1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৪ অপরাহ্ন

ঢাকায় দুই শতাধিক ক্রাইম স্পট, নিয়ন্ত্রণে ২০ গ্রুপ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
  • ৬৭ Time View

রাজধানীর অধিকতর অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে দুই শতাধিক স্পট চিহ্নিত করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত অপরাধগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন জোনে ভাগ করে বিশেষ নজরদারিরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) জয়েন্ট কমিশনার (ক্রাইম) আব্দুল জলিল মণ্ডল কাছে বলেন,  “আগে থেকেই আমাদের ক্রাইম জোনের তালিকা ছিল। সেই তালিকা আপডেট (হালনাগাদ) করে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। রাজধানীর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের নেওয়া পদক্ষেপের অংশ এটা।”

এদিকে, অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব ক্রাইম স্পটের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ২০টি গ্রুপ। কখনো কখনো একটি এলাকায় প্রধান গ্রুপের সমন্বয়ে উপ-গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়।”

পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধানে পাওয়া অপরাধপ্রবণ এলাকার মধ্যে রয়েছে, মিরপুর, কাফরুল, পল্লবী, শাহআলী, মোহাম্মদপুর, মতিঝিল, খিলগাঁও, সবুজবাগ, যাত্রাবাড়ী, বংশাল, কোতোয়ালি, লালবাগ, ডেমরা। এসব এলাকায় বেশি অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ১৪ নম্বর সেকশন পর্যন্ত চাঁদাবাজি ও খুনখারাবি বেশি ঘটছে। তেজগাঁও এলাকার কারওয়ানবাজার, তেজগাঁও বস্তিতেও বেশি অপরাধ সংঘটিত হয়।

এছাড়া মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ, কাঁটাসুর, বিহারিপট্টি এলাকায় অপরাধের মাত্রা এখন বেড়ে গেছে। ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পাশে ভাসানটেক, মানিকদী, কচুক্ষেত সন্ত্রাসীদের আখড়া। পল্লবী থানার বাউনিয়া বাঁধ, বিহারি কলোনি এলাকায়ও অপরাধ কার্যক্রম বাড়ছে। সবুজবাগ ও খিলগাঁও থানা এলাকার মান্ডা, ঝিল প্রজেক্ট এলাকা, নন্দীপাড়া, মানিকনগর, ত্রিমোহনী, নাসিরাবাদ এলাকায় সন্ত্রাসীদের আনাগোনা ক্রমশ বাড়ছে।

মতিঝিল থানা এলাকায় এজিবি কলোনি, শাহজাহানপুর, ফকিরাপুল, রেলওয়ে কলোনি, গোপীবাগ, টিটিপাড়া, রামপুরা থানার বনশ্রী, বাড্ডা থানা এলাকার নূরের চালা, বেরাইদ, ছোলমাইদ, শাহজাদপুর, খিলক্ষেত থানার নামাপাড়া, কুড়িল, নিকুঞ্জ এলাকা, উত্তরা, উত্তরখান ও দক্ষিণখান থানা এলাকার মৈনারটেক, আটিপাড়া এলাকায় অপরাধ বেশি সংঘটিত হচ্ছে।

শহীদ কমিশনার ও ডাকাত শহীদের এলাকা হিসেবে পরিচিত ডেমরা, পূরাণ সানারপাড়, বড়বাড়ি, ভবনবাগিচা, মুরাদপুর, সারুলিয়া, টেংবা, কোনাপাড়া, শহীদনগর, শ্যামপুর ওয়াসা পুকুরপাড়, মিরহাজিরবাগ, ফরিদাবাদ, কুতুবপুরসহ প্রায় দুই শতাধিক এলাকা।

মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হায়াতুজ্জামান বলেন, থানা এলাকার যে সব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা রয়েছে সেগুলোতে পুলিশি টহল জোরদার থাকে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

পল্টন থানার ওসি গোলাম সারোয়ার বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে তৈরি অপরাধপ্রবণ এলাকার একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তাদের থানাও অপরাধপ্রবণ এলাকাও চিহ্নিত করেছে। এসব এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ টহল থাকছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, অনুসন্ধানে জানা যায়, এই অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলো অন্তত ২০টি গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনো কোনো স্থানে উপ-গ্রুপও রয়েছে। এরা সবাই এলাকায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও খুনখারাবির মতো অপরাধ করে চলেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কাফরুলে শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরের বাহিনী তিনটি ভাগে বিভক্ত। কালা জাহাঙ্গীরের কোনো খোঁজ না থাকলেও তার নামে চাঁদাবাজি করতে করতে আলাদা বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছে। এরা হলেন শাহীন শিকদার ও মনির গ্রুপ।  কিলার আব্বাস জেলে আটক থাকলেও তার নাম দিয়ে রনি গ্রুপের সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে আসছে। একই কায়দায় খুনখারাবি করছে তাজ বাহিনী। তাজ কলকাতায় গ্রেফতার হয়ে এ মুহূর্তে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে আটক। তার স্ত্রী জ্যোস্না বর্তমানে নেতৃত্বে রয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে ২১ জানুয়ারি তাজ বাহিনীর ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪। তাজ বাহিনীর কিলার গ্রুপের অন্যতম সদস্য হচ্ছে পিচ্চি ফারুক, সেলিম, রফিক, রাজু, জুয়েল, ইয়াসিন। গাবতলীর পর্বত সিনেমা হল থেকে মিরপুর-১ নম্বর এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে জনি-রিয়াদ বাহিনী। দক্ষিণ বিসিলের আলিফ, স্টাফ কোয়ার্টারের নাজির, সফিক, ইব্রাহিম, আনসার ক্যাম্পে ভাঙারি বাবুল ও আবুল এই বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী পরিচয়ে এ গ্রুপের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ বাহিনীর সদস্যরা কারাবন্দি বিকাশ, পিচ্চি হেলালের সহযোগী হিসেবে অপরাধী কার্যকলাপ চালায়।

এছাড়াও দক্ষিণখান, উত্তরখান এবং তুরাগ থানা এলাকার আশকোনা, হাজী ক্যাম্প, মেডিকেল রোড, রসুলবাগ এলাকায় সক্রিয় মোশারফ, চঞ্চল, নোয়াখাইল্যা মনির, কানা ফারুক গ্রুপ। এদের নাম ডিবি-র‌্যাবের কাছে থাকলেও কখনো ধরা পড়েনি।

এদিকে মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, ফকিরাপুল এলাকায় সক্রিয় মুরাদ, আঙুল কাটা দিদার, দেলোয়ার খালেক গ্রুপ। রমনা-বাড্ডা জিসান গ্রুপের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ডানো বাবু সম্প্রতি গ্রেফতার হলেও পেট কাটা তাজু, গালকাটা জামাল সক্রিয় রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়।

এদিকে, রাজধানীতে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক অপরাধ কর্মকাণ্ড ও অপরাধপ্রবণ অঞ্চল নিয়ে ডিএমপির জয়েন্ট কমিশনার (ক্রাইম) আব্দুল জলিল মণ্ডল বলেন, “রাজধানীতে আগের মতো কোনো গ্রুপের অপরাধ কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে। যে সব অপরাধ কর্মকাণ্ড হচ্ছে সেগুলো আমরা মনে করি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।”

তিনি জানান, রাজধানীর সব থানার অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করা রয়েছে। সেগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশি নজরদারিও করা হয়। সম্প্রতি সেই অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোকে আপডেট করে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

এছাড়া অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোতে যারা অপরাধ সংঘটিত করছে তাদের ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। তাদের খোঁজ খবর পাওয়া মাত্রই গ্রেফাতার করা হবে বলে জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ