জলিলের সাবেক এপিএস খুন তিন কারণ খুঁজতে মাঠে গোয়েন্দা পুলিশ

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আব্দুল জলিলের সাবেক সহকারী ব্যক্তিগত সচিব (এপিএস) জিয়াউল ইসলাম রিপন ওরফে জিয়া হত্যাকাণ্ডের পেছনের তিন কারণ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

কারণগুলো হলো– ঠিকাদারী ব্যবসার টাকা-পয়সা নিয়ে ঝামেলা, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীন কোনো কোন্দল এবং বান্ধবীকে বিয়ে সংক্রান্ত জটিলতা।

উল্লেখ্য, শেষোক্ত কারণ নিয়ে বান্ধবীর পরিবারের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক তৈরি হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ খুনিদের গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার হাসান আরাফাত বাংলানিউজকে বলেন, বাসা থেকে যেহেতু কোনও কিছু খোয়া যায়নি সেহেতু এটি যে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, সম্ভাব্য তিনটি কারণ নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের টিম মাঠে কাজ করছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আব্দুল জলিলের মন্ত্রীত্ব থাকাকালীন সহকারী ব্যক্তিগত সচিব জিয়াউল ইসলাম রিপনের লাশ শনিবার সকাল ১০টায় নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতের বড় ভাই নাসিরুল ইসলাম রানা বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে তার ভাইয়ের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। শুক্রবার পরিবার থেকে জানার পর শনিবার তিনি একবার বাসায় আসেন। কিন্তু বাসার দরজা বন্ধ থাকায় তিনি চলে আসেন। সর্বশেষ রোববার সকালে তিনি ওই বাসার চাবি নিয়ে দরজা খুলে ভাইয়ের লাশ দেখতে পান। এসময় তিনি কলাবাগান থানা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

কলাবাগান থানার ওসি এনামুল হক বলেন, জিয়ার ভাইয়ের দেয়া খবরে ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তবে নিহতের মাথায় ও শরীরের অন্যান্য জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল।

ওসিএনামুল আরও বলেন, লাশের হাত বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো ছিল। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি হাতুড়িও উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার রাতে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি ধারনা করছেন। তিনি আরও বলেন, নিকটতম চেনা জানা লোকই জিয়াকে হত্যা করেছে বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া হত্যার পর খুনিরা জিয়ার মোবাইল ও মোটরসাইকেল নিয়ে যায়।

ঘটনা জানার পরপরই ডিএমপির রমনা জোনের ডিসি সৈয়দ নূরুল ইসলাম, সিআইডির ক্রাইম সিন টিম ও ডিবি ঘটনাস্থলে আসেন। দুপুর দেড়টার দিকে জিয়ার লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে নেয়া হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের ৪ নম্বর টিমের সহকারী কমিশনার হাসান আরাফাত জানান, হত্যাকাণ্ডের আলামত ও পরিবার পরিজনদের সাথে কথা বলে এর পেছনের তিনটি সম্ভাব্য কারণ রয়েছে বলে মনে হয়েছে।

সম্ভাব্য ওই কারণগুলো নিয়ে গোয়েন্দারা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে উল্লেখ ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, দ্রুত এই খুনের রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতার হবে।

নিহত জিয়াউল ইসলাম রিপন ওরফে জিয়ার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের অক্ট্রয়ের মোড় এলাকায়। ৩ ভাইয়ের মধ্যে জিয়া মেজো। ছোটভাই সুজন অস্ট্রেলিয়া থাকলেও তিনি বর্তমানে দেশে আছেন। পিতা সরকারী বিজ্ঞান স্কুল অ্যান্ড কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন। বড় ভাই নাসিরুল ইসলাম রানা ইন্দিরা রোডে থাকেন। তার বাড়িতে বাবা-মা থাকে। জিয়া সেখানে খাওয়া দাওয়া করতেন।আর গত ৬ বছর যাবত জিয়া ৫৯ গ্রিন রোডের ভাড়া বাসায় থাকতেন। ওই বাসার এর এক রুমে নিজে আর অপর রূমটি সাবরেট দেয়া চিল।

বাংলাদেশ