কর্তৃপক্ষের খড়গের নিচে পড়েছেন পাকিস্তানের ভুঁড়িবহুল, স্থুলকায় পুলিশ কর্মকর্তারা। অতিরিক্ত ভুঁড়ি ও শরীরের অস্বাভাবিক ওজনের কারণে কর্তব্য পালন করতে হিমশিম খাওয়া এসব পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তানের পুলিশ কর্তৃপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট নির্দেশনা, ‘হয় ভুঁড়ি কমাও, নয়তো মাঠ পর্যায়ে কর্তব্য পালন বন্ধ।’
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ অফিসাররই আপাতত কর্তৃপক্ষের এই শুদ্ধি অভিযানের শিকারে পরিণত হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল এই প্রদেশে দায়িত্ব পালনরত ১৯ হাজার পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মাত্র এক চতুর্থাংশ শারীরিক ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
মেদভুঁড়িবহুল এই পুলিশ সদস্যরা এখন প্রায়ই দায়িত্বপালনের সময় হাস্যকর ভঙ্গিতে ধরা পড়ছেন পাকিস্তানের মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। প্রতিনিয়তই এ নিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে হাস্যরস। পাকিস্তানি পত্রিকাগুলোর কার্টুনে উঠে আসছে মেদ ভুঁড়ি বহুল পুলিশ অফিসারদের হাস্যকর ভঙ্গির চিত্র।
এ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে অবশেষে অবিলম্বে মেদ কমানোর জন্য ভুঁড়িবহুল ও অতিরিক্ত ওজনের পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা জারি করেছেন পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক হাবিব উর রেহমান।
গত মাসে চিঠি দিয়ে সর্তক করা হয় এ পুলিশ সদস্যদের। জুন মাসের মধ্যেই কোমরের মাপ ৩৮ ইঞ্চির মধ্যে নিয়ে আসার নির্দেশনা জারি করা হয় চিঠিতে। পরবর্তীতে এ সময় বাড়ানো হয় চলতি মাসের ৭ জুলাই পর্যন্ত।
এ সময়ের মধ্যে নির্দেশনা অনুযায়ী ভুঁড়ি ও ওজন কমাতে ব্যর্থ হলে মাঠ পর্যায়ের দায়িত্ব পালন থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুঁিশয়ারি দেয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কর্তৃপক্ষের নতুন নির্দেশে ভুঁড়িওয়ালা পুলিশ অফিসারদের নাভিশ্বাস। ভুঁড়ি কমাতে তারা এখন প্রতিদিনই ছুটছেন জিমনেসিয়াম বা পার্কে। উদ্দেশ্য, যত দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব অতিরিক্ত চর্বি ঝড়িয়ে ফেলা।
এ প্রসঙ্গে পাঞ্জাব পুলিশের ভুক্তভোগী এক কর্মকর্তা জানান,‘ আমার ওজন ছিলো ১১০ কেজি। কয়েকদিনের মধ্যেই আমার ওজন ৫ কেজি কমেছে। আগে আমার কোমরের মাপ ছিলো ৪৩ ইঞ্চি। এখন কোমরের মাপও কমেছে ৩ ইঞ্চি। তবে আমাকে আরও তিন ইঞ্চি কমাতে হবে।’
লাহোরের পুলিশ কম্পাউন্ডের ঘেসো লনে একজন প্রশিক্ষকের নির্দেশনায় শরীরচর্চারত একদল পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে তিনিও করছিলেন শরীরচর্চার কসরত।
এ প্রসঙ্গে পাঞ্জাব এলিট পুলিশের সুপারিন্টেনডেন্ট রোমাইল আকরাম বলেন, ‘আমরা খুব ভালো ফলাফল পাচ্ছি। গড়ে প্রত্যেকেই কোমরের বেড় ৪ ইঞ্চি করে কমিয়ে এনেছেন। তারা এখন আগের থেকে অনেক ভালো বোধ করছে।’
জানা গেছে মহিলা পুলিশ সদস্যরাও এই নির্দেশনার বাইরে নন।