1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৪১ অপরাহ্ন

এক্সিম ব্যাংকের এজিএম শেয়ার হোল্ডাররা পেলেন সেমাই…

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৭ জুলাই, ২০১২
  • ৭২ Time View

‘ভাই বাঙালি মাগনা (ফ্রি) পাইলে আলকাতরাও খায়। এমনিতেই লসে আছি, তাই যা পাই তাই লাভ। আপনি তো শেয়ার কিনেন নাই, কি বুঝবেন!’

বুধবার সকাল সাড়ে সাতটায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার সংলগ্ন প্রধান সড়কে কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের শেয়ার হোল্ডার নূর মোহাম্মদ(২৫)। ১৩ তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) এর সামান্য উপহার সামগ্রী নিতে প্রত্যুষে তার এখানে আসা।

নোয়াখালীর বাসিন্দা এই যুবক থাকেন রাজধানীর মহাখালিতে। উপহার বক্স নিতে ভোর ৪টায় বাসা থেকে বের হয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সোয়া সাতটায় প্রতীক্ষিত সেই উপহার হাতে পান। গিফট বক্সে কী রয়েছে জানতে চাইলে নূর মোহাম্মদ জানান, “এখনো দেখিনি, তবে বিস্কিট-চানাচুর জাতীয় কিছু থাকবে হয়তো।”

প্রতিদিন ঢাকা শহরে মানুষের বহু ধরনের লাইন দেখা যায়। যেমন-দুর্গত এলাকায় ত্রাণের জন্য বিপন্ন মানুষের লাইন, ওএমএসের চাল, চিনি কিংবা অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে স্বল্প আয়ের মানুষের লাইন, সিনেমার হলে দর্শকের লাইন, বাস-ট্রেন-লঞ্চের টিকিট সংগ্রহে যাত্রীদের লাইন ইত্যাদি। তবে বুধবার সকালের এক্সিম ব্যাংকের এজিএম-এর গিফট বক্স সংগ্রহে শেয়ার হোল্ডারদের সুদীর্ঘ লাইন সেসব লাইনের দৈর্ঘ্য আর বৈচিত্রকে ছাড়িয়ে গেছে নিঃসন্দেহে!

সকালে নাস্তা করতে বসুন্ধরা গেট এলাকায় গিয়ে মানুষের এমন আজব লাইন প্রত্যক্ষ করি। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার খানিক সামনে থেকে শুরু হয়ে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে সে মানব লাইন ঠেকেছে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাইনও দীর্ঘ হতে শুরু করে। একপর্যায়ে ওই এলাকার গ্রামীণফোনের অফিসের সামনে থেকে শেয়ার হোল্ডারদের লাইন বাক নিয়ে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির দিকে ঘুরে এক লাইন পরিণত হয় একাধিক লাইনে।

কৌতুহলের সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব থেকেই (এত মানুষের সমাবেশ যেখানে সেখানে কোনো না কোনো খবরের সূত্র বা উপলক্ষ্য থাকবে এমন ধারণায়) ছুটলাম কনভেনশন সেন্টারের দিকে। লাইনকে ফলো করে কনভেনশন সেন্টারের দিকে যেতে যেতে কথা হলো একাধিক শেয়ার হোল্ডারের সঙ্গে। তাদের একজন মিরপুরের বাসিন্দা মাসুদ চৌধুরী করিম(৫০)। তিনিও ভোর ৪টায় রওনা হয়ে এখানে পৌঁছে লাইনে দাঁড়িয়েছেন পৌনে ৫টায়। সকালের নাস্তাও করা হয়নি, তাই হকারের কাছ থেকে চা-বিস্কিট খাচ্ছিলেন। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা ক্লান্তি জড়ানো বণ্ঠে তিনি বললেন, “আগে নিজে বাঁচলে, পরে তো অন্য কিছু। তাই কিছু খেয়ে নিচ্ছি।”

কনভেনশন সেন্টারে শেয়ার হোল্ডারদের প্রবেশ পথে গিয়ে যা দেখলাম তা তীর্থস্থানে কিংবা রাজনৈতিক জনসভায় দলীয় প্রধানের দৃষ্টি কাড়তে নেতাকর্মীদের প্রাণান্তর চেষ্টার সঙ্গে তুলনীয়!

সেখানে গিফট নিতে হঠাৎ করেই শেয়ার হোল্ডারদের ভেতরে প্রবেশে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। ক্রমেই সেটি প্রবল হতে থাকে। সোয়া সাতটার দিকে অবস্থা এতটাই বেগতিক হয়ে যায় যে পদদলিত হয়ে এসময় কমপক্ষে ২০জন আহত পান। পদদলিত হয়ে কেউ একজন মারা গেছেন (তবে স্বস্তি যে আসলে কেই মারা যাননি)– এমন শোরগোল উঠলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। তবে বিস্মিত হলাম যখন দেখলাম, পদপিষ্ট হওয়া সবাই পরক্ষণেই উঠে দাঁড়ালেন এবং প্রতীক্ষিত ‘গিফট বক্সটি’ সংগ্রহ করতে ফের মরিয়া রূপ ধরলেন!

অনেকটা যুদ্ধ করেই ভেতরে প্রবেশ করে কথা হয় রাজধানীর নবগঠিত ভাটারা থানার পুলিশ পরিদর্শক কৃপার সঙ্গে। নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কোন সমস্যা হচ্ছে না। পর্যাপ্ত ফোর্স রয়েছে।” যদিও পুরো অনুষ্ঠানস্থল ঘুরে দেখা মিললো স্বল্প সংখ্যক পুলিশ ও কিছু প্রাইভেট সিকিউরিটি গার্ড এর, একই সঙ্গে দেখা গেলো বিশৃঙ্খলা। কভেনশন সেন্টারের সামনের রাস্তাসহ আশপাশের রাস্তায় এজিএমের প্রভাবে যানজটের সৃষ্টি হয়।

এত মানুষের সমাবেশে কিছু বিশৃঙ্খলা হতেই পারে স্বীকার করে এক্সিম ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস-চেয়ারম্যান (হেড অব ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লাইন্স অ্যান্ড স্পেশাল অডিট ডিভিশন) শাহ মো. আব্দুল বারী বাংলানিউজকে বলেন, “আমাদের ১ লাখ ২৭ হাজার শেয়ার হোল্ডার রয়েছে। নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে এর চেয়ে বড় ভেন্যু পাওয়া যায়নি। এছাড়া আলাদা আলাদাভাবে এজিএম করার সুযোগও নেই।”

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ