1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন

‘প্রেক্ষাগৃহ ভেঙে ওঠা ভবনে যেন থাকে সিনেপ্লেক্স’

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৪ আগস্ট, ২০১২
  • ৬৬ Time View

একের পর এক প্রেক্ষাগৃহ ভাঙলেও নতুন করে গড়ে ওঠা বাণিজ্যিক ভবনে যেন সিনেপ্লেক্স থাকে, সে বাধ্যবাধকতা আরোপের পরামর্শ সরকারকে দিয়েছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।

পাশাপাশি তারা বলছেন, বাংলা চলচ্চিত্রের পুনরুজ্জীবনে যে সব প্রতিশ্রুতি সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে, তার বাস্তবায়ন ফেরাতে পারে এই শিল্প মাধ্যমের সুদিন।

চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সভাপতি মাসুদ পারভেজ বলেন, “একের পর এক সিনেমা হলগুলো বন্ধ হতে থাকায় আমাদের দিক থেকে আগে থেকেই প্রস্তাব ছিল, যে মাল্টিপে¬ক্স বিল্ডিংগুলো হবে তাতে যেন অন্তত একটা করে সিনেপ্লেক্স তৈরির বাধ্যবাধকতা রাখা হয়। কিন্তু এই প্রস্তাব আমলেই নেওয়া হয়নি।”

এক্ষেত্রে বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্সের সফলতাকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মহাম্মদ হান্নান বলেন, “সেখানে কিন্তু কোনো টিকেট অবিক্রিত থাকে না। সুতরাং সিনেমা দেখার পরিবেশ তৈরি করতে পারলে দর্শকের অভাব হবে বলে আমার মনে হয় না।”

সিনেমা হল ভেঙে তৈরি বাণিজ্যিক স্থাপনায় মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হল থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলে চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য তা শুভ হবে বলে করেন ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের (এফএফএসবি) মহাসচিব সাব্বির আহমেদ চৌধুরী।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, “এ ক্ষেত্রে সরকার বিনা সুদে উদ্যোক্তাদের ঋণও দিতে পারে। তাহলে অনেকেই আকৃষ্ট হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হক বলেন, সরকারি উদ্যোগে বিভাগীয় ও বড় জেলা শহরগুলোতে অন্তত একটি করে সিনে-কমপ্লেক্স নির্মাণ করা প্রয়োজন। সিনেপ্লেক্স নির্মিত হলে সর্বাধুনিক প্রজেকশন সুবিধাসহ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হলে, উন্নত পরিবেশ পাওয়া গেলে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে আসতে উৎসাহ বোধ করবে।

তবে শুধু মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হল দিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পের সুদিন ফেরানো যাবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবেশক সমিতির সভাপতি ফিরোজ রশিদ।

তিনি  বলেন, “সিনেমা হল হলো এমন একটি স্থান যেখানে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আসতে পারে। অন্যদিকে, সিনেপ্লেক্স বা মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলে শুধু একটি শ্রেণির মানুষেরই যাতায়াত।”

ফাহমিদুল হক চলচ্চিত্রকার ক্যাথরিন মাসুদের ‘দ্য ফিল্ম পলিসি ইন বাংলাদেশ : রোড টু ফ্রিডম’ শীর্ষক এক প্রবন্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পকে চাঙা করতে প্রদর্শন ক্ষেত্রে সংস্কারের ওপর জোর দেন।

ওই প্রবন্ধে প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন নয়টি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব করেন। এর মধ্যে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি, সুযোগ-সুবিধা ও টিকেটিং সিস্টেম সমৃদ্ধ নতুন মাল্টিপ্লেক্সগুলোকে অন্তত ৫ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া, বিদ্যমান প্রেক্ষাগৃহগুলোকে সংস্কার করার ক্ষেত্রে অন্তত ৩ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া, বিদ্যমান প্রেক্ষাগৃহকে টিকিয়ে রাখা ও নতুন একক প্রেক্ষাগৃহ উৎসাহিত করার জন্য ভূমি সংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধা এবং বিদ্যুতের ক্ষেত্রে কর রেয়াত দেওয়া ইত্যাদি।

একই সঙ্গে অন্যান্য শিল্পের মতো চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণ পাওয়া নিশ্চিত করা, আমদানি করা যন্ত্রপাতির ওপর বিশেষ শুল্কছাড়ও চেয়েছেন পরিচালক সমিতির সভাপতি মহাম্মদ হান্নান।

এসব বিষয়ে তথ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন  বলেন, “শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার কারণে এই খাতের সব ধরনের সুবিধা চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পরিবেশকরা পাবেন। চলচ্চিত্র আমদানি বা রপ্তানির ক্ষেত্রে অন্যান্য শিল্পের মতোই শুল্কমুক্ত সুবিধা তারা পাবেন।”

চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে মধ্য মেয়াদী পদক্ষেপে দেশে ফিল্ম এবং টেলিভিশন ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা, সিনেপ্লেক্স নির্মাণকারীদের প্রথম পাঁচ বছরের কর মওকুফের ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান সচিব ।

তবে চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণার চার মাস পেরিয়ে গেলেও এসব সুবিধা প্রাপ্তির কোনো নিশ্চয়তা দেখছেন না প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সভাপতি মাসুদ পারভেজ।

সোহেল রানা নামে জনপ্রিয় এই অভিনয়শিল্পী বলেন, “এর আগের সবগুলো সরকারও আমাদের এভাবে নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার অধিকাংশেরই বাস্তবায়ন হয়নি।”

“বাংলা চলচ্চিত্র বর্তমানে যে অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে, তাতে সরকারের সরাসরি সহযোগিতা ছাড়া উত্তরণের কোনো পথ নেই। এ অবস্থায় শুধু প্রতিশ্রুতি দিলে হবে না। প্রয়োজন এই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন,” বলেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ