1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৪৬ অপরাহ্ন

কর ফাঁকি দিতে ২১ ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদ গোপন!

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৪ জুলাই, ২০১২
  • ৫৮ Time View

সারা বিশ্বের বিপুল বিত্তশালী অভিজাত লোকেরা ২০১০ সালে বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেনে যে পরিমাণ সম্পদ গোপন করেছিলেন তার পরিমাণ কমপক্ষে ২১ লাখ কোটি ডলার। এ অর্থের পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপান উভয়ের সমন্বিত অর্থনীতির সমপরিমাণ।

যেসব দেশ বা প্রতিষ্ঠানে অর্থ গচ্ছিত রাখলে কর ফাঁকি দেওয়া যায় বা অবকাশ পাওয়া সেসব প্রতিষ্ঠানকে মূলত ট্যাক্স হেভেন বলে।

সম্প্রতি ব্রিটেনের ম্যাককিনসে কনসালটেন্সির ট্যাক্স জাস্টিস নেটওয়ার্কের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জ্যামস হেনরির লিখিত ‘দ্য প্রাইস অব অফশোর রিভিজিটেড’ শীর্ষক গবেষণামূলক প্রবন্ধে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

অবিশ্বাস্য এ উপাত্ত দেখে ট্যাক্স বিশেষজ্ঞ এবং ব্রিটেন সরকারের উপদেষ্টা জন হোয়াইটিং বলেছেন, এতো বিশাল পরিমাণ অর্থ গোপন করা হয়েছে এ ব্যাপারে তারা কিছুটা সন্দিহান।

ব্রিটেনের ট্যাক্স সিমপ্লিফিকেশন অফিসের পরিচালক হোয়াইটিং বলেন, “উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ গোপন করা হয়েছে এ ব্যাপারটা পরিষ্কার। কিন্তু সেই পরিমাণটা কি আসলেই এতো বিশাল?”

তবে প্রবন্ধের লেখক হেনরি বলছেন, “উল্লেখিত ২১ লাখ কোটি ডলার তো সতর্কতার সঙ্গে বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এর পরিমাণ ৩২ লাখ কোটি ডলার হতে পারে।”

হেনরি এ তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যাংক অব ইন্টারন্যাশনাল সেটলমেন্ট, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক এবং বিভিন্ন সরকারি তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করেছেন।

তার গবেষণায় অবশ্য ব্যাংক এবং বিনিয়োগ অ্যাকাউন্টে রাখা সম্পদের আমানত বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। অন্য স্থাবর সম্পত্তি এবং প্রমোদ তরীর মতো বিলাসবহুল সম্পদ উপেক্ষা করা হয়েছে।

হেনরির প্রতিবেদনটি এমন সময় প্রকাশ করা হল যখন, বিশ্বজুড়ে কর ফাঁকি দেওয়া বা এড়ানোর বিষয়টি নিয়ে জনমনে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে উদ্বেগ বাড়ছে। এর মধ্যে জার্মানিসহ অনেক দেশে কর ফাঁকি দানকারীদের তথ্য ব্যাংক থেকে চুরি হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

হেনরি জানিয়েছেন, বিপুল সম্পদের অধিকারী অভিজাতরা ‘বেসরকারি ব্যাংক এবং আইনি, হিসাবরক্ষণ ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের একদল পরিশ্রমী পেশাদার লোকের’ মাধ্যমে টাকাপয়সা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে।

এভাবে সম্পদ গোপন করার ফলে যে পরিমাণ কর অনাদায়ী রয়েছে তা অনেক দেশের অর্থনীতির অবস্থা পাল্টে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখে।

তবে এটি অন্য দৃষ্টিতে দেখা যায়। এটা একটা সুসংবাদও হতে পারে এই অর্থে যে, এসব অর্থ এখন বিশ্বের নানা সমস্যা সমাধানে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানানো যেতে পারে- বলেন হেনরি।

ট্যাক্স হেভেনে রক্ষিত বিপুল পরিমাণ সম্পদ স্থানীয় কর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি  আড়ালে থেকে যাওয়ায় দেখা গেছে ১৩৯ উন্নয়নশীল দেশের ব্যালেন্স শিটে কেমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে- এ বিষয়টিও প্রতিবেদনে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে।

হেনরি হিসাব করে দেখিয়েছেন, এসব উন্নয়নশীল দেশের সবচেয়ে ধনী নাগরিকেরা ১৯৭০’র দশক থেকে ৭ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার সম্পদ পুঞ্জিভূত করেছে। যা ২০১০ সালে ৯ লাখ ৩০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এগুলোর সব রয়েছে দেশের বাইরে এবং কর্তৃপক্ষের কাছে এর কোনো হিসাব নেই।

দেশের বাইরে ব্যক্তিগত সম্পদ পুঞ্জিভূত করে রাখাকে বিশ্ব অর্থনীতির একটি বিশাল ‘কৃষ্ণগহ্বর’ বলে উল্লেখ করেছেন জ্যামস হেনরি।

কর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হেনরির উল্লেখিত তথ্য-উপাত্ত উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। এতো পরিমাণ অর্থ সম্পদ গোপন করার বিষয়টি যদি সত্য হয় এবং তাতে হস্তক্ষেপ অসম্ভব হয় তাহলে নিঃসন্দেহে তা কর সংগ্রাহক কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিব্রত হওয়ার মতো বিষয়। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানি এ ব্যাপারে ব্যাপকভিত্তিক পদক্ষেপ নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।

এ প্রসঙ্গে তারা আরেকটি বিষয় উল্লেখ করছেন; ট্যাক্স হেভেনগুলো যদি এতো বিপুল পরিমাণ অর্থ রাখে তাহলে হিসাব অনুযায়ী তারা ধারণার চেয়েও অনেক বেশি ধনী বলেই মনে হয়।

গবেষণায় হেনরি আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তিনি দেখিয়েছেন, ২০১০ সালের শেষ অবধি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ২০টি বেসরকারি ব্যাংক এককভাবে বেসরকারি মক্কেলদের জন্য ১২ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলার সম্পদ বিনিময়ের ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করেছে।

এর মধ্যে প্রধান তিনটি ব্যাংক ইউবিএস, ক্রেডিট সুসে এবং গোল্ডম্যান স্যাকস সবচেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ লেনদেন করেছে।

তিনি আরো দেখেছেন, দেশের বাইরে গচ্ছিত প্রায় ৯ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলার সম্পদের মালিক সারা বিশ্বে এক লাখেরও কম সংখ্যক মানুষের মালিকানায়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ