1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন

কেন্দ্রীয় কারাগারে আজহার

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৪ আগস্ট, ২০১২
  • ৫১ Time View

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে তার জামিন আবেদনের শুনানি শেষে আদেশের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে রোববার।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আজহারের জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়।

এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে আজহারকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। শুনানি দেরিতে হবে বলে তাকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রাখা হয়। ট্রাইব্যুনাল এলাকার নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়।

আজহারের জামিন আবেদনের শুনানি করেন আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। শুনানিতে তিনি বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন। তাকে জেলে রাখার জন্যই তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এটি পুরোটাই মানবতাবিরোধী/ মৌলিক অধিকার পরিপন্থী। একটি সভ্য দেশে এটি হতে পারে না।

রাজ্জাক বলেন, এর আগে তিনি ১১ মাস জেলে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা দায়ের করা হয়। সবগুলো মামলাতেই তিনি হাইকোর্ট ও ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। সবশেষে তাকে জেলে রাখতেই সরকার এবারের অভিযোগ এনেছে। গত ১৬ আগস্ট জামিনে মুক্তির পর সরকার কেন তাকে পুলিশি নজরদারিতে রাখলো, কেন তার বাসায় পাহারা ছিল? সে প্রশ্নও তোলেন রাজ্জাক।

সরকার অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হয়েছে অভিযোগ করে রাজ্জাক আরো বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, ন্যায়বিচার চাই, ন্যায়বিচার চাই, ন্যায়বিচার চাই। কিন্তু এখন দেখছি, আমরা ন্যায়বিচার পাচ্ছিনা। আর আমাদের আশঙ্কা ন্যায়বিচার পাবোও না।’’

তিনি অসুস্থ দাবি করে আজহারকে জামিন দেওয়া যায় বলে উল্লেখ করেন ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। আজহার জামিন পেলে চিকিৎসার জন্যে বিদেশে যেতে পারেন, যদি নিষেধাজ্ঞা না থাকে বলেও জানান রাজ্জাক।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল-মালুম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে জামিন দেওয়ার বিধান নেই উল্লেখ করে জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, তাকে জামিন দিলে তদন্তকাজ ব্যাহত হবে। সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে আসতে ভয় পাবেন। কেননা, তিনি বাইরে থাকলে সাক্ষীদের হুমকি দেবেন। ইতিমধ্যেই তিনি দেশে-বিদেশে ট্রাইব্যুনাল ও মানবতাবিরোধী বিচারের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা ও প্রোপাগাণ্ডা চালিয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে নানা ষড়যন্ত্রের সঙ্গেও জড়িত।

শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল আদেশের জন্য রোববার দিন ধার্য করেন এবং এটিএম আজহারুল ইসলামকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

শুনানি শেষে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল-মালুম সাংবাদিকদের বলেন, আসামিপক্ষ বলেছেন, আজহার ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) ধারায় মানবতাবিরোধী ৬টি অপরাধের (হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ইত্যাদি) সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। কিন্তু তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ইসলামী ছাত্রসংঘের রংপুর জেলা সভাপতি ও আলবদর বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে রংপুরে এবং পরে ঢাকায় এসে এসব মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।

মালুম বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের (জামায়াত) শীর্ষ নেতাদের সিংহভাগই পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। এটিএম আজহারুল ইসলাম তাদেরই একজন।

মেডিকেল গ্রাউন্ডে আজহারের জামিন চেয়ে আসামিপক্ষের যুক্তি প্রসঙ্গে জেয়াদ আল-মালুম বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিশেষ শর্তসাপেক্ষে ছাড়া জামিনের বিধান নেই। ট্রাইব্যুনাল এ পর্যন্ত শুধু আব্দুল আলীমকেই বিশেষ শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন, কেননা, তিনি হুইল চেয়ার ছাড়া চলতে পারেন না। তাছাড়া আসামিপক্ষ যে গ্রাউন্ড দেখিয়েছেন, তার চেয়েও শক্তিশালী গ্রাউন্ড দেখিয়ে গোলাম আযম জামিন পাননি। তাই আমরা এ গ্রাউন্ডেরও বিরোধিতা করে জামিন আবেদন না’মঞ্জুরের আবেদন জানিয়েছি।’’

বুধবার দুপুর ২টার দিকে আজহারকে তার রাজধানীর মগবাজারের ৯১/বি ওয়্যার‌লেসের ৮তলা ভবনের ৭ম তলার ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে নেওয়া হয় মিন্টো রোডের মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে। এর আগে বেলা পৌনে ১২টার দিকে ট্রাইবুন্যাল-১ এ এটিএম আজহারুল ইসলামকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এ আবেদনের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাইবুন্যালে হাজির করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

আজহারসহ এ নিয়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতের ৮ শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মোট গ্রেফতারকৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ জনে।

এর আগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের অন্য নেতারা হলেন সাবেক আমির গোলাম আযম, বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ,  নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা এবং কর্মপরিষদ ও নির্বাহী কমিটির সদস্য দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলী।

এছাড়া যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিচার চলছে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরী এবং সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীমের।

অন্যদিকে জামায়াতের সাবেক রোকন আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও তিনি পাকিস্তানে পালিয়ে গেছেন। তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনও (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) ও দাখিল করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ