1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৯ অপরাহ্ন

পুঁজিবাজার থেকে হারিয়ে গেল দেড় লাখ বিনিয়োগকারী

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৭ জুলাই, ২০১২
  • ৭৬ Time View

দেড় বছর ধরে পুঁজিবাজারে মন্দা বিরাজ করায় আশাহত হয়ে পুঁজিবাজার থেকে হারিয়ে গেলেন  দেড় লাখ বিনিয়োগকারী। এতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমে হয়েছে ২৫ লাখ ৪৫ হাজার।

সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমত, বুধবার পর্যন্ত গত অর্থ বছরে নবায়ন না হওয়ায় প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার বেনিফিসিয়ারি ওনার্স বা বিও হিসাব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে বিও হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ ৭৮ হাজার ৪শ। আর বুধবার বিও হিসাবের সংখ্যা নেমে এসেছে ২৫ লাখ ৪৫ হাজারে। বিও হিসাবের সংখ্যা আরো কমতে পারে বলেও সিডিবিএল সূত্রে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত প্রতি বছর বিও হিসাব নবায়নের শেষ সময় ৩০ জুন। তবে ডিপজিটরিদের বিশেষ অনুরোধে ১৫ জুলাই পর্যন্ত হিসাব নবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে।

আরো জানা গেছে, ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৪৬ লাখ ৪০ হাজার বিও হিসাব খোলা হয়েছে। তবে সময়মতো নবায়ন না হওয়ায় বুধবার পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ ৯০ হাজার বিও হিসাব বন্ধ হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে চালু রয়েছে এমন বিও হিসাবের মধ্যে ৫ লাখ ১৮ হাজার ৪৫৪টি হিসাবে কোন শেয়ার নেই। আর বিও হিসাব রয়েছে অথচ কখনোই শেয়ার ছিল না এমন হিসাবের সংখ্যা হচ্ছে ২ লাখ ২১ হাজার ৮০৬টি।

তবে বর্তমানে শেয়ার রয়েছে এমন বিও হিসাবের সংখ্যা ১৮ লাখেরও বেশি। এক বছর আগে এ সংখ্যাটি ছিল প্রায় ১১ লাখ। অর্থাৎ গেল এক বছরে শেয়ারহীন বিও হিসাবের সংখ্যা কমেছে ৭ লাখ।
তবে শেয়ার রয়েছে এমন ১৮ লাখ বিও হিসাবের মধ্যে ১০ লাখ বিও হিসাবে রয়েছে প্রাইমারি শেয়ার। এসব হিসাবে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আরপিও) পাওয়া শেয়ার ছাড়াও রয়েছে জিএসপি ফাইন্যান্স, জিবিবি পাওয়ার, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জিএসপি ইস্পাত, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, সায়হাম কটন মিলস, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস, আমরা টেকনোলজিসসহ বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ার রয়েছে।

এছাড়া ২০১১ সাল থেকে অনুমোদন পাওয়া বেশ কিছু মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট রয়েছে এসব হিসাবে। মূলত সেকেন্ডারি মার্কেটের মন্দাবস্থার কারণে আইপিওতে পাওয়া শেয়ার বিক্রিতে তেমন লাভজনক না হওয়ায় প্রাইমারি শেয়ারহোল্ডাররা তাদের হিসাবে শেয়ারগুলো জমা রাখছেন। ফলে শেয়ার রয়েছে এমন বিও হিসাবের সংখ্যা এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে। তবে এক বছরের ব্যবধানে প্রাইমারি শেয়ারের আবেদনকারীর সংখ্যাও কমেছে।

তবে সেকেন্ডারি মার্কেটে নিয়মিত কেনাবেচা করেন এমন বিও হিসাবের সংখ্যা কমেছে। বর্তমানে প্রায় ৮ লাখ বিও হিসাবধারী সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ার কেনাবেচা করছেন। ২০১১ সালের তুলনায় সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ার কেনাবেচা করা বিও হিসাবের সংখ্যা কমেছে প্রায় ৩ লাখ। তবে নিয়মিত শেয়ার কেনাবেচা করছেন এমন বিও হিসাবের সংখ্যা অনেক কম বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা মন্দাবস্থার কারণেই এক সময়ের সক্রিয় বিনিয়োগকারীরা সাইড লাইনে চলে গেছেন। তবে এসব হিসাবধারীর নামে শেয়ার রয়েছে।

জানা গেছে, ২০১১ সালের জুন মাসের শুরুতে শেয়ারবাজারে মোট বিও হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৪ লাখ। তবে মন্দার কবলে পড়ে পুঁজি হারিয়ে বিপুল সংখ্যক বিনিয়োগকারী শেয়ারবাজার ত্যাগ করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিও হিসাব নবায়ন না করা বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশই প্রাথমিক শেয়ার পাওয়ার জন্য আইপিওতে আবেদন করতেন।

কিন্তু শেয়ারবাজারে বিপর্যয়ের পর নতুন কোনো আইপিও না আসায় এসব বিনিয়োগকারী উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। পরবর্তীতে আইপিও অনুমোদন শুরু হলেও মন্দাবস্থার কারণে আইপিওতে পাওয়া শেয়ার বিক্রি করে পূর্বের মতো মুনাফা পাননি বিনিয়োগকারীরা। আবার বাজারে মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় অনেকেই শেয়ারাবাজারের প্রতি বিমুখ হয়ে পড়েন। ফলে বিও অ্যাকাউন্ট নবায়ন করেননি তারা।

উল্লেখ্য, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে চাইলে সিডিবিএলের আওতাধীন যে কোনো ডিপিতে (ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট) একটি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব খুলতে হয়। একজন ব্যক্তি একটি ব্যাংক হিসাবের বিপরীতে একক নামে একটি এবং যৌথ নামে একটি বিও হিসাব খুলতে পারেন।

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩ এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাব রক্ষণ ফি প্রদান করে হিসাব নবায়ন করতে হয়। প্রতিটি বিও হিসাব নবায়নের জন্য বর্তমানে ৫০০ টাকা ফি পরিশোধ করতে হয়। এর মধ্যে সিডিবিএল ১৫০ টাকা, হিসাব পরিচালনাকারী ব্রোকারেজ হাউস ১০০ টাকা এবং এসইসি ৫০ টাকা পায়। বাকি ২০০ টাকা সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের জুন মাসে শেয়ারবাজারে বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৭১ হাজার ২৫২টি। ২০০৯ সালের জুন মাসে তা বেড়ে ১৪ লাখ ১৯ হাজার ১৫টিতে দাঁড়ায়। ২০১০ সালে বিপুল সংখ্যক বিনিয়োগকারী যুক্ত হয় শেয়ারবাজারে। সে বছরের জুন মাস পর্যন্ত বিও হিসাবধারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ৪০৭টি। ডিসেম্বরের মধ্যে সংখ্যাটি ৩০ লাখ অতিক্রম করে। তবে সে বছরের ধ্বসের পরও শেয়ারবাজারে বিও হিসাবধারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। ২০১১ সালের মে মাস শেষে বিও হিসাবধারীর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৩৪ লাখে। তবে সে বছরের জুলাইতে এ সংখ্যা কমে ২৬ লাখ ৭৮ হাজারে নেমে আসে। বর্তমানে তা আরো কমে ২৬ লাখ ১৬ হাজারে নেমে এসেছে। সর্বশেষ ১ জুলাইয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ২৬ লাখ ১৬ হাজার। এর মধ্যে কোম্পানির অ্যাকাউন্ট রয়েছে ৮ হাজার ৭৩৭টি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ