ডি নেটের তথ্যকল্যাণীদের সহজ শর্তে ঋণ দেবে বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড। তথ্যকল্যাণীরা (ইনফোলেডি) ব্যাংক ঋণ নিয়ে স্বনির্ভরশীল এই পেশার মাধ্যমে কর্মসংস্থান করতে পারবে। অপরদিকে, গ্রামের অবহেলিত ও দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াবেন এই নারীরা।
বুধবার ন্যাশনাল ব্যাংক এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিনেট ও ফেয়ার প্রাইস ইন্টারন্যাশনালের মধ্যে তথ্যকল্যাণী অর্থায়ন প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হয়েছে। এ উপলক্ষে রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
ন্যাশনাল ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির সভাপতি পারভীন হক সিদকারের সভাপতিতেত্ব অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক সুকোমল সিংহ চৌধুরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ডিনেটের নির্বাহী পরিচালক ড. অনন্য রায়হান, তথ্যকল্যাণী প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ডিনেটের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ফেয়ার প্রাইস ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বদিউল আলম। এ সময় তিন প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতনরা উপস্থিত ছিলেন।
ন্যাশনাল ব্যাংকের পক্ষে মো. বদিউল আলম, ডিনেটের পক্ষে অনন্য রায়হান এবং ফেয়ার প্রাইসের পক্ষে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক উর্মি লোহানী সমঝোতা চুক্তিতে সই করেন।
এ সময় গভর্নর বলেন, “আমাদের দেশে ঋণ প্রাপ্তিতে নারী উদ্যোক্তারা পিছিয়ে আছে। অথচ টেকসই উন্নয়নে তাদের অর্থনীতির মূল স্রোতে নিয়ে আসা খুবই প্রয়োজন। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদান করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক এসএমই খাতে পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের প্রদান নিশ্চিত করছে। এর মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৫ হাজার নারীকে ৩৮১ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।”
ক্লাস্টার অ্যাপ্রোস পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মো. বদিউল আলম বলেন, “ন্যাশনাল ব্যাংক সব সময় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। নারী উদ্যোক্তাদের পাশে থেকেছে। আমরা ব্যাংকিং পরিচালায় এই বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি।”
ডিনেটের নির্বাহী পরিচালক অনন্য রায়হান বলেন, “তথ্যকল্যাণী প্রকল্পে মাধ্যমে ২০১৬ সাল নাগাদ ১৫ হাজার নারীর কর্মসংস্থান করা সম্ভব। এজন্য প্রত্যোকের এক থেকে দেড় লাখ টাকার তহবিল দরকার। হিসেব করে দেখা গেছে, সব মিলিয়ে এই প্রকল্পে লাগবে দুইশ ৭৫ কোটি টাকা।”
এদিকে, চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে যেসব তথ্যকল্যাণী ব্যাংক ঋণ লাগবে তারা ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় ঋণ পাবেন।
অনুষ্ঠানে গাইবান্ধা থেকে আসা তথ্যকল্যাণী সাথী আকতার তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “আমি দারিদ্রের সঙ্গে সংগ্রাম করে বড় হয়েছি। টাকার অভাবে পড়াশোনা ঠিকমতো করতে পারিনি। কষ্ট করে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তথ্যকল্যাণী হয়েছি। এখন আমার প্রতি মাসে ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। আমি পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো মতো চলতে পারছি।”
প্রসঙ্গত, ডিটের অধীনে সারা দেশে নিয়োজিত তথ্যকল্যাণীরা কাজ শুরু করেছেন। তারা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রামের মানুষকে স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, যোগাযোগসহ ২০ ধরনের বিশেষ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।