1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞাপন শুনেই ইফতার, রোজাদাররা বিভ্রান্ত

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১২ আগস্ট, ২০১২
  • ৮১ Time View

ট্যাং-এর বিজ্ঞাপনে আজান ব্যবহার করা হচ্ছে। ইফতারের কিছুক্ষণ আগে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে রোজাদাররা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা আজান শুনে অনেক রোজাদার ইফতার করে ফেলছেন। তাই রোজাদার এবং ধর্মপ্রাণ মানুষ ট্যাং-এর বিজ্ঞাপনে আজান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

ইফতারের আগে ট্যাং-এর বিজ্ঞাপন প্রচার করায় অনেক রোজাদার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মিরপুরের বাসিন্দা রেহানা পারভীন রোজা রেখে ট্যাং-এর বিজ্ঞাপনের কারণে বিভ্রান্ত হয়ে রোজা ভেঙ্গে ফেলা সম্পর্কে তার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “ইফতারের প্রস্তুতি শেষ করেছি মাত্র। ইফতারের সময় হতে তখনো মিনিট ৫ বাকি। হঠাৎ টিভি থেকে আজানের শব্দ ভেসে এলো। ঝটপট মুখে খেজুর পুরে রোজা পূর্ণ করলাম। এসময় দৌড়ে আসে আমার বড় মেয়ে রাফা। আমার ইফতারে বাধা দিয়ে সে বললো, “এটাতো সত্যি সত্যি আজান না, টিভিতে ট্যাং এর বিজ্ঞাপনের আজান।”

রেহানা বলেন, আমি ‘থ’ বনে গেলাম। সারাদিন রোজা রেখে শেষ মুহূর্তে  এসে অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে রোজা ভেঙে যাওয়ায় মন খুব খারাপ হয়ে গেল।

‘ট্যাং-এর এই বিজ্ঞাপনে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভ্রান্ত হচ্ছেন রোজাদাররা। বিশেষ করে ইফতারের আগে প্রচারিত এ বিজ্ঞাপনে আজানের ধ্বনি থাকায় সহজেই বোকা বনে যাচ্ছেন সহজ সরল ধর্মপ্রাণ মানুষ। টিভিতে আজান শুনে যারা ইফতার করেন, তাদের অনেকেই বিভিন্ন দিন ট্যাং-এর বিজ্ঞাপনে প্রচারিত আজানে ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে রোজা ভেঙ্গে ফেলছেন।

বিজ্ঞাপন চিত্রের একটি অংশে দেখানো হয়, ইফতারের ঠিক পূর্ব মুহুর্তে একটি পরিবারে রোজাদার সদস্যরা ইফতার সামনে অপেক্ষমান বসে আছেন। এমন সময় আজানের ধ্বনি ভেসে এলো। ট্যাং-এর তৈরি শরবত মুখে নিয়ে তারা ইফতার শুরু করলেন।

ট্যাং-এর বিজ্ঞাপনে আজানের ধ্বনি ব্যবহার করে সেই বিজ্ঞাপন ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে টিভিতে প্রচারের বিরোধিতা করেছেন অনেকেই। তারা মনে করছেন, ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে এমন বিজ্ঞাপন রোজাদারদের সঙ্গে ব্যঙ্গ করার মতো। কেউ কেউ এটাকে বিবেকহীন কাণ্ড আখ্যায়িত করে বলেন, এতে বিভ্রান্ত হওয়া খুবই স্বাভাবিক। সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের পূর্বে একজন রোজাদার আজানের জন্যই অপেক্ষা করতে থাকেন। তখন স্থানীয় মসজিদগুলোতে মাগরিবের আজান এবং টিভিতে মাগরিবের আজান ছাড়া অন্য যে কোনো আজান প্রচার করা বিবেকবান মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, এটা নীতিহীন কাণ্ড।

এ বিজ্ঞাপনের চরম বিরোধিতা করে কুমিল্লা থেকে আহসান হাবীব বলেন, “এই বিজ্ঞাপন ইফতারের পূর্বে প্রচার করে চরম মূর্খতার প্রমাণ দিয়েছে ট্যাং কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি টিভি চ্যানেলগুলোরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। রোজাদারদের কষ্টের রোজা কতিপয় মানুষের খামখেয়ালিতে ভেঙ্গে যাবে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

ইসলামী চিন্তাবিদরাও এমন বিজ্ঞাপনের বিরোধিতা করেছেন। তারা বলেন, বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে। আর আজানকে কোনো ব্যবসায়িক কারণে ব্যবহার করা কোনোভাবেই উচিত নয়। ট্যাং আজানকে বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করে মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনার সঙ্গে বিদ্রুপ করেছে। আর সেই বিজ্ঞাপন ইফতারের পূর্বে প্রচার করা রোজাদারদের রোজা ভঙ্গের কারণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। যেসব রোজাদার বিজ্ঞাপনের এই আজান শুনে রোজা ভেঙ্গেছেন, তাদের রোজা ভঙ্গের সব দায় ট্যাং কর্তৃপক্ষকের ওপর বর্তায়।

বিশিষ্ট আলেম মুফতি মাওলানা মোস্তফা কামাল বলেন, “ট্যাংয়ের এ ধরণের আচরণ ধর্মীয় চেতনায় আঘাত হেনেছে। একদিকে আজানকে কমার্শিয়াল অ্যাডে ব্যবহার করেছে, অন্যদিকে রোজা সম্পর্কিত বিষয়ে সুন্নত পরিপন্থি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”

হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে এই আলেম বলেন, “খেজুর খাওয়ার মধ্য দিয়ে রোজা ভাঙা সুন্নত। অথচ এই বিজ্ঞাপনে ট্যাং-এর তৈরি শরবত দিয়ে রোজা ভাঙার দৃশ্য দেখানো হয়েছে। যা পরিপূর্ণভাবে সুন্নতের পরিপন্থি। এমন বিজ্ঞাপন ইসলাম ও রোজাদারদের জন্য ক্ষতিকর।”

পবিত্র রমজানে ট্যাং-এর এমন বিজ্ঞাপনে ক্ষুব্ধ দেশের অনেক রোজাদার। তাদের কেউ কেউ ট্যাংয়ের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকেই বলেছেন, যারা বিজ্ঞাপন প্রচারে সচেতন নয়, বিতর্কিত বিজ্ঞাপন প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে, পণ্যের গুণগত মান নিয়ে তারা কতোটা সচেতন, সেটাই ভেবে দেখা উচিত। সচেতন অনেকেই সাধরাণ মানুষকে ট্যাং পান করা থেকে বিরত হতে এবং এই পণ্য অবাঞ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ