নাম্বারবিহীন গাড়িতে চড়তেন জবস

নাম্বারবিহীন গাড়িতে চড়তেন জবস

প্রতি ছয় মাসে গাড়ি বদল করতেন ‘আইগড’-স্টিভ জবস। ‘প্লেট নম্বরহীন’ গাড়িতে চড়তেই এমনটা করতেন প্রযুক্তি বিশ্বের এই কিংবদন্তি দিকপাল। ফ্যাশন নয়, পথে নিজের পরিচয় গোপন করে চলতে এবং আইনী বাধা এড়াতেই এমন কৌশল অবলম্বন করতেন তিনি। অ্যাপল’র সাবেক জ্যেষ্ঠ নিরপত্তা কর্মকর্তা জন ক্যালাস এ তথ্য দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, প্রবল প্রতিপত্তির অধিকারী হলেও এগুলো প্রদর্শনে বিন্দুমাত্র আগ্রহী ছিলেন না জবস। ক্যালিফোর্নিয়ার পাওলো আলতো-তে খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন। সামজিক রীত-নীতির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় আইন-কানুনের প্রতি ছিলেন শ্রদ্ধাশীল।

কিন্তু স্টিভ জবসের গাড়ি মার্সিডিস বেঞ্চের কোনো নাম্বার প্লেট ছিল না। নাম্বার প্লেট ছাড়াই তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ব্যবহার করে এসেছেন সিলভার কালারের Mercedes SL55 AMG।

স্টিভ জবস’র সাক্ষাৎকারভিত্তিক জীবনী ‘স্টিভ জবস’ প্রকাশের পর এ বিষয়ে বইটির লেখক ওয়াল্টার আই জ্যাকসন’র কাছে ‘কেন জবস নাম্বার প্লেট ব্যবহার করতেন না’ জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে আমি সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারছি না। তবে তার সাথে আলাপ কালে যতটুকু বুঝেছি, জনারণ্যে নিজেকে আড়াল করে রাখতে চাইতেন। আর এ কারণেই তিনি গাড়িতে নাম্বার প্লেট ব্যবহারে নারাজ ছিলেন।

কিন্তু নাম্বার প্লেট ছাড়া গাড়ি চালিয়েও কিভাবে তিনি আইনের চোখ ফাঁকি দিয়েছেন অথবা তিনি কি এ কাজে নিয়োজিত ট্র্রাফিক সার্জেন্টদের ম্যানেজ করে চলতেন- এমন প্রশ্নের কোনো জবাবা দেননি তিনি।

তবে এ বিষয়ে সৃষ্ট ধুম্রজালের অবসান ঘটিয়েছেন অ্যাপল’র সাবেক জ্যেষ্ঠ নিরপত্তা কর্মকর্তা জন ক্যালাস। যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ ধনী ব্যক্তিই যখন তাদের ব্যক্তিগত নাম্বার প্লেট নিয়ে গাড়ি চালান, সেখানে স্টিভের মতো একজন প্রতিভাধর এবং ধনী মানুষ কিভাবে একদম উল্টো কাজটি করলেন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আইন মেনেই স্টিভ প্লেট ছাড়া গাড়িতে চড়তেন। আসলে তিনি মূলত গাড়ি কিনতেন না।

নাম্বারহীন গাড়ি সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, স্টিভ তার লিজিং কোম্পানির সঙ্গে এভাবে চুক্তি করে নিয়েছিলেন যে, প্রতি ছয় মাসে তাকে একটি নতুন গাড়ি দিতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি ছয় মাস অন্তর তাকে একটি নতুন ‘মার্সিডিস এসএল ৫৫ এএমজি’ মডেল গাড়ি দেয়া হতো।

‘ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে নতুন গাড়ি কেনার পর লাইসেন্স প্লেট নেয়ার জন্য ছয় মাস সময় পাওয়া যায়’ উল্লেখ করে ক্যালাস বলেন, “আইনের ফোকরটা স্টিভ খেয়াল করেছিলেন। আর ছয় মাস পূর্তির আগেই তিনি গাড়িটি পরিবর্তন করে ফেলতে লিজিং কোম্পানির সাথে চুক্তি করেছিলেন।”

ক্যালাস বলেন, ফলে, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে নাম্বার প্লেট ছাড়াই স্টিভ দিনের পর দিন একই গাড়ি চালাচ্ছেন। কিন্তু ওটা আসলে নতুন গাড়ি।

আইটি ওয়্যার-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিনি বলেন, “এটাই হলো স্টিভ জবস। সব সময় ভিন্ন চিন্তা করতে পারতেন তিনি।”

বিজ্ঞান প্রযুক্তি