1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন

‘দর্শক কী চান জানি না, তাই নিজের ছবি করি’

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২০
  • ২০ Time View

ভারতের পশ্চিমবাংলার জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা সম্প্রতি রাজ্যের দৈনিক পত্রিকা আনন্দবাজারে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন; যেখানে তার পথচলার নানা জানা-অজানা কথা সামনে এনেছেন। সাক্ষাৎকারটি নিচে তুলে ধরা হল-

আজ থেকে ১০ বছর আগে সৃজিত মুখোপাধ্যায় কি ভেবেছিলেন ১৮ ছবি আর ১৭৭ পুরস্কার পাবেন গল্প বলে?

সৃজিত: চাকরি ছাড়ার পরে গল্প বলার ইচ্ছেটুকু ছিল। ভেবেছিলাম, একটা সিনেমা করব সেটা চলবে না। বৃদ্ধ বয়সে নাতি নাতনিদের গল্প করব, একটা ছবি বানিয়েছিলাম আমি।

সিনেমা না চললে কী করবেন ভেবেছিলেন?

সৃজিত: ক্রীড়া সাংবাদিক হব। হয়তো শো হোস্ট করব। কিন্তু সিনেমাটাই হল! ফেঁসে গেলাম।

আপনি তো খুশি ফেঁসে গিয়ে!

সৃজিত: এত ভালবাসা পেয়েছি মানুষের। ভাবিনি কোনও দিন! দর্শকের আমার ছবি ঘিরে এত ভাল লাগা আমাকে ছবির দিকে নিয়ে গেল। প্রথমে ‘অটোগ্রাফ’ তারপর একে একে ‘বাইশে শ্রাবণ’, ‘হেমলক সোসাইটি’, ‘চতুষ্কোণ’। চলতে শুরু করলাম। একেবারে নিজের শিক্ষা, মনন দিয়ে আমার যে যে গল্প বলতে ভাল লাগে ঠিক তাই বললাম! কাকতালীয় ভাবে সেটা দর্শকের সঙ্গে মিলে গেল।

সাফল্য নিজের ওপর চাপ তৈরি করে না?

সৃজিত: না। মনে হয় তুমি ঠিক রাস্তায় চলেছ। আমার গল্প বলার স্বাধীনতা আমি পাচ্ছি কারণ মানুষ তা ভালবাসছে, যা আবার প্রযোজকের জন্য মুনাফাও আনছে। তাই পরের ছবির করার টাকা পাচ্ছি। প্রযোজকও আমার ছবিতে নাক গলাচ্ছে না!

আপনি শুধু আপনার পছন্দ ভেবে ছবি করেন! প্রযোজক কে ঢুকতে দেন না…বড্ড অহংকারী আপনি!

সৃজিত: একেবারেই না। প্রথম কথা, আমি জানি না আসানসোল আর আলাবামার দর্শক ঠিক কী ছবি দেখতে চায়? এর কোনও ফর্মুলা নেই। তাই ছবি তৈরির ক্ষেত্রে দর্শকদের কথা ভেবে লাভ নেই। তার চেয়ে নিজে যে ভাবে গল্প বলতে চাই বলি। আর দ্বিতীয়ত আমি ইন্ডাস্ট্রির বিশাল কিছু এরকম হাব ভাব দেখাইনি। আমি ছবি করি নিজের আনন্দে। নিজের জগতে থাকি। ব্যাস!

ব্যাস বললে তো হবে না! বাঙালি আপনাকে সত্যজিৎ রায়ের উত্তরসূরি ভাবে!

সৃজিত: ওরে বাবা! ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল কিন্তু তাতে!

ক্ষতি কোথায়? এত পাবলিসিটি!

সৃজিত: হ্যাঁ একটা নতুন ছেলেকে সত্যজিৎ রায়ের পাশে বসিয়ে দেওয়া ক্ষতির সামিল। কিছু মানুষের মনে হয়েছিল আমি-ই যেন নিজে ডিজাইন করে সারারাত ধরে ওই হোর্ডিং সাঁটিয়েছি। অনেক কথাও শুনতে হয়েছিল আমাকে!

ঋতুপর্ণের উত্তরসূরিও বলা হয় আপনাকে…

সৃজিত: হ্যাঁ। তবে আমি কারও উত্তরসূরি নই। তবে শুধু সত্যজিৎ রায় নয় আমি অনেকের কাছে শিখেছি। সত্যজিতের আগে আমি তপন সিংহের নাম বলব। শুধু তাই নয়, অঞ্জন দত্ত, অপর্ণা সেন, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছেও আমি অনেক কিছু শিখেছি।

এই শিক্ষকেরাই তো আপনার প্রতিযোগী!

সৃজিত: একটা কোট দেখেছিলাম, ‘ওয়ার্ক আনটিল ইয়োর আইডলস বিকাম ইয়োর রাইভালস’ এখানে অবশ্য আমি প্রতিযোগী শব্দ ব্যবহার করতে চাই না। যাঁদের ছবি দেখে বড় হয়েছি, কৌশিকদা, অঞ্জনদার সঙ্গে যখন আমার নাম নেওয়া হয় তখন গর্ব বোধ হয়। এর চেয়ে বড় সম্মান আর কী হতে পারে!

২০১০-এর সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে যদি আজ ছবি নির্মাণের নিরিখে নম্বর দিতে বলা হয়, কত দেবেন?

সৃজিত: বেশ কঠিন এ ভাবে বলা। আসলে ’২২ শ্রাবণ’-কে আমি ৮ দেব। ‘ইয়েতি’-কে ৫ দেব। ‘বেগমজান’-কে ৬ দেব। ‘গুমনামি’-কে ৮ দেব। গড়ে ৭ দিলাম নিজেকে?

২০১০-এ ৭ আজ তা হলে কত দেবেন নিজেকে?

সৃজিত: গড়ে হিসেব করলে সাড়ে ৭!

সেকী! খুব বেশি বাড়ল না তো!

সৃজিত: ওই যে বললাম ছবিকে একক হিসেবে দেখতে হবে। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি বক্স অফিসেও লক্ষ্মীর মুখ দেখেছে। সমালোচকদেরও মন কেড়েছে। আবার পুরস্কারও পেয়েছে। এই সৌভাগ্য খুব কম পরিচালকের ভাগ্যে জোটে!এটাই পাওয়া আমার।

‘জুলফিকার’ বা ‘নির্বাক’ –এর ক্ষেত্রেও কি এই কথা খাটে?

সৃজিত: না। ‘জুলফিকার’ বক্স অফিসে সাফল্য পেলেও সমালোচকরা পছন্দ করেননি। আবার ‘নির্বাক’ সমালোচকদের ভীষণ পছন্দের ছবি। কিন্তু বক্স অফিসে ভালবাসা পায়নি।

ছবি হিট না হলে মন খারাপ হয়?

সৃজিত: হ্যাঁ। তা হয়। তবে দর্শকের এক বড় অংশ আমার ছবি ১০ বছর ধরে পছন্দ করে আসছেন। আগামী ১০ বছরে কী হবে জানি না। আমি একটা ঘরানায় নিজেকে আবদ্ধ রাখিনি। ‘বাইশে শ্রাবণ’ করার পর প্রচুর মানুষ বলেছিলেন ‘তেইশে শ্রাবণ’ হোক। আমি কিন্তু ‘হেমলক সোসাইটি’ করলাম।

১০ বছরে সিনেমার সাফল্যের প্রতি আপনার লোভ কমেছে?

সৃজিত: মানুষের ভালবাসা কম পেলে খারাপ লাগে।

কতখানি ঈর্ষাপ্রবণ আপনি?

সৃজিত: ব্যক্তি ঈর্ষা নেই আমার। কাজের প্রতি ঈর্ষা হয়। যেমন, ‘মেঘে ঢাকা তারা’ দেখে কমলদাকে বলেছিলাম, ব্যাঙ্গালোর যাচ্ছি। এর পর আর কী ছবি করব।”। ‘নগরকীরতন’, ‘বাকিটা ব্যক্তিগত’, ‘পেন্ডুলাম’, ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ দেখেও ঈর্ষা হয়। এইটুকুই…

ব্যক্তি সৃজিত ১০ বছরে কতটা বদলাল?

সৃজিত: সৃজিতের রাগ অনেক কমে গিয়েছে। অস্থিরতাও। সংসারী হয়েছে। দায়িত্ব নিতে শিখেছে।

মিথিলা নাকি আপনাকে চালনা করে?

সৃজিত: একদম নয়। মিথিলার ধারণা আমি ওকে চালনা করি! আসলে কেউ কাউকেই চালনা করে না। যে যার কাজ নিয়ে থাকি আমরা। একসঙ্গে থাকছি কম। কাজের জন্য বাইরে যেতে হচ্ছে।

মিথিলাকে কবে আপনার ছবিতে কাস্ট করবেন?

সৃজিত: মিথিলা সুঅভিনেত্রী। আমার ছবিতে মনের মতো চরিত্র পেলেই ওকে কাস্ট করব।

আগামী ১০ বছরে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

সৃজিত: কমেডি করব, স্পোর্টস নিয়ে ছবি করব। বিজ্ঞানভিত্তিক ছবি করব। এই পাড়াগুলোয় এখনও যাওয়া হয়নি আমার।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ