচ্ছে ইসি

অফিস ও অবস্থান জানতে দলগুলোকে চিঠি দিচ্ছে ইসি

নিবন্ধিত ৩৮টি রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক কাঠামো জানতে চলতি মাসে দলগুলোকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চিঠি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে দলগুলোকে তাদের কাছে ইসির চাওয়া বিভিন্ন তথ্য জমা দিতে হবে। পরে সে মোতাবেক ইসি তার পর্যবেক্ষণ চালাবে।

একই সঙ্গে আগ্রহী নতুন দলগুলোর কাছ থেকে নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে ইসি।

নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, “এই চিঠিতে সারাদেশে সংগঠনের অবস্থান, নির্বাচিত কমিটির অবস্থা ও নিজস্ব অফিস সম্পর্কে জানাতে এক মাস সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সেপ্টেম্বরে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহ্বান করতে যাচ্ছে কমিশন। নিবন্ধিত হতে আগ্রহী নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্দিষ্ট ফরমে এক মাসের মধ্যে আবেদন করতে হবে।”

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, “২০০৮ সালে নিবন্ধিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত দলগুলোর সাংগঠনিক অবস্থার কোনো হালনাগাদ চিত্র ইসিকে দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে নিবন্ধনের শর্ত পালন করছে কি না তাও যাচাই করে দেখা হয়নি। এ অবস্থায় বর্তমান নিবন্ধিত দলগুলো কোন অবস্থায় আছে, কেন্দ্রীয় কমিটির অবস্থা কী, সারাদেশে কতগুলো অফিস আছে, উপজেলা পর্যায়ে নেতাকর্মীদের অবস্থা কী? এসব জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। কোনো দল নিবন্ধনের শর্ত ভঙ্গ করলে ওই দলকে শোকজসহ নিবন্ধন বাতিলের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

অভিযোগ আছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বেশকিছু দল তাৎক্ষণিক অফিস সাজিয়ে নিবন্ধন নিয়েছে। এখন এসব অফিসের কোনো অস্তিত্ব নেই। অনুসন্ধানে এরকম অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ওই দলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নির্বাচনের আগ মুহূর্তে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য ভিড় জমাতে পারে। তখন সবকিছু যাচাই করা সম্ভব হয় না। এ জন্য এবার আগে থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের জন্য সময়সীমা বেধেঁ দেওয়া হচ্ছে।

২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করে কমিশন। পরে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় এখন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৩৮টি।

দেশের মোট জেলার এক-তৃতীয়াংশে জেলা কমিটিসহ কার্যকর জেলা দফতর ও উপজেলায় দলের ২০০ জন করে সদস্য আছে এমন প্রমাণ দিয়ে নিবন্ধিত হয়। আগে সংসদে একজন প্রতিনিধি আছে বা কোনো জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটের ৫ শতাংশ পেয়েছে, এমন সব দলের নিবন্ধনে সাংগঠনিক কাঠামোর প্রয়োজন হয়নি।

এটিএম শামসুল হুদা কমিশনের শেষ সময়ে নিজস্ব কর্মকর্তারা তদন্ত করে দেখেছে, হোমিওপ্যাথিক ওষুধের দোকান, স মিল, মুদির দোকান ও সবজির আড়তকে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের জেলা পর্যায়ের অফিস হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।

এ অবস্থায় নিবন্ধনের চার বছরেরও বেশি সময় পরে নিবন্ধিত এসব রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক অবস্থা যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। কমিশন সভায় দলগুলোকে দ্রুত চিঠি পাঠানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে চিঠির জবাব পেলে তার ভিত্তিতে তদন্ত করবে ইসি।

এছাড়া সেপ্টেম্বরে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের আবেদনের একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেবে কমিশন। নির্দিষ্ট ফরমে আবেদনপত্র জমা নেওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত নিবন্ধন দেওয়া হবে। নির্বাচনের সময় বিভিন্ন জামেলা কমানোর জন্যই এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

বাংলাদেশ